Lok Sabha Election 2024

মমতার পদযাত্রার জেরে বিটি রোড ‘অবরুদ্ধ’ প্রায় তিন ঘণ্টা, দুর্ভোগ

এ দিন দুপুর ২টোর পর থেকে ব্যারাকপুর-কলকাতা সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বিটি রোডের দু’দিকেই গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বেলঘরিয়া ও বরাহনগরের যে সমস্ত অলিগলি ওই রাস্তায় এসে মিশেছে, সেগুলিও বন্ধ রাখা হয়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৪ ০৮:০৯
রুদ্ধ পথ: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রার জেরে বন্ধ বিটি রোড। যার ফলে ভোগান্তির মধ্যে পড়েন বহু মানুষ। বৃহস্পতিবার।

রুদ্ধ পথ: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রার জেরে বন্ধ বিটি রোড। যার ফলে ভোগান্তির মধ্যে পড়েন বহু মানুষ। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

‘স্তব্ধ’ বিটি রোডের পথ-বিভাজিকা টপকে রাস্তায় নেমে পড়ার চেষ্টায় আবালবৃদ্ধবনিতা। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীদের বাধায় তা সম্ভব না হলেও কলকাতামুখী রাস্তায় এগিয়ে চলা মিছিল থেকে মাঝেমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই চলে যাচ্ছিলেন ভিড় করে থাকা লোকজনের দিকে। বৃহস্পতিবার দমদম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় ও বরাহনগর বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে আয়োজন হয়েছিল এই পদযাত্রার। যার জেরে গোটা বিটি রোড প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ হয়ে রইল।

Advertisement

এ দিন দুপুর ২টোর পর থেকে ব্যারাকপুর-কলকাতা সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বিটি রোডের দু’দিকেই গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বেলঘরিয়া ও বরাহনগরের যে সমস্ত অলিগলি ওই রাস্তায় এসে মিশেছে, সেগুলিও বন্ধ রাখা হয়। শুধুমাত্র শ্যামবাজার থেকে ব্যারাকপুরমুখী রাস্তা দিয়ে যাতায়াতে ছাড় পেয়েছে অ্যাম্বুল্যান্স। প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে পদযাত্রার জেরে ব্যস্ততম বিটি রোডের দু’দিকেই যান চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে অসংখ্য সাধারণ মানুষকে। যদিও বরাহনগরের তৃণমূল নেতাদের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর জন্য জনজোয়ার নেমেছিল রাস্তায়। তার মধ্যে দিয়ে তো গাড়ি চলতে পারে না।’’ সেই সঙ্গেই তাঁদের দাবি, তিন বারের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের দল বদল যে কোনও প্রভাবই ফেলেনি, তারও প্রমাণ মিলল। তাপস এ বার লোকসভা ভোটে উত্তর কলকাতা থেকে পদ্ম শিবিরের হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

এ দিন দুপুর ৩টে নাগাদ কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন মাঠে হেলিকপ্টারে এসে নামেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরে গাড়িতে চেপে তিনি যান কামারহাটি পুরসভার সামনে রথতলা মোড়ে। সেখান থেকে ৩টে ২০ নাগাদ শুরু করেন পদযাত্রা। রথতলা মোড়ে কর্মী-সমর্থক থেকে সাধারণ মানুষের ভিড় থাকলেও কিছুটা যাওয়ার পরেই যেন তাল কেটেছিল। কারণ, ডানলপ মোড়ের আগে পর্যন্ত রাস্তার ধারে তেমন ভাবে লোকজনের ভিড় চোখে পড়েনি। তবে, বরাহনগর মেট্রো স্টেশনের সামনে থেকে সিঁথির মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেছিলেন। যাঁদের অনেকের হাতেই ছিল লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্ল্যাকার্ড।

এ দিন পদযাত্রার শুরুর দিকে সৌগত হাঁটলেও কিছুটা যাওয়ার পরে তিনি পিছনের হুডখোলা জিপে উঠে যান। শারীরিক অসুস্থতার জন্য অবশ্য হাঁটেননি মদন মিত্র। তবে, পুরো রাস্তা দলনেত্রীর পাশে হেঁটেছেন সায়ন্তিকা। হাঁটার ফাঁকেই এক সময়ে পাশে থাকা বরাহনগরের উপ-পুরপ্রধান দিলীপনারায়ণ বসু, চেয়ারম্যান পারিষদ অঞ্জন পাল ও পুরপ্রধান অপর্ণা মৌলিককে ডেকে কথা বলতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। জানা যাচ্ছে, দলনেত্রী তাঁদের বলেন, ‘‘কোনও কিছুতেই ভয় পাবে না। আমি আছি। ২০২১-এর থেকেও বেশি ভোটে বরাহনগরে জিততে হবে।’’ আবার পদযাত্রা শেষে গাড়িতে ওঠার সময়ে কামারহাটির
পুরপ্রধান গোপাল সাহাকে ডেকে আলাদা করে কথা বলেন মমতা। সব কিছু ঠিক মতো দেখে নেওয়ার জন্য তাঁকে দলনেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর।

মমতা এ দিন হাঁটার মধ্যেই কখনও ডানলপ মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা শিখ সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন, কখনও কোলে তুলে নিয়েছেন কোনও শিশুকে, কখনও আবার স্কুলপড়ুয়া বালিকার হাতে তুলে দিয়েছেন ফুল। বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ সিঁথির মোড়ে পৌঁছে সায়ন্তিকার সঙ্গে আদিবাসী নৃত্যে অংশ নেন মমতা। পরে বরাহনগর ও উত্তর কলকাতার সীমানায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব।’’

আরও পড়ুন
Advertisement