Lok Sabha Election 2024

ভোটের দিন গ্রামেও বাহিনীর টহল দাবি

অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে বুথে পাহারার পাশাপাশি গ্রামের পথে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে টহল দেওয়ার দাবি উঠতে শুরু করেছে মুর্শিদাবাদ।

Advertisement
সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:১৭

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরটোপে বুথ যেন দুর্গের চেহারা নিয়েছে। সেই বুথের ধারে কাছে ভোটার ছাড়া আর কাউকে ঘেঁষতে দিচ্ছেন না কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। তবে সেই বুথে আসার পথে গ্রামের ভিতরের রাস্তায় বাধা দিচ্ছেন শাসকদলের লোকজন— বিগত নির্বাচনগুলিতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় এমন অভিযোগ উঠেছিল।

Advertisement

এ বারেও ভোটের প্রচারের মধ্যে বিজেপি ও কংগ্রেসের প্রার্থীদের পথ আটকে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিরোধীদের দাবি, প্রচারে পথে যদি খোদ প্রার্থীদের পথ আটকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয়, ভোটের দিন সাধারণ ভোটারদের গ্রামের পথ আটকানো তাঁদের পক্ষে অসম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে বুথে পাহারার পাশাপাশি গ্রামের পথে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে টহল দেওয়ার দাবি উঠতে শুরু করেছে মুর্শিদাবাদ।

জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনী যেমন বুথ পাহারায় থাকবে, তেমনই তাঁরা গ্রামেও টহল দেবে। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘‘অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে যা যা প্রয়োজনীয় তা করা হচ্ছে।’’

নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে শাসক দলের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে অধীর চৌধুরীকে। বহরমপুরের শহরের দুই জায়গা ছাড়াও বহরমপুরের বাসাবাড়ি এবং নওদায় অধীরকে ‘গো-ব্যাক’ স্লোগানের মুখে পড়তে হয়েছে। জলঙ্গিতে ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান শুনতে হয়েছে বিজেপির মুর্শিদাবাদের প্রার্থী গৌরীশঙ্কর ঘোষকেও। ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে তত উত্তেজনা বাড়ছে।

এক সিপিএম কর্মী বলছেন, ‘‘অতীতে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে বুথ থাকলেও গ্রামের ভিতর থেকে বিরোধীদের শাসকদল আসতে বাধা দিচ্ছে। তাই অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন করতে হলে বুথ পাহারার পাশাপাশি ভোটের দিনে গ্রামেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল দেওয়ার ব্যবস্থা করাতে হবে।’’

বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘বুথ পাহারার পাশাপাশি ভোটের দিনও যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী গ্রামে টহল দেয় সেই দাবি জানাচ্ছি। গ্রামে ভোটারদের তৃণমূল আটকালে বিজেপি ছেড়ে কথা বলবে না। কেন্দ্রীয় বাহিনী যেমন ব্যবস্থা নেবে, আমরাও তেমন রুখে দাঁড়াব।’’

প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘ভোটের আগে ও ভোটের দিন ভোটারদের ভয় দূর করানোর জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছি। সেই মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে। নির্বিঘ্নে ও শান্তিতে ভোট দান করার ব্যবস্থা করতে যা যা দরকার কেন্দ্রীয় বাহিনী করবে। ভোটের দিন ভোট লুট করতে পারবে না বলে তৃণমূল এখন থেকে পথ আটকানোর চেষ্টা করছে। এ সব করে লাভ হবে না। এবারে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের কপালে বড় শূন্য অপেক্ষা করছে।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, ‘‘নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে। তার জন্য শুধু বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিলে কাজ হলে তাই করতে হবে। আবার বুথের পাশাপাশি ভোটের দিন যদি গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে রুট মার্চ করাতে হয় তাই করতে হবে। যে ভাবেই হোক মানুষকে শান্তিতে ও নির্বিঘ্নে ভোট দানের ব্যবস্থা করাতে হবে।’’

তবে জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘কাউকে বাধা দান করা তৃণমূলের কাজ নয়। এতদিন তাদের দেখা যায়নি। সাধারণ মানুষ ওদের কাছে পেয়ে ক্ষোভের কথা জানাচ্ছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হয়েছিল। তাতে জেলার ২২টি আসনের মধ্যে ২০টি পেয়েছিলাম। এ বারেও আমরাই সব আসন পাব।’’

আরও পড়ুন
Advertisement