ফাইল চিত্র।
সত্যজিৎ রায়-জীতু কমল-অনীক দত্ত। ত্র্যহস্পর্শে বিস্ফোরক ‘অপরাজিত’। নন্দনে ব্রাত্য। শহরে ৬৫টি প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাচ্ছে। খবর, তাতেই দেড় সপ্তাহে ২.৫ কোটি বাণিজ্য করে ফেলেছে ছবিটি। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে বাণিজ্য বিশ্লেষক পঙ্কজ লাডিয়ার দাবি, লম্বা রেসের ঘোড়া অনীক দত্তের এই ছবি। আগামী চার সপ্তাহ পর্যন্ত দুরন্ত গতিতে ছুটবে। দর্শক প্রতিক্রিয়ার কথা জানাতে গিয়ে প্রযোজক ফিরদৌসল হাসান আপ্লুত, ‘‘দিনাজপুর, পুণে, নাগপুর, ভোপাল, পোল্যান্ড, ডেনমার্ক থেকে অনুরোধ আসছে। এই সমস্ত জায়গায় ছবি চালানোর জন্য।’’উচ্ছ্বসিত অজন্তা প্রেক্ষাগৃহের মালিক শতদীপ সাহাও। তিনি এই ছবির পরিবেশক। তাঁর দাবি, বহু দিন পরে একের পর এক বাংলা ছবি ভাল বাণিজ্য করছে। হলের বাইরে হাউসফুল বোর্ড দেখে তৃপ্ত হলমালিক, প্রযোজক, পরিচালক সবাই। এই ধারা শুরু হয়েছিল ‘টনিক’ থেকে। দেব প্রযোজিত এবং অভিনীত ছবিটি বড় বাজেটের হিন্দি এবং দক্ষিণী ছবির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাল বাণিজ্য করেছিল। সেই ধারা ধরে রেখেছিল ‘কিশমিশ’, ‘রাবণ’। তার পর ‘অপরাজিত’ এবং ‘বেলাশুরু’। শতদীপের দাবি, ‘‘দুটো ছবির মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। এতে লাভ হচ্ছে বাংলা বিনোদন দুনিয়ার, বাণিজ্যের। দুটো ছবিই দর্শক দল বেঁধে দেখতে আসছেন।’’
‘অপরাজিত’ দেখতে আসছেন কার টানে? সত্যজিৎ না জীতু কমল? পঙ্কজ, শতদীপ দু’জনেরই দাবি, জীতুর মধ্যে দিয়ে বাংলায় আবার ফিরেছেন সত্যজিৎ রায়। দর্শক সেটাই দেখতে ছুটছেন। পঙ্কজের ব্যাখ্যায়, ‘‘একে সত্যজিতের জীবনী। তার উপরে চরিত্রাভিনেতার সঙ্গে বাহ্যিক হুবহু মিল। যেটা সচরাচর হয় না। অনীকদা সেই ম্যাজিক দেখিয়েছেন। একটা টাটকা মুখ তুলে এনেছেন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য।’’ তিনি কেমন অভিনয় করলেন সেটা দেখারও কৌতূহল সবার। ফলে, সেই কারণেও প্রেক্ষাগৃহ ভর্তি। ছবিটি দেখার পরে সবার ভাল লাগছে। তাই কেউ কেউ একাধিক বার ছবিটি দেখছেন।
এ ভাবেই সপ্তাহান্তের পাশাপাশি কেজো দিনগুলোতেও অপ্রতিরোধ্য ‘অপরাজিত’। ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশনের কর্ণধারের দাবি, নইলে ভাল বাণিজ্য করা সম্ভব হত না। বাংলায় ৬৫টি হল ছাড়াও বাংলার বাইরে ছবিটি দেখানো হচ্ছে ১৭টি হলে। ফিরদৌসলের কথায়, ‘‘অঙ্কের হিসেবের বাইরেও ছবিটি আলাদা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ‘অপরাজিত’ বাঙালি এবং অবাঙালি দর্শককে এক ছাদের নীচে নিয়ে এসেছে। এর থেকে বড় সাফল্য আর কী হতে পারে?’’ শতদীপ জানিয়েছেন, আগামী দিনে বাংলায় আরও ১৫টি হলে মুক্তি পেতে পারে ছবিটি। তাঁর কথায়, ‘‘অপরাজিত’-র কাছে ‘ধক্কড়’, ‘জয়েশভাই জোয়ারদার’ও ম্লান! ভাল বিষয় এবং অভিনয় একটি ছবিতে জুটি বাঁধলে বাঙালি বাংলা ছবিই দেখবে।’’