মুখ্য়মন্ত্রী একনাথ শিন্দে, উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস এবং বিজেপি প্রার্থী সুধীর মুনগন্টাওয়ারের সঙ্গে প্রচার-মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরে। ছবি: পিটিআই।
দুর্নীতি প্রসঙ্গে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ছত্তীসগঢ় এবং মহারাষ্ট্রের লোকসভা নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন। সেই সঙ্গে আগের মতোই হিন্দুত্বের তাসও খেলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বস্তারের জনসভায় মোদী আজ বলেন, “ভারতই আমার পরিবার। এই দেশকে লুটের হাত থেকে রক্ষা করতে আমি দৃঢ়সংকল্প। আমি বলি, দুর্নীতি দূর করতে হবে, ওরা বলে দুর্নীতিগ্রস্তকে বাঁচাতে হবে! যতই হুমকি মোদীকে দেওয়া হোক না কেন, দুর্নীতিগ্রস্ত জেলে যাবেই। এটা মোদীর গ্যারান্টি।”
পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরের জনসভায় তাঁর বক্তব্য, “দেশের সমস্ত সমস্যার উৎস হল কংগ্রেস। ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগের জন্য দায়ী কে? কাশ্মীর সমস্যা, নকশাল সমস্যার জন্য দায়ী কে? কে রামমন্দিরের নির্মাণে আপত্তি জানিয়েছিল?” কংগ্রেসকে ‘তেতো করলা’র সঙ্গে তুলনা করে তাঁর মন্তব্য, তাকে ‘চিনির সঙ্গে মেশালে’ বা ‘ঘিয়ে ভাজলেও’ স্বাদের অন্যথা হবে না!
বস্তারেও মোদী কংগ্রেসের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “স্বাধীনতার পর কংগ্রেস ভেবে নিয়েছিল, তাদের দেশকে লুট করার ছাড়পত্র রয়েছে। কিন্ত ২০১৪ সালে আমরা সরকারে আসার পর, কংগ্রেসের লুটের লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছে মোদী। এটা করা সম্ভব হয়েছে কারণ আপনারা মোদীকে লাইসেন্স দিয়েছেন। এখন কংগ্রেসের দোকান বন্ধ। এখন তারা মোদীকে অপমান করবে কি করবে না? কে সুরক্ষা দেবে আমাকে? কোটি কোটি দেশবাসী দেবেন। আমার মা বোনেরা দেবেন। আজ তাঁরাই আমার রক্ষাকবচ।”
রামমন্দির নির্মাণ প্রসঙ্গ তুলে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের প্রয়াসও অব্যাহত রেখেছেন মোদী আজ তাঁর জনসভায়। বলেছেন, “রামমন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে কংগ্রেসের রাজার পরিবার। কংগ্রেসের যে সব নেতা বলেছেন, এই পদক্ষেপ ভুল হয়েছে, তাঁরা দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। এটা থেকেই স্পষ্ট, কংগ্রেস তোষণের (সংখ্যালঘু) শেষ সীমাও ছাড়াতে প্রস্তুত। কংগ্রেসের ইস্তেহারে মুসলিম লিগের ছাপ স্পষ্ট। আজকেও কংগ্রেসের কিছু যায় আসে না দেশের লোক কী ভাবছে। বিজেপি সরকার সমস্ত গ্যারান্টির বাস্তবায়ন করছে।” সরকারের তরফে দলিত, জনজাতি পিছড়েবর্গের প্রতি অগ্রাধিকারের দিকটিও সামনে নিয়ে এসেছেন তিনি। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, উজ্জ্বলা যোজনা, বিনামূল্যে রেশন, এবং সরকারের অন্য সুবিধাগুলি করা হয়েছে দলিত, উপজাতি এবং ওবিসি-র দিকে তাকিয়েই।
মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরে জনসভায় ‘নতুন ভারতের’ সঙ্গে রামমন্দিরের নির্মাণকে সংযুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি তাঁর কথায়, “গত দশ বছরে কংগ্রেস ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। আপনারা এনডিএ-কে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছেন। আমরা দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলির স্থায়ী সমাধান এনে দিয়েছি। তাঁর কথায় ইন্ডি-জোটের সদস্যরা হুমকি দিচ্ছেন দক্ষিণ ভারতকে পৃথক করার। ওই জোটের প্রতিনিধি ডিএমকে দল সনাতন ধর্মকে ম্যালেরিয়া বলে তাকে শেষ করতে উদ্যত।” উদ্ধবপন্থী শিবসেনাকেও খোঁচা দিতে দেখা গিয়েছে মোদীকে।