Lok Sabha Election 2024

‘বিদ্রোহে’ ইতি? অনন্তের বাড়িতে শাহের ‘ডেপুটি’ নিশীথ, ‘মানভঞ্জন’ নিয়ে কী বললেন রাজবংশী নেতা

বিজেপি সূত্রে খবর, বুধবার সন্ধ্যায় অনন্তের সঙ্গে দেখা করেন নিশীথ ও বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায়। সুকুমার জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ মনোনয়ন জমা দেবেন নিশীথ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৪ ২৩:৩৮
Nisith Pramanik met with Ananta Maharaj

(বাঁ দিকে) নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে অনন্ত মহারাজ। —ফাইল চিত্র।

দলীয় সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলেই ক্ষোভ জানিয়েছিলেন প্রকাশ্যেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এক মঞ্চে থাকার পরেও ‘সন্তুষ্ট’ হতে পারেননি তিনি! এ বার মানভঞ্জন করতে রাজবংশী নেতা সেই অনন্ত মহারাজের বাড়িতে গেলেন কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। বিজেপি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় তাঁকে সঙ্গে থাকার ‘অনুরোধ’ করেছেন বিদায়ী সাংসদ তথা অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিশীথ। রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত সেই ডাকে সাড়াও দিয়েছেন। তাতেই প্রশ্ন, তা হলে শেষ পর্যন্ত ‘বিদ্রোহে’ ইতি টানলেন রাজবংশী ওই নেতা?

Advertisement

বিজেপি সূত্রে খবর, বুধবার সন্ধ্যায় অনন্তের সঙ্গে দেখা করেন নিশীথ ও বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায়। সুকুমার জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ মনোনয়ন জমা দেবেন নিশীথ। সেখানে অনন্তকে থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সুকুমার বলেন, ‘‘অনন্ত মহারাজ জানিয়েছেন, উনি মনোনয়নের সময় থাকবেন।’’ অনন্তও একই কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি বিজেপির সাংসদ। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আমাকে থাকতে বলা হয়েছে। দলের নির্দেশ মেনে আমি সেখানে থাকব। এর আগে দল আমাকে গুরুত্ব দেয়নি। তাই আমি ছিলাম না। আজ দল ডেকেছে, তাই যাব।’’

গত ২ মার্চ বিজেপি প্রথম দফার প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করে। তার পরের দিন অনন্ত প্রকাশ্যেই দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কথা জানান। তিনি ওই দিন দাবি করেছিলেন, শাহ তাঁকে ফোনে জানিয়েছেন, কোচবিহার কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হচ্ছে না। সেই বার্তা তিনি সবাইকে জানান। তা থেকে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপির প্রার্থী নির্বাচন নিয়েও তাঁর সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি বলেও অভিযোগ ছিল অনন্তের। সাধারণ মানুষ চাইলে তিনি রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকেও পদত্যাগ করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন। তা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। নিজের বক্তব্য জানিয়ে সেই সময়েই দিল্লিতেও যান মহারাজ। কিন্তু তিনি সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। এরই মাঝে কাওয়াখালিতে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে অনন্তকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি সভায় উপস্থিত ছিলেন। বক্তৃতাও করেন। কিন্তু ‘বিদ্রোহ’ যে তখনও জারি ছিল, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। মোদীর সভার পর অনন্ত বলেছিলেন, “আমি বিজেপির সাংসদ। দলের নির্দেশিকা মেনে চলব। প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য আমন্ত্রণ করা হয়েছিল, আমি ছিলাম। কিন্তু মানুষের হয়ে ভোট তো আমি দিতে পারব না। মানুষ নিজের ভোট নিজেরাই দেবেন, মানুষ কী করবেন তাঁরাই বলতে পারবেন।”

বিজেপির অন্দরের খবর, রাজবংশী সমাজের একটি অংশের মধ্যে অনন্তের প্রভাব রয়েছে। ওই ভোটব্যাঙ্ক নিজেদের দিকে টানতে মহারাজকে রাজ্যসভার সাংসদ করা হয়। সেই সময় অনন্ত বার বার দাবি করেছিলেন, কোচবিহার কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে তাঁকে জানানো হয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে খুশির খবর আসতে পারে বলেও তিনি প্রচার করেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের ‘নতুন বার্তা’ পেয়ে ‘অখুশি’ হন অনন্ত। দলের একাংশের মত, নিশীথের সঙ্গে অনন্ত থাকবেন বলেই যে ‘বিদ্রোহে’ ইতি পড়েছে, এ কথা জোর দিয়ে বলা যাবে না। কারণ, তাঁর দাবিদাওয়া তো এতে মেটেনি। দলে গুরুত্ব পেলেও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি নিয়ে তিনি এখনও ‘অসন্তুষ্ট’ই।

আরও পড়ুন
Advertisement