নতুন ভূমিকায়, নতুন রূপে টোটা রায়চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক।
শঙ্কিত টোটা রায়চৌধুরী! “ইদানীং কেন জানি না মনে হচ্ছে, বড্ড বেশি প্রচারের আলোয় চলে আসছি। এত সাক্ষাৎকার দিচ্ছি যে ঘুরেফিরে যেন একই কথা বলছি। বক্তব্য যেন ফুরিয়ে আসছে! ভয় হচ্ছে, এত দেখতে দেখতে, একই কথা শুনতে শুনতে এ বার দর্শকেরই না একঘেয়ে লাগতে থাকে!”
এখন প্রচারের যুগ। ছবিমুক্তির আগে, বাকি সময় সমাজমাধ্যমে অভিনেতারা সারা ক্ষণ কিছু না কিছু বার্তা দিয়েই চলেছেন। নিজেদের নানা ভাবে মেলে ধরার চেষ্টা করছেন। এই প্রবণতাই কি অভিনেতাকে শঙ্কিত করেছে? অভিনেতার মতে, অনেকটাই ঠিক। এই প্রসঙ্গে তিনি উদাহরণ দিয়েছেন উত্তমকুমারের, “জনতার সঙ্গে প্রয়োজনীয় দূরত্ব বজায় রেখে ব্যক্তিগত পরিসরেও একই রকম উৎকর্ষ ও আনন্দে যাপন করতেন বলে আজও তিনি তাঁর অনুরাগীদের কাছে ঈশ্বরতুল্য!”
টোটা তাই ঠিক করেছেন, ‘কথা কম কাজ বেশি’তে আরও মন দেবেন। ছবি বা সিরিজ় মুক্তির আগে প্রচারে অংশ নিতে তিনিও বাধ্য। বাকি সময়ে কাজের পরিমাণ হয়তো একটু কমাতেও পারেন। কিংবা আরও বেছে কাজ করবেন। যেমন, ইতিমধ্যেই দক্ষিণী বিনোদন দুনিয়ায় আগের তুলনায় কাজ কমিয়ে দিয়েছেন। বদলে বাংলা আর বলিউডকে বেশি সময় দিচ্ছেন। কারণ, বাংলা তাঁকে তৈরি করেছে। বলিউড আরও সমৃদ্ধ, পরিণত করছে।
অনির্বাণ চক্রবর্তীর সঙ্গে টোটা রায়চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক।
এটাই কি নববর্ষের শপথ? “বলতে পারেন”, বললেন অভিনেতা। ঝুলিতে ইতিমধ্যেই একাধিক কাজ। বলিউডে শুটিং করছিলেন টোটা। নববর্ষে কলকাতায়। এই দিনটি শহরে, নিজের বাড়িতেই থাকার চেষ্টা করেন। বাড়ির ভালমন্দ রান্না, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো— তাঁর ঘরোয়া উদ্যাপনের অঙ্গ।
চলতি মাসের শেষে বা আগামী মাস থেকে তিনি ফের ‘ফেলুদা’। প্রস্তুতিও শুরু করেছেন। বার বার চিত্রনাট্য পড়ছেন। ‘ফেলুদা’ সিরিজ়ের পরিচালক বদলেছেন। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিবর্তে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। একটু ভয় ভয়? “না, সেটা হচ্ছে না। তবে মন দিয়ে কমলদার চাওয়া, বক্তব্য বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছি।” আরও বললেন, “ফেলুদা’ করার দেড় সপ্তাহ আগে সব কাজ বন্ধ করে দিই। ডাবিংও করি না। তখন আমার ভিতর-বাহির সত্যজিৎ রায়ের ‘প্রদোষ চন্দ্র মিত্র।’”
চুটিয়ে আড্ডা দিতে দিতেই সহকারী ‘তোপসে’ কল্পন মিত্রকে নিয়ে হঠাৎ রসিকতা পর্দার ‘ফেলুদা’র! সম্প্রতি কল্পন বিয়ে করেছেন। আড্ডায় সে প্রসঙ্গ উঠতেই তাঁর মত, “কল্পনকে তো চেনাই যাচ্ছে না! বিয়ের ছবি সমাজমাধ্যমে দিয়েছিল। দেখলাম। মনে হচ্ছে কিশোরবেলায় ফিরে গিয়েছে...”, বলেই জোরে হেসে ফেললেন। আরও যোগ করেছেন, “ছেলেদের বিয়ে হলে উন্নতি অবধারিত। কেউ রুখতে পারবে না!” পর্দায় উভয়েই চিরকুমার। বাস্তবে ‘ফেলুদা’ টোটা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সংসার করছেন। সেই জায়গা থেকে তাঁর মনে হয়েছে, “এই যে বিয়ে হল কল্পনের, এ বার ওর উন্নতি দেখবেন!”
শুধুই রসিকতা? টোটা রসিকতাও জানেন! বলতেই হাসি থামিয়ে গম্ভীর। নিজেকে সামলে নিয়ে দাবি, নিজের সুখী দাম্পত্য দিয়েই জেনেছেন, দোসর মনের মতো হলে তবেই পুরুষের জীবনে উন্নতি আসে। একই ভাবে নারীরও, বক্তব্য অভিনেতার।