Lok Sabha Election 2024

বাঁধ তৈরির টাকা নিয়ে মোদী-মমতা চাপানউতোর

সুন্দরবনের মানুষের বড় চিন্তা, নদী ভাঙন। বড় ঘূর্ণিঝড়ে প্রায়ই বাঁধ ভেঙে ঘর-বাড়ি, চাষের জমি প্লাবিত হয়। এমনকী, পূর্ণিমা-অমাবস্যার কটালেও বাঁধ উপচে জল ঢোকে বহু জায়গায়।

Advertisement
সমীরণ দাস 
বারুইপুর শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৪ ০৮:৫৮

নদী ভাঙন রোধে কেন্দ্র টাকা পাঠালেও রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নেয়নি বলে বুধবার অভিযোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে জানিয়ে দিলেন, এক পয়সাও দেয়নি কেন্দ্র।

Advertisement

এ দিন সকালে কাকদ্বীপ স্টেডিয়ামে নির্বাচনী সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। সুন্দরবনের নদী ভাঙন প্রসঙ্গে তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করে সেখানে মোদী বলেন, “নদীর ভাঙন রুখতে আমাদের সরকার টাকা দেয়। কিন্তু তৃণমূল সেই টাকা খেয়ে নেয়। তৃণমূলের একটাই অ্যাজেন্ডা, সব বিষয়ে কাটমানি চাই। গরিবের রেশন থেকে আবাস অথবা মিড ডে মিলেও কাটমানি চায় তৃণমূল।”

মোদীর টাকা পাঠানোর দাবি উড়িয়ে দেন মমতা। দুপুরে বারুইপুরে সভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজ কাকদ্বীপে গিয়ে উনি বলেছেন, উনি নাকি বাঁধের টাকা দিচ্ছেন, তৃণমূল খেয়ে নিচ্ছে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা। বাঁধের জন্য এক টাকাও দেয়নি। এত মিথ্যে বললে দেশ কী শিখবে?”

বাঁধের জন্য রাজ্য সরকার পাঁচ হাজার পাঁচশো কোটি টাকা খরচ করেছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “সুন্দরবনে বাঁধের জন্য আপনি কিছু করেননি। আমরা করেছি। বাঁধের জন্য পাঁচ হাজার পাঁচশো কোটি টাকা খরচ করেছি। আপনি বলুন, আপনি কী করেছেন। বলেছেন যখন, হিসেব আপনাকে দিতে হবে।”

সুন্দরবনের মানুষের বড় চিন্তা, নদী ভাঙন। বড় ঘূর্ণিঝড়ে প্রায়ই বাঁধ ভেঙে ঘর-বাড়ি, চাষের জমি প্লাবিত হয়। এমনকী, পূর্ণিমা-অমাবস্যার কটালেও বাঁধ উপচে জল ঢোকে বহু জায়গায়। সমস্যার সমাধানে কংক্রিটের স্থায়ী বাঁধের দাবি দীর্ঘ দিনের। স্থায়ী বাঁধের দাবিতে বহু আন্দোলন করেছেন সুন্দরবনবাসী।

প্রশাসন সূত্রের খবর, আয়লার পরে বাম শাসনকালে সুন্দরবনে কংক্রিটের নদীবাঁধ তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ৫০৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। কাজও শুরু হয়েছিল অনেক জায়গায়। ২০১১ সালে বামেদের বিদায়ের পরে তৃণমূল এসে বাঁধের কাজ শুরু করেছিল। বহু জায়গায় বাঁধ তৈরির জন্য জমিও অধিগ্রহণ হয়। কিন্তু এক হাজার কোটি টাকার কাজ করার পরে বাকি কাজ করার উদ্যোগ করা হয়নি বলে অভিযোগ। প্রায় চার হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রে ফেরত চলে যায়।

রাজ্যের প্রাক্তন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর বলেন, “তৃণমূল সরকারের উদাসীনতার কারণেই আজও ভুগতে হচ্ছে সুন্দরবনের মানুষকে। অনেক চেষ্টা করে কেন্দ্রের তরফ থেকে টাকা জোগাড় করেছিলাম। কিন্তু কাজটাই করল না এরা! কংক্রিটের বাঁধ যদি তৈরি হত, তা হলে বছর বছর এ ভাবে বাঁধ ভাঙত না।”

কাকদ্বীপে দাঁড়িয়ে এ দিন মোদীর বক্তব্যে একাধিক বার উঠে আসে গঙ্গাসাগর মেলার প্রসঙ্গে। তবে গঙ্গাসাগরকে মেলাকে জাতীয় মেলা না করা নিয়ে এ দিন প্রধানমন্ত্রীকে বেঁধেন মমতা। এই প্রসঙ্গে মুড়িগঙ্গা নদীতে সেতু করার আশ্বাসও ফের দেন তিনি। মমতা বলেন, “আজ পর্যন্ত গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করল না। মুড়িগঙ্গায় সেতু করার জন্য কত বার বলেছি, কিন্তু করেনি। আমি তিন বছরের মধ্যে সেতু করে দেব।”

—তথ্য সহায়তা: সমরেশ মণ্ডল

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement