Lok Sabha Election 2024

জগন্নাথকে নিয়ে ক্ষুব্ধ মুকুট কি তৃণমূলের পথে?

নরেন্দ্র মোদীর কৃষ্ণনগর সফরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রথম দফায় রাজ্যের ২০ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে বিজেপি। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জগন্নাথ তাঁদের অন্যতম।

Advertisement
দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৪ ০৬:৩৩
মুকুটমনি অধিকারী, নদিয়ার রানাঘাট।  ছবি: প্রণব দেবনাথ ফাইল।

মুকুটমনি অধিকারী, নদিয়ার রানাঘাট। ছবি: প্রণব দেবনাথ ফাইল। নিজস্ব চিত্র।

গত লোকসভা নির্বাচনে তিনিই ছিলেন রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে বিজেপির প্রথম পছন্দ। রাজ্য সরকারি হাসপাতালের কাজ থেকে তিনি ছাড়া না পাওয়ায় শেষ মুহূর্তে শিকে ছেঁড়ে জগন্নাথ সরকারের।

Advertisement

এ বার কিন্তু সেই মুকুটমণি অধিকারীর নাম বিবেচনাতেই রাখেনি তাঁর দল, প্রথম দফাতেই রানাঘাটে ফের প্রার্থী করা হয়েছে জগন্নাথকে। আর তাতেই ক্ষোভে ফুঁসছেন রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মুকুট। সেই ক্ষোভ এতটাই যে তিনি যদি অন্য পথে পা বাড়ান, তাঁর নিকটজনেরা অন্তত বিস্মিত হবেন না। বরং অন্য কোনও দল তাঁর ক্ষো‌ভকে কাজে লাগাতে পারে বলেও রাজনৈতিক মহলের ধারণা।

গত ২ মার্চ নরেন্দ্র মোদীর কৃষ্ণনগর সফরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রথম দফায় রাজ্যের ২০ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে বিজেপি। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জগন্নাথ তাঁদের অন্যতম। বুধবার মুকুটমণি দাবি করেন, “রানাঘাট কেন্দ্রে বিজেপি যোগ্য লোককে প্রার্থী করেনি। হার নিশ্চিত।” যা শুনে জগন্নাথ পাল্টা বলেন, “আমাদের দল কাজ দেখে প্রার্থী করে। গত পঞ্চায়েত ভোটে আমার এলাকা থেকেই একমাত্র পঞ্চায়েত সমিতি দখলে এসেছে। কার কী যোগ্যতা তা ভোটেই বোঝা যাবে।”

মতুয়া-নমঃশূদ্র অধ্যুষিত দক্ষিণ নদিয়ায় তরুণ ও শিক্ষিত মতুয়া-মুখ হিসাবে এক সময়ে মুকুটকে তুলে এনেছিল বিজেপি। যদিও পরে নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ে, একাধিক বিতর্কেও তিনি জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু উল্টো দিকে জগন্নাথও যে প্রার্থী হিসাবে দলের সব মহলে স্বাগত, তা-ও নয়। বরং প্রার্থী ঘো‌ষণা হওয়ার সামান্য আগে পর্যন্তও তাঁর ভবিতব্য নিয়ে দলে জোরালো জল্পনা ছিল। নদিয়া দক্ষিণের বেশ কিছু যুব পদাধিকারী মুকুটকে প্রার্থী হিসাবে চেয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্টও করেছিলেন।

সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁকে প্রার্থী করা হল না? মুকুটমণির জবাব, “কেন আমায় প্রার্থী করা হল না সেটা বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্ব এবং সঙ্ঘের (আরএসএস) ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা বলতে পারবেন।” বর্তমানে নিজেকে তিনি দলীয় কার্যকলাপ থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন বলেও সূত্রের দাবি।

এই পরিস্থিতিতে মুকুটের পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে বাতাসে নানা সম্ভাব্য খবর উড়ছে। তার একটা হল, কঠিন ঠাঁই রানাঘাটে মতুয়া-মন জিততে তাঁকেই প্রার্থী করতে চাইছে তৃণমুল। দলের একাংশের দাবি, মুকুটকে প্রার্থী করা হলে বিজেপির হাত থেকে রানাঘাট কেন্দ্র পুনরুদ্ধার সহজ হবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসের তরফে নাকি মুকুটের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েও গিয়েছে। সরাসরি বিষয়টি উড়িয়ে না দিয়ে মুকুট বলেন, “এই বিষয়ে এখনও তো কোনও ঘোষণা হয়নি। আমরা চাই, নদিয়াবাসী শান্তি পাক। তবে ঘোষণার আগে কিছুই বলা যায় না।”

তবে কি মুকুট সত্যিই শিবির বদলাচ্ছেন?

বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমার কাছে এমন কোনও খবর নেই। ওর কিছু অভিমান আছে কিন্তু সিদ্ধান্ত কিছু নেয়নি।” তাঁর দাবি, “তৃণমূল তো ইতিমধ্যে প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছে। দলীয় ভাবে ঘোষণা না হলেও চিকিৎসক অতীন্দ্র মণ্ডল কাজ শুরু করে দিয়েছেন।” যদিও তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “আমার কাছে এই সব বিষয়ে সামান্যতম খবর নেই।”

আরও পড়ুন
Advertisement