নেতাদের মিলেমিশে কাজ করতে বললেন অভিষেক
Lok Sabha Election 2024

গলছে বরফ, ভোটের মুখে অসিত-সঞ্জয় নৈকট্যে চর্চা

পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় নির্বাচনী বৈঠক করছেন সঞ্জয় ঘোষের কার্যালয়ে গিয়ে! সঞ্জয়ও দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি।

Advertisement
সুশান্ত সরকার 
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:১৯
পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় নির্বাচনী বৈঠক করলেন সঞ্জয় ঘোষের কার্যালয়ে গিয়ে।

পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় নির্বাচনী বৈঠক করলেন সঞ্জয় ঘোষের কার্যালয়ে গিয়ে। —নিজস্ব চিত্র।

গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকেই দলে দু’জনের অবস্থান ছিল দুই মেরুতে। লোকসভা ভোটের মুখে বরফ গলতে শুরু করেছে। এতটাই যে, পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় নির্বাচনী বৈঠক করছেন সঞ্জয় ঘোষের কার্যালয়ে গিয়ে! সঞ্জয়ও দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি। আগেকার তিক্ত সম্পর্ক নিয়ে দু’জনেই বলছেন, সে সব অতীত। তবে, বিরোধীরা শাসকদলের এ হেন ‘গোষ্ঠীবদ্ধতা’ দেখে কটাক্ষ করছেন। চর্চা তৃণমূলেও।

Advertisement

গত মাসে হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মিসভায় তাঁদের ডাকা হয়নি বলে অসিত, সঞ্জয় দু’জনেই অভিযোগ তুলেছিলেন। পরে দলের জেলা নেতৃত্বের তরফে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ক্ষোভ সামাল দেওয়া হয়। ওই দুই নেতা নির্বাচনে প্রার্থীর হয়ে নামবেন বলে জানান। এ সবের মধ্যেই সঞ্জয়-অসিতের দূরত্ব ঘুচেছে। সোমবার অসিত যান সঞ্জয়ের কার্যালয়ে।

সঞ্জয় জানান, তিনি অসিত, পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি চম্পা হাজরা, প্রাক্তন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জীব ঘোষ, বর্তমান সভাপতি ময়না মাঝি এবং বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধান-উপপ্রধানদের ডেকেছিলেন। অসিত বলেন, ‘‘নির্বাচনের প্রচার কর্মসূচি নিয়ে দলীয় বৈঠক করলাম সঞ্জয়ের অফিসে। আমরা তৃণমূলের সৈনিক। একসঙ্গে কাজ করতে চাই।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পুরনো দিনের কথা ভুলে যান। রাজনীতিতে সব হয়। সঞ্জয় আমার ছোট ভাই।’’ সঞ্জয়ও বলেন, ‘‘অসিতদা আমার দাদা। কিছু ভুলভ্রান্তি হয়েছিল। আমরা তা মিটিয়ে নিয়েছি। সামনে লোকসভা ভোট, একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’’ সঞ্জয়ের কার্যালয়ে বৈঠক নিয়ে পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূলের বর্তমান সভাপতি আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘‘ভোটের সময়ে দলীয় যে কেউ মিটিং করতে পারেন।’’

সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত ভোটে ছড়ি ঘোরানোর অভিযোগ তুলেছিলেন অসিত-গোষ্ঠীর নেতারা। তাঁদের অনেকেই ওই ভোটে কার্যত বসে গিয়েছিলেন। দলের ফলও খুব ভাল হয়নি। এখন সঞ্জয়-অসিত নৈকট্যে দলের এক কর্মী বলেন, ‘‘কার সঙ্গে কার কোন্দল, কে কার সঙ্গে কখন মিশে যাচ্ছেন, বোঝা দায়! আমরা কোন নেতা ধরে দল করব, সেটাই বুঝতে পারছি না। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে নেতারা টিকিট পেলেন না, আবার লোকসভা নির্বাচনের সময় বৈঠকের জন্য ডাকছেন!’’

সিপিএম নেতা তথা পান্ডুয়ার প্রাক্তন বিধায়ক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘আসলে ওরা ধান্দাবাজির লড়াই করে।’’ বিজেপির পান্ডুয়া মণ্ডল সভাপতি অমিতাভ ঘোষ বলেন, ‘‘ওই দলে কে কার সাথে থাকবেন, এটা বিষয় নয়। আসলে ওঁদের মধ্যে স্বার্থ ও অর্থের লড়াই চলছে।’’

রচনার প্রচারে সবাই যাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন, মঙ্গলবার সিঙ্গুরে এসে কড়া ভাবে সেই বার্তা দিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, সম্প্রতি রচনার কর্মিবৈঠকে পঞ্চায়েত প্রধানদের একাংশের গরহাজিরা নিয়ে পান্ডুয়ার এক নেতাকে সতর্ক করে দেন অভিষেক। সবাইকে নিয়ে চলার কথা বলেন ব্লকের এক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকেও। ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্রকে পান্ডুয়ার দায়িত্ব দেন অভিষেক। এর আগে রচনা পান্ডুয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন সপ্তগ্রামের বিধায়ক তপন দাশগুপ্তকে।

অসীমা বুধবার বলেন, ‘‘শীঘ্রই পান্ডুয়া ব্লকের সব নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে নতুন রণকৌশল তৈরি করা হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement