রুদ্রনীল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
দু’দফায় পশ্চিমবঙ্গের ৩৮টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে বিজেপি। সেই তালিকায় ঠাঁই হয়নি বিজেপি নেতা তথা অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের। সোমবার দোলের দিনেই বিজেপির একাধিক হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই নিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর দল ছাড়ার জল্পনা। কিন্তু মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে রুদ্রনীল জানিয়েছেন, টিকিট না পেয়ে অভিমান হলেও, বিজেপির ঝান্ডা কাঁধে নিয়ে চলবেন তিনি।
রুদ্রনীল বলেছেন, ‘‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে আমার কিছুটা প্রত্যাশা ছিল। সেটা এখনও পর্যন্ত না হওয়াতে, শরীর থাকলে যেমন খারাপ হয়, মন থাকলেও তেমন খারাপ হবেই। রাজনৈতিক ক্ষেত্র দিয়েই তো প্রার্থী হয়ে ওঠা। সেটা তো হয় এবং লোকসভা ভোটের সময় সাতটি বিধানসভাকে কভার করতে গেলে জনপরিচিতির একটা জায়গা থাকে। অবশ্যই তাঁর সঙ্গে থাকে দলের প্রতি ডেডিকেশন, এবং দলকে সময় দেওয়া। দলীয় অনুশাসন মেনে চলা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি নিজের জীবন জীবিকা সরিয়ে দিয়ে প্রাণ দিয়ে কাজ করেছি। এ ক্ষেত্রে ৩৮টি আসনে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে, এখনও চারটি বাকি। যার মধ্যে তিনটিই জেনারেল। ডায়মন্ডহারবার, বীরভূম, আসানসোল এবং ঝাড়গ্রাম। ৩৮ জনের মধ্যে আসতে পারিনি, তাই মন খারাপ হয়েছে, খারাপ লাগছে।’’
রুদ্রনীল বলেন, ‘‘যখন কোনও অভিনেতা কোনও পুরস্কার পান বা ভাল চরিত্র পান, তখন আমরা দেখে বোঝবার চেষ্টা করি যে, আমার মধ্যে কোন ফাঁকটা রয়ে গেল, যে উনি ওই চরিত্রটি পেয়ে গেলেন? তাই আমিও কারণ খোঁজবার চেষ্টা করছি। দলে যাঁরা বড় রয়েছেন, শ্রদ্ধেয় নেতৃত্ব রয়েছেন তাঁরাও নিশ্চয়ই ভাববেন। এটা তাঁদের বিচার্য বিষয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আগুনে ফেলে যে সোনা করার যে পদ্ধতি আছে... ভবানীপুরে দাউদাউ আগুনের মধ্যে আমাকে ফেলা হয়েছিল। যেখানে আমাকে আক্রান্ত হতে হয়েছে। সেখানেও আমি এত ভোট পেয়েছি যে, ভোট প্রার্থীদের, কর্মীদের আক্রমণ করার পরেও কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে ভোট আনতে পেরেছিলাম। দল যে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিল, সেই দায়িত্ব পালন করতে পেরেছিলাম। আমিও তাই বোঝার চেষ্টা করছি। তবে যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন তাঁরা যথেষ্ট যোগ্য। কিন্তু তাঁদের কোন যোগ্যতাটা রয়েছে, যার ফলে তাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, এবং আমার নেই। সেটা আমি অনুধাবন করার চেষ্টা করব।’’
অভিমানী হলেও তিনি যে বিজেপি ছাড়ছেন না তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন রুদ্রনীল। তিনি বলেন, ‘‘এই দলের মধ্যে থেকেই এই দলের ঝান্ডা কাঁধে নিয়েই আমি কাজ করব। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে আমি তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করি। ২০১৭-১৮ সাল থেকে যারা চুরি জোচ্চুরি করেছে, তাদের রেখে দেওয়ার চেষ্টা তৃণমূল করেছিল সরকারি ভাবে। সেই কারণেই আমি সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছি।’’