প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল ছবি।
রবিবার কলকাতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভা। ব্রিগেডে হবে সমাবেশ। সেই সভা দিয়ে নীলবাড়ির লড়াইয়ে চূড়ান্ত পর্বের প্রচার শুরু করতে চায় বিজেপি। এই সমাবেশকে বিজেপি এতটাই গুরুত্ব দিচ্ছে যে ২ ও ৩ মার্চের বাংলা সফর বাতিল করেন অমিত শাহ। বিজেপি সূত্রে খবর, সফর বাতিলের পাশাপাশি রাজ্য নেতৃত্বকে অমিত এমন নির্দেশও দিয়েছেন যে সমাবেশের এমন চেহারা হওয়া চাই যাতে রাজ্য জুড়ে গেরুয়া হাওয়া তৈরি হয়ে যায়। আর সেই লক্ষ্যে বিজেপি শুধু দক্ষিণ নয়, উত্তরবঙ্গ থেকেও কর্মী, সমর্থকেদর নিয়ে আসতে চায় কলকাতায়।
বিজেপি-র দাবি, কলকাতা ছাড়া হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনার উপরে বেশি দায়িত্ব থাকলেও কর্মী সমর্থকরা আসবেন দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান থেকেও। এ ছাড়াও দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলার মধ্যে বীরভূম, নদিয়া থেকেও প্রচুর সমর্থককে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গের সব জেলা থেকেও ট্রেনে ও বাসে করে আসছেন কর্মীরা। ব্রিগেড সমাবেশকে পাখির চোখ করা বিজেপি শুধু সভা করে প্রচার নয়, বাড়ি বাড়ি গিয়েও সাধারণ মানুষের কাছে ব্রিগেডে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। শুক্রবার গোটা দিন চুঁচুড়ার বিভিন্ন এলাকায় বাসিন্দাদের বাড়ি গিয়ে ব্রিগেডে আসার আমন্ত্রণ জানান হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। গত কয়েক দিন ধরে ব্রিগেড সফল করতে নিজের লোকসভা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সভা ও বৈঠক সেরেছেন লকেট। ২২ ফেব্রুয়ারি হুগলির সাহাগঞ্জে সমাবেশ করে গিয়েছেন মোদী। এর পরেও হুগলি থেকে মানুষ আসবেন ব্রিগেডে? এমন প্রশ্নের উত্তরে লকেট বলেন, ‘‘শুধু হুগলি জেলা থেকেই দেড় লাখ মানুষ ব্রিগেডে যাবেন। ওই দিন ঐতিহাসিক সমাবেশ হবে ব্রিগেডে।’’
শুধু লকেট নন, রাজ্য বিজেপি-র সব নেতাই বিভিন্ন জায়গায় সাংগঠনিক বৈঠক ও সভা করছেন ব্রিগেড সমাবেশ সফল করতে। ব্রিগেডে সমাবেশ আয়োজনের দায়িত্ব রয়েছে রাজ্য বিজেপি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সিংহের উপরে। শুক্রবার সভার প্রস্তুতি দেখতে যান কেন্দ্রীয় নেতা তথা রাজ্য বিজেপি-র পর্যবেক্ষাক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সেই সঙ্গে হেস্টিংসে দলের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে শুক্রবার দফায় দফায় বৈঠক হয়।
গত লোকসভা নির্বাচনের সময়ও ব্রিগেডে সমাবেশ করেছিলেন মোদী। তবে রাজ্য বিজেপি-র লক্ষ্য সেই সমাবেশকেও যেন রবিবারের জমায়েত টেক্কা দিতে পারে। মোদীর সভাস্থল ঘিরে কড়া নিরাপত্তা ব্যাবস্থাও করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, ব্রিগেড ময়দানে মোট ৩টি মঞ্চ হচ্ছে। মূল মঞ্চ ৪০ ফুট বাই ৭২ ফুট। এটিতে মোদী-সহ অন্যান্য শীর্ষ নেতারা থাকবেন। মূল মঞ্চের দু’পাশে ২৪ ফুট বাই ৪০ ফুটের দু’টি মঞ্চ তৈরি হবে। একটিতে দলের অন্য নেতারা থাকবেন এবং মোদীর সমাবেশের আগে প্রথম দুই দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়ে গেলে সেই প্রার্থীরা থাকবেন। নিরাপত্তার জন্য মাঠের চারদিকে বাঁশের ব্যারিকেড থাকছে। সমাবেশে যাঁরা যোগ দিতে আসবেন তাঁদের যাতায়াতের জন্য নির্দিষ্ট পথ থাকবে। ৭৫টা মেটাল ডিটেক্টর লাগানো গেট থাকবে। লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদীর সভার সময় দর্শকদের জন্যও জার্মান হ্যাঙার ছিল ব্রিগেড ময়দান। কিন্তু এ বার সেটা শুধু মূল মঞ্চে থাকছে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সকলে যাতে ভাল করে দেখতে ও শুনতে পারেন তার জন্য মাঠেরন বিভিন্ন জায়গায় এলইডি স্ক্রিন থাকবে।