জয়তী চক্রবর্তী
প্রশ্ন: রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে আলোচনায় প্রথম দিকেই আসে আপনার নাম, উপভোগ করেন?
জয়তী: না, এই কথাটার মধ্যে একটা আস্ফালন আছে। এ ভাবে ভাবি না।
প্রশ্ন: আস্ফালন কেন?
জয়তী: রবীন্দ্রনাথের গান মানেই ‘আমি’— এটা মনে করতে চাই না। আমার সবথেকে আরাম ও শান্তির জায়গা রবীন্দ্রসঙ্গীত। এটা আমার আঁকড়ে ধরার জায়গা।
প্রশ্ন: রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী হবেন, এই ভাবনা নিয়েই কি শুরু করেছিলেন?
জয়তী: ভাল লাগা তো ছিলই। যখন কেউ বলেন, আপনার গলায় রবীন্দ্রনাথের গান শুনতে খুব ভাল লাগে, এই কথাগুলো আমায় উৎসাহ জোগায়।
প্রশ্ন: ছবির গানের ক্ষেত্রেও শুধু রবীন্দ্রসঙ্গীতেই আপনাকে পাওয়া যায়। কেন?
জয়তী: ছবিতে গান গাওয়া অন্য রকম একটা ব্যাপার। আমি যেটা গাইতে পারব, আমাকে তো তার জন্যই ডাকা হবে।
প্রশ্ন: ছবির ক্ষেত্রে অন্য ধরনের গানে স্বচ্ছন্দ নন?
জয়তী: নায়িকার চরিত্রে গান গাওয়ার মতো কণ্ঠ নয় আমার। পরিস্থিতির উপর যে গান, তাতেই আমি অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ।
প্রশ্ন: একই ধারায় গাইছেন। তা থেকে বেরোতে ইচ্ছে করে না?
জয়তী: ইচ্ছে যে হয়নি, তা নয়। তবে আমার কণ্ঠস্বরের ধারাকে তো বদলাতে পারব না।
প্রশ্ন: আইটেম গান গাইতে ইচ্ছে করে না?
জয়তী: ইচ্ছে করে না, সে কথা বলব না। এই ধরনের গানের প্রস্তাবও পেয়েছি। কিন্তু এই গানগুলোর চটুল কথা আমার ভাল লাগে না। এমন আইটেম গান যদি আসে, যাতে বিশ্বাসযোগ্য কথা রয়েছে, নিশ্চয়ই গাইব। রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়াও অনেক গান গেয়েছি, যেখানে অন্য জয়তীকেই পাওয়া গিয়েছে।
প্রশ্ন: ছবিতে এখন প্রচলিত গানও ব্যবহার হচ্ছে। তাতে আপনাকে পাওয়া যাচ্ছে না কেন?
জয়তী: আমি কখনও কাউকে বলতে পারব না, আমি এই ধরনের গান গাইতে চাই। আমি ফোন করে পিআর করতে পারব না। কারণ আমার কাছে জনসংযোগের একমাত্র মাধ্যম আমার কর্মদক্ষতা। ভাল কাজ করে নতুন কাজ পেতে চাই।
প্রশ্ন: ‘রথযাত্রা’ নিয়ে আপনার নতুন গান আসছে। ভক্তিমূলক গানও গাইছেন জয়তী?
জয়তী: এর আগে কখনও এই ধরনের গান গাইনি। জীবনে প্রথম গাইলাম। একটি নতুন বাংলা গানের মাধ্যম বাঙালির ‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’ নিয়ে গানের পরিকল্পনা করেছে। এটা আমার কাছে অভিনব মনে হয়েছে। ওঁদের ‘রথয়াত্রা’ নিয়ে গানটা আমি গেয়েছি। আশু চক্রবর্তীর সুর ও রাজীব চক্রবর্তীর লেখা। গানটা একেবারেই ভক্তিগীতির মতো নয়। বরং আধুনিক ভক্তিমূলক গান বলা যেতে পারে।
প্রশ্ন: আগামিদিনে কোন ধরনের গান শোনা যাবে আপনার গলায়?
জয়তী: বেশ কিছু আধুনিক গান, লোকগান শোনা যাবে। বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে গজল আঙ্গিকের গানও গেয়েছি। নারায়ণ সান্যালের ‘কাঁটা’ উপন্যাস নিয়ে ওয়েব সিরিজ আসছে। ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত তার সঙ্গীত পরিচালক। এখানেও রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়েছি।
প্রশ্ন: ‘বাংলা গানের পাশে দাঁড়ান’ স্লোগানে সামিল হবেন?
জয়তী: না, বাংলা গানের এত খারাপ অবস্থা নয়।