Lok Sabha Election 2024

মুকুট-ঘনিষ্ঠদের ছাঁটছে মহাসঙ্ঘ

মুকুটের বদলে সভাপতির দায়িত্ব নিয়েই সুশীল বসু জানিয়েছেন, মতুয়াদের মধ্যে যাঁরা দলবদলু বিধায়কের অনুগামী, তাঁদের ফিরিয়ে আনাই হবে প্রধান কাজ।

Advertisement
দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৩৯
মুকুটমণি অধিকারী।

মুকুটমণি অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

দক্ষিণ নদিয়ার বিভিন্ন ব্লকে সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের বিভিন্ন পদ থেকে মুকুটমণি অধিকারীর ঘনিষ্ঠদের সরাতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। বিজেপি ঘেঁষা ওই সংগঠনের নদিয়া দক্ষিণ শাখার দীর্ঘদিনের সভাপতি ছিলেন রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুট। সম্প্রতি বিজেপি ছেড়ে তিনি লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার পরেই তাঁকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

মুকুটের বদলে সভাপতির দায়িত্ব নিয়েই সুশীল বসু জানিয়েছেন, মতুয়াদের মধ্যে যাঁরা দলবদলু বিধায়কের অনুগামী, তাঁদের ফিরিয়ে আনাই হবে প্রধান কাজ। অন্যথায় তাঁদের ‘নিষ্ক্রিয়’ করে দেওয়া হবে। সেই মতোই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে মতুয়া মন বোঝার কাজ শুরু করেছেন তিনি।

রাজনৈতিক মহলের অনুমান, ২০২০ থেকে টানা প্রায় চার বছর সংগঠনের সভাপতি থাকার সুবাদে মুকুট নিজের মত করে সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তুলছিলেন। তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর তাঁর ঘনিষ্ঠদের পদে রাখতে নারাজ বিজেপি-পন্থীরা। সুশীল নিজে সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

বুধবার সুশীল বলেন, “আমার নিজের এলাকা হাঁসখালি ব্লকের সভাপতি ছিলেন নারায়ণ বিশ্বাস। তিনি মুকুটমণির সঙ্গেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন। অতএব আমরা ওখানে বিকল্প হিসাবে শিক্ষক বিপুল অধিকারীর কথা ভেবেছি। তিনি এখন ওই ব্লকের সম্পাদক। আগামী শুক্রবার ওখানে সকলকে নিয়ে সভা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।” একই ভাবে রানাঘাট, শান্তিপুর বা নবদ্বীপেও সংগঠনের কিছু সভাপতি বা সম্পাদকদের নিয়ে কথা উঠেছে।

আগেই রানাঘাট ১ ব্লকের সভাপতি পরিমল বিশ্বাসকে বদল করার কথা জানিয়েছিলেন নদিয়া দক্ষিণের কার্যকরী সভাপতি জয় মিত্র। নতুন সভাপতি হিসাবে তিনি বিবেকানন্দ বিশ্বাসের নাম জানান। পরিমল এ দিন দাবি করেন, “সুশীল বসু আমাকে দায়িত্বে থাকতে বলছেন। সকলের মতামত নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার একটি সভাও করেছি। সকলেই আমাকে সমর্থন করেছেন।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “মুকুটমণির নেতৃত্বেই প্রথম থেকে নিঃশর্ত নাগরিকত্বের জন্য মতুয়ারা আন্দোলন করছেন। এখন যে শর্তসাপেক্ষ নাগরিকত্বের কথা কেন্দ্র বলেছে তার বিরুদ্ধে আমরা মুকুটমণির সঙ্গেই আছি।”

জয় মিত্র এ দিন দাবি করেন, যাঁদের কার্যকালের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে, তাঁদেরই বদল করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “নবদ্বীপে সংগঠনের ব্লক সভাপতি বা সম্পাদকের জন্য উপযুক্ত লোক খোঁজা হচ্ছে। আগের সম্পাদক রঞ্জিত মণ্ডলকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।” যদিও রঞ্জিতের পাল্টা দাবি, “উনি নিজে তো মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষই নন। মুকুটমণিই পারবেন মতুয়াদের নিঃশর্ত নাগরিকত্বের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে। আমরা সকলে তাঁর সঙ্গেই আছি। তাতে কে পদে রাখল বা না রাখল, ‌কিছু যায়-আসে না।”

আর, মুকুটমণির বক্তব্য, “ঠাকুরবাড়ির কেউ-কেউ মতুয়া মহাসঙ্ঘকে বিজেপির শাখা সংগঠনে পরিণত করার চেষ্টা করছেন। মতুয়া ধর্মমত সমস্ত রাজনীতির ঊর্ধ্বে। একটি বিশেষ দলের দালালি করা ঠিক নয়। মানুষ এর যোগ্য জবাব দেবে।”

আরও পড়ুন
Advertisement