(বাঁ দিক থেকে) সোহম চক্রবর্তী, মিঠুন চক্রবর্তী, পথিকৃৎ বসু। ছবি: সংগৃহীত।
অগণিত অনুরাগী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। কারণ, সোমবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। সেই সঙ্গে যেন টলিপাড়াতেও খুশির হাওয়া। মিঠুনের দ্রুত সুস্থতায় খুশি ‘শাস্ত্রী’ ছবির নির্মাতারাও।
সম্প্রতি অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী প্রযোজিত ‘শাস্ত্রী’ ছবির শুটিং করতে শহরে এসেছিলেন মিঠুন। শুটিং চলছিল নিয়মমাফিক। কিন্তু গত শনিবার সকালে শুটিংয়ে বেরোনোর আগে অসুস্থ বোধ করেন মিঠুন। বাইপাস সংলগ্ন এক বেসরকারি হাসপাতালে অভিনেতাকে ভর্তি করানো হলে চিকিৎসকরা জানান, তাঁর ইসকেমিক ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে। ফলে বন্ধ হয়ে যায় ছবির শুটিং। বিগত কয়েক দিনে ‘শাস্ত্রী’ ছবির প্রযোজক সোহম এবং পরিচালক পথিকৃৎ বসুর উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গিয়েছে। মিঠুন হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার পর উচ্ছ্বসিত সোহম আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘ছোট থেকে মানুষটার সঙ্গে আমার সম্পর্ক। শেষে আমার ছবির শুটিং করতে গিয়েই উনি অসুস্থ হলেন! আমার নিজেরই খুব খারাপ লাগছিল। কিন্তু আজকে আমি প্রচণ্ড খুশি।’’
সোহমের ধারণা, সঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়েছে বলেই মিঠুন এত দ্রুত সেরে উঠলেন। সোহম বললেন, ‘‘আরও মারাত্মক কিছু ঘটতে পারত। হাসাপাতালের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ।’’ সোহম জানালেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরেও নিজের পেশাদারিত্বের সঙ্গে কোনও রকম আপস করতে নারাজ ছিলেন মিঠুন। সোহমের কথায়, ‘‘হাসপাতালের বিছানায় শুয়েও বার বার আমাকে অসুস্থতার জন্য 'সরি' বলেছেন মিঠুনদা! বলেছেন যে, দু’দিন শুটিং বন্ধ রয়েছে, তার জন্য তিনি বাড়তি দু’দিন শুটিং করবেন।’’
মিঠুন দ্রুত শুটিংয়ে ফিরতে চান। কিন্তু সোহম আপাতত কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ছবির দ্বিতীয় শিডিউলের শুটিং হওয়ার কথা। কিন্তু সোহম জানালেন, ২০ তারিখ থেকেই মিঠুন শুটিং শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন। এ দিকে টলিপাড়ায় গুঞ্জন, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলে অভিনেতা নাকি বিশ্রামের জুন্য মুম্বই ফিরতে পারেন। তা হলে কি আপাতত কলকাতাতেই থাকবেন ‘মহাগুরু’, না কি পুত্র মিমোর সঙ্গে কয়েক দিনের জন্য মুম্বই পাড়ি দেবেন? সোহম বললেন, ‘‘চিকিৎসক দাদাকে আপাতত বিমানে উঠতে নিষেধ করেছেন। যতদূর জানি, আগামী কয়েক দিন কলকাতায় নিজের বোনের বাড়িতেই মিঠুনদা বিশ্রাম করবেন।’’
মিঠুন হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার পর পথিকৃতের কণ্ঠেও আনন্দের সুর। বললেন, ‘‘শুটিং নিয়ে আমি বিচলিত নই। কারণ, বৃষ্টি হলেও শুটিং বন্ধ হতে পারে। কিন্তু মিঠুনদার অসুস্থতা আমাকে ভাবাচ্ছিল। ঈশ্বরের কৃপায় এবং অনুরাগীদের শুভেচ্ছায় দাদা যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন, আমি তাতেই খুব খুশি।’’ মিঠুনের অসুস্থতার জন্য যে ছবির কাজ আপাতত স্থগিত হয়ে যেতে পারে, এ রকম কোনও চিন্তা পথিকৃৎকে ভাবায়নি। বললেন, ‘‘মানুষটা সে দিনও তো হাসপাতালেই বললেন যে, যত দ্রুত সম্ভব শুটিংয়ে ফিরতে চান। দাদার স্পিরিটটাই অন্য রকম। অনুপ্রেরণা যোগায়।’’ পরিচালক জানালেন, ইতিমধ্যেই ছবির পরবর্তী শুটিং শিডিউল নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। মিঠুনের শারীরিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে শুরু করবেন শুটিং।