Lok Sabha Election 2024

বিজেপির ভরসা দক্ষিণে, কংগ্রেস বলছে উল্টো হাওয়া

কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, এই পরিস্থিতি বুঝতে পেরেই নরেন্দ্র মোদী এখন মুসলিমদের নাম করে ভোটের মেরুকরণের মরিয়া রাস্তা নিচ্ছেন। রুটিরুজির সমস্যার মতো আসল বিষয় থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:২৬
PM Narendra Modi.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ মিটে যাওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করলেন, এ বার দক্ষিণ ভারতে বিজেপির আসন ও ভোটের হার দুইই বাড়তে চলেছে। উল্টো দিকে কংগ্রেসের দাবি, বিজেপি দক্ষিণ ভারত থেকে সাফ হয়ে যাবে। উত্তর ভারতে বিজেপির আসন সংখ্যা অর্ধেক হয়ে যাবে। কারণ নরেন্দ্র মোদী লোকসভা নির্বাচনে কোনও একটি সুর বেঁধে দিতে ব্যর্থ। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যে চোরাস্রোত বইছিল, তা এখন ঢেউয়ের আকার ধারণ করতে চলেছে।

Advertisement

কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, এই পরিস্থিতি বুঝতে পেরেই নরেন্দ্র মোদী এখন মুসলিমদের নাম করে ভোটের মেরুকরণের মরিয়া রাস্তা নিচ্ছেন। রুটিরুজির সমস্যার মতো আসল বিষয় থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। নরেন্দ্র মোদী আজ রাজস্থানে গিয়ে মুসলিমদের নাম করে অভিযোগ তুলেছেন, কংগ্রেস মুসলিমদের মধ্যে দেশের সম্পত্তি বিলিয়ে দিতে চাইছে। মুসলিমদের সম্পর্কে বেশি সন্তান জন্ম দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাঁদের সরাসরি ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলেও তকমা দিয়েছেন। রাহুল গান্ধীর দাবি, প্রথম দফার ভোটগ্রহণের পরে নরেন্দ্র মোদী আসলে ঘাবড়ে গিয়েছেন।

গত ১৯ এপ্রিল লোকসভা ভোটের প্রথম দফায় ২১টি রাজ্যের ১০২টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে তামিলনাড়ুতে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। ২৬ এপ্রিল কেরলের সব আসন ও কর্নাটকে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ। তার পরে মে মাসে অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানায় ভোটগ্রহণ হবে। ২০১৯-এ দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির ১৩০টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি ২৯টি আসন জিতেছিল। এর মধ্যে ২৫টি লোকসভা কেন্দ্র ছিল কর্নাটকে। বাকি চারটি তেলঙ্গানায়। তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল, পুদুচেরিতে তারা কোনও আসন জেতেনি। এ বার ১৩০টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি ৬০টি জিতে আসার লক্ষ্য নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আগেই দাবি করেছেন, দক্ষিণ ভারতে বিজেপির এ বার আসন সংখ্যা ও ভোটের হার দুই-ই বাড়বে। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি মিলিয়ে ধরলে ২০১৯-এ বিজেপিই সবথেকে বেশি আসন জিতেছিল।

কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের পাল্টা দাবি, প্রথম দফায় ভোটগ্রহণের ‘গ্রাউন্ড রিপোর্ট’ বলছে, ইন্ডিয়া জোট বিজেপির থেকে এগিয়ে। তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্রে ইন্ডিয়া জোট সব আসনে জিতছে। বিহার, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশেও বিরোধী জোট এগিয়ে। উত্তরপ্রদেশ-বিহারে ভোট কম পড়েছে প্রথম দফায়। সেটা বিজেপিরই চিন্তা বাড়িয়েছে। খারাপ ফলের আভাস পেয়ে বিজেপি নেতৃত্ব ভয় পেয়ে গিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকেও সেটা স্পষ্ট। কংগ্রেসের মতে, বিজেপির প্রার্থীরা নিজেরাই প্রকাশ্যে স্বীকার করছেন, এ বার কোনও ‘মোদী হাওয়া’ নেই। তাই তাঁদের অনেক পরিশ্রম করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নিজের বক্তৃতায় তেমন কোনও আশা তৈরি করতে পারেননি। ৪০০-র বেশি আসন জেতার দাবি ও সংবিধান সংশোধনের কথায় উল্টো ফল হয়েছে। জয়রামের দাবি, “মোদী সরকারের বিরুদ্ধে চোরাস্রোত জোরদার হচ্ছে। নতুন হাওয়া তৈরি হচ্ছে।”

কংগ্রেসের দাবি, সিএসডিএস সংস্থার সমীক্ষাতে দেখা গিয়েছে, সিংহভাগ মানুষ চাকরি, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত। অর্ধেকের বেশি মানুষ মোদী সরকারের ক্ষমতায় ফেরা উচিত কি না, সেই প্রশ্নে ‘না’ বলেছেন। অথবা কোনও জবাব দেননি। কংগ্রেস নেতা সলমন সোজের বক্তব্য, “এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী হিন্দু বনাম মুসলমান লড়িয়ে ভোটে জিততে চাইছেন। একজন ক্ষমতালোভী মানুষই এই কাজ করতে পারেন।”

আরও পড়ুন
Advertisement