Lok Sabha Election 2024

মন্তেশ্বরে দিলীপের পোলিং এজেন্টের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, বিজেপি বলছে খুন, বাবা বলছেন অন্য কথা!

বুধবার রাত থেকে নিখোঁজ থাকার পর বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি লাগোয়া একটি জায়গা থেকে বিজেপির পোলিং এজেন্টের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। বিজেপির দাবি, তৃণমূলই খুন করে অভিজিৎকে ঝুলিয়ে দিয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ১১:১৪
File image of Manteshwar PS

মন্তেশ্বর থানা। — ফাইল চিত্র।

বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেই ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল তাদের বুথ সভাপতিকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। প্রতিবাদে থানা ঘেরাও কর্মসূচি। অন্য দিকে, এলাকায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় মৃতের বাবার দাবি, খুন নয়, স্ত্রীর সঙ্গে গোলমালের জেরে আত্মহত্যা করেছেন অভিজিৎ। যদিও ওই ভিডিয়োর উৎস এবং সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের সেলিয়া গ্রামের বাসিন্দা অভিজিৎ রায়। তিনি ওই ব্লকে বিজেপির বুথ সভাপতি। গত ১৩ মে বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের হয়ে পোলিং এজেন্টের দায়িত্বও পালন করেছিলেন। সেই অভিজিতের এমন মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। প্রতিবাদে পথে নেমেছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। তাদের দাবি, তৃণমূলই অভিজিৎকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে।

জানা গিয়েছে, মন্তেশ্বরের জামনা অঞ্চলের ১৬৮ নম্বর বুথের বিজেপির সভাপতি অভিজিৎ বুধবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোরে বাড়ি লাগোয়া খামারবাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় অভিজিতের দেহ দেখতে পান গ্রামবাসীরা। ভোটের পরেই বিজেপির বুথ এজেন্টের এ রকম অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মন্তেশ্বরে।

বিজেপির অভিযোগ, অভিজিৎকে খুন করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তার পর দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের দাবি, এমন কোনও কারণ নেই, যে জন্য অভিজিৎ নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন। মন্তেশ্বর থানার পুলিশ অভিজিতের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা মন্তেশ্বর থানার সামনে হাজির হয়েছেন। কর্মসূচি রয়েছে থানা ঘেরাও করার। ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে পরিস্থিতি।

স্থানীয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের দাবি,

এমন কোনও কারণ নেই, যে জন্য অভিজিৎ নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন।

স্থানীয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের দাবি,

এমন কোনও কারণ নেই, যে জন্য অভিজিৎ নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন।

যদিও এলাকায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় নিজেকে অভিজিতের বাবা বলে দাবি করা এক ব্যক্তি বলছেন, পারিবারিক অশান্তির কারণেই ছেলে চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই ভিডিয়োর সত্যতা এবং উৎস যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। সেই ভিডিয়োয় অভিজিতের বাবা হিসাবে দাবি করা অরুণ রায় বলছেন, ‘‘ও নিজে থেকে সুইসাইড (আত্মহত্যা) করেছে। বৌমার সঙ্গে অশান্তি করত মাঝেমাঝে, মদ খেত, নেশা-ভাং করত। সংসার না চললেই বৌমার সঙ্গে অশান্তি হত।’’ ওই ভিডিয়োয় অরুণ আরও দাবি করেছেন যে, এর আগেও অভিজিৎ কয়েক বার আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। অরুণ বলেন, ‘‘এর আগেও এ রকম দু’চার বার করেছিল। বেরিয়ে চলে গেল...। কোনও সময় আমগাছে গিয়ে গলায় দড়ি দিচ্ছে। গ্রামের ছেলেরা দেখতে পেয়ে ছুটে যায়।’’

বিজেপি অবশ্য এখনও খুনের দাবিতেই অনড়। বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। রাজনীতি নয়, অভিজিতের মৃত্যুর নেপথ্যে আছে পারিবারিক সমস্যা, বলেই দাবি রাজ্যের শাসকদলের। রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে দেখুক। প্রশাসন এখন কমিশনের আওতায় রয়েছে। এই মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করার কোনও জায়গা নেই। আইন আইনের পথে চলুক।’’

পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘‘পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement