Bengali Television

সিনেজগতের মতো বদলের মুখে টেলিপাড়া-শাসকদল সমীকরণ? কী বললেন শিল্পীরা?

কারও দাবি, শাসকদল ঘনিষ্ঠরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই মাত্র এক বার পথে নেমেছিলেন। কেউ বলছেন, সমীকরণে কোনও বদল ঘটেনি। প্রকৃত ঘটনা কী?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৪
টেলিপাড়া-শাসকদলের সমীকরণ নিয়ে কী বললেন অঞ্জনা বসু, অনিন্দ্যপুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমিতৃষা কুন্ডু , তৃণা সাহা।

টেলিপাড়া-শাসকদলের সমীকরণ নিয়ে কী বললেন অঞ্জনা বসু, অনিন্দ্যপুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমিতৃষা কুন্ডু , তৃণা সাহা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

সরকারি মহলে শোনা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি বিনোদন দুনিয়ার আচরণে ক্ষুব্ধ। কারণ, আরজি কর-কাণ্ডে শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিনেতাদের প্রতিবাদ। পাশাপাশি, স্বরূপ বিশ্বাস এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন চলচ্চিত্র ফেডারেশনের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ নিয়ে এক দল ‘বিক্ষুব্ধ’ পরিচালকের বিরোধিতা। সেই দলে অভিনেতা, প্রযোজকেরাও রয়েছেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি ঘোষণা হয়নি।

Advertisement

ইতিমধ্যেই নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক টলিউডের খ্যাতনামী প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতারা বিষয়টি নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কলম ধরেছেন অভিনেতা কৌশিক সেন। এ-ও শোনা যাচ্ছে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রও নাকি ছাপা হয়েছে দেরিতে। টলিপাড়ার নির্দিষ্ট বৃত্তেই তা নাকি পাঠানো হবে।

সিনেমা জগতের পাশাপাশি টেলিপাড়াও কি বিষয়টি সম্পর্কে সজাগ? দু’টি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সত্যিই বদলে যাচ্ছে টেলিপাড়া-শাসকদলের সমীকরণ? বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অঞ্জনা বসু, অনিন্দ্যপুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমিতৃষা কুন্ডু, তৃণা সাহা।

আজীবন স্পষ্টবক্তা হিসাবে পরিচিত বিরোধী দলের নেত্রী এবং অভিনেত্রী অঞ্জনা। পুরো বিষয়টি শুনে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, “শাসকদলের ঘনিষ্ঠ কারা আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন? আমার জানা নেই। কয়েক জনের নাম বলতে পারবেন?” কখনও রাত দখল কর্মসূচি, কখনও প্রতিবাদ মিছিলে, এক দিনের জন্য হলেও শামিল হয়েছিলেন বিধায়ক-পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, জুন মালিয়া, অদিতি মুন্সি, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকেই। অভিনেত্রীকে সে কথা জানাতেই তাঁর জবাব এল, “কী মনে হয়, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়াই কেবল মনের ডাকে সাড়া দিয়ে এঁরা পথে নেমেছিলেন! সবটাই হয়েছে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করতে। এক দিনের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই ওঁরা প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয়েছিলেন।” তাঁর দাবি, বিরোধীরাই কাজ সামলে দফায় দফায় পথে নেমেছেন। অঞ্জনার কথায়, “যাঁরা প্রতিবাদী তাঁরা বরাবর শাসকদল থেকে দূরে। কোনও দিনই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছের নন।”

বাংলা বিনোদন দুনিয়ার জনপ্রিয় মুখ অনিন্দ্যপুলক। এক সময় পদ্মশিবিরেও যোগ দিয়েছিলেন। যদিও তিনি আপাতত রাজনীতি থেকে দূরে। ‘প্রতিবাদী’ তকমা তাঁর নামের পাশেও। পুরো বিষয়টি শোনার পর তাঁর প্রথম প্রতিক্রিয়া, তিনি এই ধরনের কোনও কথা শোনেননি। ফলে, বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। বাস্তবে সত্যিই যদি এ রকম কিছু ঘটে থাকে, তা হলে তিনি কী বলবেন? অভিনেতার দাবি, এই ঘটনা ইতিহাসের আদি যুগ থেকে ঘটে চলেছে। অতীতে বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন, গ্যালিলিও গ্যালিলেই-সহ বহু মনীষীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল। তিনি বলেন, “বাম জমানায় হয়তো বিনোদন দুনিয়ার সঙ্গে রাজনীতির ততটাও আদানপ্রদান ছিল না। যা বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে।” তার পরেও অভিনেতা-নাট্যকার উৎপল দত্তকে তদানীন্তন শাসকদলের বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তাই এ রকম যদি কিছু ঘটেই থাকে তা হলে তিনি অবাক হবেন না।

ছোট পর্দা, বড় পর্দা হয়ে সিরিজ়ে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছেন সৌমিতৃষা কুন্ডু। ডিসেম্বরে মুক্তি পেতে চলেছে তাঁর প্রথম সিরিজ় ‘কালরাত্রি’। অভিনেত্রী শাসকদল-ঘনিষ্ঠ, কমবেশি সকলেই জানেন। তিনিও জানান, এ রকম কিছু তিনিও শোনেননি। একই সঙ্গে এ-ও দাবি করেছেন, “আমার বিশ্বাস এ রকম কিছু ঘটতেই পারে না। কারণ, তাঁরা অভিনেতা ছাড়াও রাজ্যের নাগরিক। আমরা যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভরসা করি, একই ভাবে দিদিরও আমাদের প্রতি গভীর আস্থা। তাই তিনি রাজ্যের নাগরিকদের থেকে দূরে থাকতে পারবেন না।”

সদ্য শহরে ফিরেছেন তৃণা। পেশাগত কারণেই বেশ কিছু দিন তিনি কলকাতার বাইরে ছিলেন। অভিনেত্রীর কথায়, “আমি সবে কলকাতায় ফিরেছি। এ রকম কোনও কথা তাই জানি না। না জেনে কোনও বক্তব্যও রাখতে চাইছি না।”

আরও পড়ুন
Advertisement