Lok Sabha Election 2024

সিএএ জারি নিয়ে ভিন্নমত উদ্বাস্তুরা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারত মিত্রপক্ষে অংশ নেওয়ার কারণে কুপার্সে সেনা ছাউনি তৈরি করা হয়েছিল। মূলত এখান থেকেই যুদ্ধের যাবতীয় রসদ সরবরাহের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

Advertisement
সুদেব দাস
কুপার্স শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৪ ০৮:১৫
এখনও অস্তিত্ব রয়েছে কুপার্সে উদ্বাস্তু শিবিরের।

এখনও অস্তিত্ব রয়েছে কুপার্সে উদ্বাস্তু শিবিরের। নিজস্ব চিত্র।

সিএএ-র কার্যকর হতেই কুপার্স পুরসভার বাসিন্দাদের মধ্যেও চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ এক সময় উদ্বাস্তুদের জন্য এখানেই গড়ে উঠেছিল ত্রাণশিবির। সেই শিবিরে থাকা অনেকেই পরবর্তীতে এই শহরের তথা দেশের বাসিন্দা হয়েছেন। তাঁদের অনেকেই পেয়েছেন নিঃশর্ত জমির দলিল। এত কিছুর পরেও কেন তাহলে ফের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন? এই প্রশ্নই এখন ভাবাচ্ছে এখানকার বসবাসকারীদের।

Advertisement

অনেকে আবার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলেও সমস্যা হবে না বলেই মনে করছেন। তবে গত নির্বাচনগুলির মতো এবারের লোকসভা নির্বাচনেও এলাকায় উদ্বাস্তু এবং সিএএ প্রসঙ্গকে সামনে রেখে ভোট প্রচারে নেমে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারত মিত্রপক্ষে অংশ নেওয়ার কারণে কুপার্সে সেনা ছাউনি তৈরি করা হয়েছিল। মূলত এখান থেকেই যুদ্ধের যাবতীয় রসদ সরবরাহের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর কুপার্সকে সরকার বাংলাদেশিদের পুনর্বাসনের জন্য ব্যবহার করে। পরবর্তীতে আবার এই এলাকা সরকারি ভাবে হস্তান্তর করা হয় উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুনর্বাসন দফতরের হাতে। তখন থেকে বিভিন্ন সময়ে উদ্বাস্তুদের নিঃশর্ত জমির দলিল প্রদান করা হচ্ছে। ওই উদ্বাস্তুদের মধ্যে একটা বড় অংশ মতুয়া ও নমঃশূদ্র। প্রশ্ন উঠছে, একদিকে যখন সরকারিভাবে উদ্বাস্তুদের জমির দলিল দেওয়া হচ্ছে। তখন নতুন করে সিএএ-র নামে শর্তসাপেক্ষে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে কেন? বিষয়টি নিয়ে সম্মিলিত কেন্দ্রীয় বাস্তুহারা পরিষদের রাজ্য উপদেষ্টা কমিটির সদস্য তথা কুপার্সের বাসিন্দা অশোক চক্রবর্তী বলেন, "সিএএ সাংবিধান বিরোধী। এতে উদ্বাস্তুদের ফের নতুন করে উদ্বাস্তু করার চক্রান্ত চলছে। আমরা এর বিরোধিতা করছি।"

কুপার্সের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রবীণ বিমলচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, "দেশ ভাগের সময় মাত্র ১২ বছর বয়সে এদেশে চলে আসি। তখন থেকেই এখানে স্থায়ী ভাবে বাস করছি। নতুন করে নাগরিকত্বের জন্য কোনও আবেদন করব না। সম্প্রতি যাঁরা বাংলাদেশ থেকে এ দেশে এসেছেন, তাঁদের ওই আবেদন করতে হবে।" তাঁর প্রশ্ন, "রেশন পাচ্ছি, ভোট দিচ্ছি, সরকারি সুযোগ-সুবিধাও মিলেছে। তাহলে নতুন করে কেন আবেদন করব?" আবার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বছর সত্তরের বীরেন্দ্রনাথ হাওলাদার বলেন, "দেশভাগের পর কুপার্সে যে শরণার্থী শিবির খোলা হয়েছিল, সেখানেই আমার জন্ম। সে ক্ষেত্রে ভূমিপুত্র তিনি। তবে নাগরিকত্ব নিতে হলে সমস্যা নেই।"

কুপার্সবাসীর একটা অংশের মতে, চিরদিনই উদ্বাস্তুদের সামনে রেখে ভোটের রাজনীতি চলে। এবার সত্যি যদি নাগরিকত্ব মেলে তাহলে হয়তো উদ্বাস্তু তকমা ঘুচবে।

আরও পড়ুন
Advertisement