জয়রাম রমেশ। —ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদীর আমলে শ্রমিকদের মজুরি ‘অভূতপূর্ব হ্রাস’ পেয়েছে বলে আজ অভিযোগ করল কংগ্রেস। বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’ কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে দেশ আবারও উচ্চ বৃদ্ধির পথে হাঁটবে বলেও দাবি করেছেন কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ। মোদীর সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের তথ্য উল্লেখ করে তিনি দেখিয়েছেন, আজকের তুলনায় ১০ বছর আগে শ্রমিকদের ক্রয় ক্ষমতা অনেকটাই বেশি ছিল।
কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা বরাবর দাবি করে আসছেন মোদী জমানায় ধারাবাহিক ভাবে শ্রমিকদের আর্থিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। ক্রমেই তাঁদের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে দিচ্ছে সরকার। কংগ্রেসের তরফে আজ দাবি করা হয়েছে, মজুরি যেটুকু বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে মূল্যবৃদ্ধি। শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি অভূতপূর্ব ভাবে কমে গিয়েছে। রমেশ বলেন, ‘‘সরকারের লেবার ব্যুরো ওয়েজ রেট ইনডেক্স বলছে, ২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি থমকে ছিল। যার ফলে মোদী সরকারে দ্বিতীয় দফায়
প্রবল ভাবে কমেছে শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি।’’
কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের খতিয়ান তুলে ধরে রমেশের দাবি, মনমোহন সিংহের আমলে কৃষিক্ষেত্রের শ্রমিকদের প্রতি বছর প্রকৃত মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৬.৮ শতাংশ। কিন্তু মোদীর আমলে তা প্রতি বছর হ্রাস পেয়েছে। সেন্টার ফর লেবার রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশনের তথ্য উদ্ধৃত করে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্রের দাবি, ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে
ইট ভাটা শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি বাড়েনি। বরং অনেক সময়ে তা কমে গিয়েছে।
এক বিবৃতিতে রমেশ বলেছেন, ‘মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি থমকে গিয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে’। কংগ্রেসের দাবি, প্রকৃত মজুরি থমকে থাকার কারণে শ্রমিকদের ক্রয় ক্ষমতার হারও কমে গিয়েছে। যা গত ৫০ বছরে এই প্রথম। কিন্তু সরকার এই বাস্তব চিত্রকে আড়াল করার চেষ্টা করছে।
মোদী জমানায় বিনিয়োগের হারও কমেছে বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিনিয়োগের পরিমাণ এতটাই কমেছে যা অতীতে কখনও ঘটেনি। এই ঘটনা দেশের দীর্ঘমেয়াদি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউপিএ-র ১০ বছরের শাসনকালে জিডিপির নিরিখে লগ্নির অনুপাত ছিল ৩৩.৪%। কিন্তু মোদীর আমলে তা ২৮.৭ শতাংশে নেমেছে। ২০০৪ সালে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) যেখানে জিডিপির ০.৮% ছিল, সেখানে মনমোহন সিংহের নেতৃত্বে তা উঠেছিল ১.৭ শতাংশে। ২০২২ সালে তা ১.৫ শতাংশে নেমে এসেছে’। মোদীর আমলে উৎপাদন ক্ষেত্রেও বৃদ্ধির হারে ব্যাপক হ্রাস ঘটেছে বলে দাবি করেছে কংগ্রেস।
কংগ্রেসের অভিযোগ, এই সমস্ত কারণেই অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার নিম্নমুখী এবং বেকারত্ব ক্রমশ বাড়ছে।