চাকরি মামলার রায়ে খ্যাত অভিজিতের বিরুদ্ধে লড়তে নামছেন চাকরিপ্রার্থী মাহি, টিকিট দিচ্ছে আইএসএফ

আইএসএফ প্রার্থী মাহি ২০১৬ সালে তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলা করেছিলেন। উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগে প্রথম যে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত, সেখানে অন্যতম মামলাকারী ছিলেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৪ ১২:১৬
(বাঁ দিকে) অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং মাহিউদ্দিন আহমেদ ওরফে মাহি।

(বাঁ দিকে) অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং মাহিউদ্দিন আহমেদ ওরফে মাহি। —নিজস্ব চিত্র।

শিক্ষক নিয়োগ মামলায় তাঁর একের পর এক নির্দেশ এবং পর্যবেক্ষণের জন্য চাকরিপ্রার্থীদের কাছে রাতারাতি ‘মসিহা’ হয়ে উঠেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। স্বেচ্ছাবসর নিয়ে তিনি বিজেপির টিকিটে এ বারের লোকসভা ভোটে লড়াই করছেন। অবসরপ্রাপ্ত ওই বিচারপতির বিরুদ্ধে তমলুক লোকসভা আসনে এক শিক্ষকের চাকরিপ্রার্থীকেই ভোটের প্রার্থী করল আইএসএফ। বস্তুত, মাহিউদ্দিন আহমেদ ওরফে মাহি নামে ওই চাকরিপ্রার্থী ২০১৬ সালে তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলা করেছিলেন। উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগে প্রথম যে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত, সেই মামলার অন্যতম মামলাকারী ছিলেন মুর্শিদাবাদের ওই বাসিন্দা।

Advertisement

কলকাতার ধর্মতলার বুকে যে উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না শুরু হয়, সেই ধর্নামঞ্চের সভাপতি এই মাহি। তিনি কেন হঠাৎ ভোটের ময়দানে? আনন্দবাজার অনলাইনকে মাহি বলেন, ‘‘বঞ্চিতদের কথা তুলে ধরতেই সংসদীয় রাজনীতিতে আসা।’’ আর অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির বিরুদ্ধে তাঁকে প্রার্থী করা কি নেহাতই কাকতালীয় না কি জেনেবুঝেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইএসএফ? মাহির জবাব, ‘‘আইনি দোহাই দিয়ে আমাদের নিয়োগ আটকে রয়েছে। অনেকে আমাদের ব্যবহারও করেছেন।’’ কিন্তু তমলুক আসন বেছে নেওয়ার কারণ ঠিক কী? আনন্দবাজার অনলাইনে আইএসএফ প্রার্থী বলেন, ‘‘চাকরিপ্রার্থীদের কথা তুলে ধরার মতো পরিবেশ ওই কেন্দ্রে তৈরি হয়েছে। ওখানে চোর, বিচারপতি থেকে আইনজীবী সবাই রয়েছেন।’’

তমলুক লোকসভা আসনে তৃণমূল প্রার্থী করেছে তরুণ মুখ দেবাংশু ভট্টাচার্যকে। বিজেপি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে টিকিট দেওয়ার পর বামেরা প্রার্থী করে তাদের তরুণ মুখ, পেশায় আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু আইএসএফ তাঁকে প্রার্থী করে আখেরে ভোট কাটাকাটিতে বিজেপি প্রার্থীকেই সুবিধা করে দিল না? মাহি তা মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, তিনি শুধু চাকরিপ্রার্থী এবং বাংলার বেকারদের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন। অন্য কোনও সূত্র বা সমীকরণ সেখানে নেই।

উল্লেখ্য, বামেদের সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা হয়নি আইএসএফের। তাই লোকসভা ভোটে তারা স্বতন্ত্র ভাবে লড়াই করছে। ইতিমধ্যে তৃতীয় পর্যায়ের যে প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেছে তাতে তমলুক ছাড়াও রয়েছে জঙ্গিপুর, বনগাঁ, কৃষ্ণনগর আসন। জঙ্গিপুরে তারা প্রার্থী করেছে সাজাহান বিশ্বাস। তিনি সুতির তৃণমূল বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের দাদা।

বনগাঁ কেন্দ্র থেকে আইএসএফের টিকিটে লড়াই করছেন দীপক মজুমদার, কৃষ্ণনগরে লড়ছেন আফরোজা খাতুন। এর আগে দুই পর্যায়ে ১৩টি আসনে আইএসএফ প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানানো হয় ওই দলের তরফে। এখনও পর্যন্ত মোট ১৭টি লোকসভা আসনে প্রার্থী দিয়েছে আইএসএফ।

আরও পড়ুন
Advertisement