Lok Sabha Election 2024

‘জানি না মৃত্যুর পর শাস্তি পাব কি না’! শিশিরের নিশানায় ঘাসফুল, বললেন, প্রতীক দিয়েছে, ভোট দেয়নি

২০০৯ সাল থেকে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে তিন বার সাংসদ হয়েছেন শিশির। কনিষ্ঠ পুত্র সৌমেন্দুকে ওই কেন্দ্র থেকেই টিকিট দিয়েছে বিজেপি। তার পরই তৃণমূলকে নিশানায় প্রবীণ সাংসদ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৪ ১৮:৫৬
Sisir Adhikari

শিশির অধিকারী। ছবি: সংগৃহীত।

লোকসভা ভোটের প্রার্থী তখনও ঘোষণা করেনি বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আরামবাগ থেকে রেলের একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধনের দিনই খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ শিশির অধিকারীর ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ ছিল বাংলার ৪২ আসনের ৪২টিতেই জিতবে বিজেপি। আর ছেলে সৌমেন্দু অধিকারীকে বিজেপি তাঁরই লোকসভা থেকে প্রার্থী করার পর শিশির জানালেন, অনেক আগে থেকেই অধিকারী পরিবার বিজেপিতে। তাঁর আর আলাদা করে বিজেপিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি, তাঁর সাংসদপদ খারিজের আবেদন নিয়ে তৃণমূলকেও বেনজির আক্রমণ করলেন কাঁথির প্রবীণ সাংসদ।

Advertisement

শিশিরের বিরুদ্ধে বার বার দলবিরোধী আচরণের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে ঘাসফুল শিবির। সেই বিতর্কের জল গড়িয়েছে সংসদের অন্দরেও। স্পিকার ওম বিড়লার কাছে সেই বিষয়টি এখনও বিচারাধীন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে এ নিয়ে শিশিরের কটাক্ষ, ‘‘আমাকে শেষ মুহূর্তে তাড়ানোর সমস্ত রকম চেষ্টা করেছে। স্পিকারের কাছে আমার সাংসদ পদ বাতিলের আবেদন পড়ে রয়েছে। জানি না, মৃত্যুর পর আমি শাস্তি পাব কি না।’’ শিশির এ-ও জানিয়েছেন, তিনি আদতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘সহযোগী’। রবিবার তিনি বলেন, ‘‘আমি আনুষ্ঠানিক ভাবে আবার কেন বিজেপিতে যোগ দেব? আমি তো নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের সঙ্গেই আছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যে দিন থেকে শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সে দিন থেকেই ওদের (তৃণমূলের) বুঝে যাওয়ার উচিত ছিল যে আমাদের গোটা পরিবারই ওর (শুভেন্দুর) সঙ্গে বিজেপিতে চলে গিয়েছে।’’

২০০৯ সাল থেকে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে তিন বার সাংসদ হয়েছেন শিশির। শুভেন্দু তৃণমূলে থাকাকালীন শিশির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতিও ছিলেন। সেই সময় পরিবারের ছোট ছেলে সৌমেন্দু ছিলেন কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান। সেজো ছেলে দিব্যেন্দু অধিকারী এখনও তমলুকের সাংসদ। তবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শুভেন্দুর তৃণমূল ত্যাগ এবং বিজেপিতে যোগদানের পর শান্তিকুঞ্জের (অধিকারীদের বাসভবন) সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তৃণমূলের। তার পর বিধানসভা ভোটে শুভেন্দুর নন্দীগ্রাম বিধানসভা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এবং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে হারানোর পর কার্যত অধিকারীদের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয় তৃণমূলের। ঘটনাক্রমে কাঁথির প্রশাসক পদ থেকে অপসারিত হন সৌমেন্দু। পরবর্তীকালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় তৃণমূলের হুইপ অমান্য করেন শিশির এবং পুত্র দিব্যেন্দু। তার জেরে পিতা-পুত্রের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে সখ্যের অভিযোগ তোলে তৃণমূল। তাঁদের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে সংসদে আবেদন জানানো হয়। সেই বিষয়টি এখনও বিচারাধীন।

শনিবার কাঁথি কেন্দ্রে প্রার্থী হিসাবে শিশিরের কনিষ্ঠ পুত্র সৌমেন্দুর নাম ঘোষণা করেছে। তার পরেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আরও সুর চড়ালেন শিশির। আক্ষেপের সুরে অভিযোগ করেন, ‘‘আমাকে তৃণমূল সিম্বলটুকু দিয়েছিল, ভোট দেয়নি। আমার বিরুদ্ধে যারা দাঁড়িয়েছিল, তাদের টাকা বিলিয়েছিল। আমি জানি সেটা।’’ তিনি আরও বলেন,‘‘তৃণমূল অফিসের কেউই চায়নি আমি জিতি। মানুষ আমাকে চেয়েছেন বলেই আমি জিতেছিলাম।’’ শিশির জানিয়েছেন, ছেলে সৌমেন্দুর হয়ে ভোটে ১০০ শতাংশ লড়াই করবেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ছেলে বিজেপির প্রার্থী, এটা আমাদের পরিবারের কাছে গর্বের ব্যাপার। আমি ছেলের প্রচারের জন্য ১০০ ভাগ সময় দেব।’’

আরও পড়ুন
Advertisement