প্রতীকী ছবি।
এ বার থেকে পড়ুয়াদের মোবাইলের টাকা পেতে একাদশ শ্রেণিতেই ব্যাঙ্কের প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া পূরণ করা প্রয়োজন। বিজ্ঞপ্তি জারি করে এমনটাই জানিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর।
করোনাকাল থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পড়ুয়াদের থোক ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী এই টাকা মূলত পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাসে সুবিধার জন্য মোবাইল কেনার টাকা হিসাবে দেওয়া হয়ে থাকে। সরাসরি পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয় এই টাকা। তবে, এতদিন পড়ুয়াদের দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরই ব্যাঙ্কের প্রক্রিয়া পূরণ করতে হত মুঠোফোনের টাকা পেতে। সে ক্ষেত্রে বহু পড়ুয়াই সঠিক ভাবে অ্যাকাউন্টের সব তথ্য পূরণ করত না। তার ফলে সরকারি তহবিলের টাকা বহু পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টেই ঢুকতো না। সেই কারণেই চলতি বছর থেকে একাদশ শ্রেণিতেই পড়ুয়াদের ব্যাঙ্কের কার্যপ্রক্রিয়া পূরণ করার নির্দেশ দিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। যাতে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর সব পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টেই টাকা পৌছয়।
স্কুল শিক্ষা দফতরের এমন সিদ্ধান্তে নারাজ শিক্ষা মহলের একাংশ। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীর সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘মুঠোফোনের কারণে পড়াশোনার চাইতে ফোনের উপর আসক্ত বাড়ছে পড়ুয়াদের। যে সমস্ত শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে অনুত্তীর্ণ হবেন, তাঁদের কী হবে? তাঁরা দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ না হয়েই কি টাকা পাবেন?’’
পাশাপাশি একাংশ শিক্ষকের মতে, আগে এই টাকা দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বছরের মাঝামাঝি সময় পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছত। কিন্তু এই নয়া নিয়মের ফলে, দ্বাদশ শ্রেণির শুরুতেই শিক্ষার্থীদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে। এখানেই শিক্ষক মহলের আশঙ্কা, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে শহরতলি এবং মফস্সলের বিভিন্ন স্কুল পড়ুয়া এই মুঠোফোন কেনার আশায় দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। কিন্তু এই টাকা যদি শুরুতেই দিয়ে দেওয়া হয় তা হলে স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়তে পারে।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য এই বিষয়ে বলেন, ‘‘একাদশ শ্রেণিতে যারা অনুত্তীর্ণ তাঁদের বিষয়েও নজর দেওয়া প্রয়োজন সরকারের। যাতে অনুত্তীর্ণ হয়েও উত্তীর্ণের মতো তার অ্যাকাউন্টে টাকা নাঢুকে যায়।’’
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী যারা এই সরকারি টাকা ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছে, তাঁদের মুঠোফোন কেনার প্রয়োজনীয় নথি স্কুলের সাহায্যে সরকারি পোর্টালে আপলোড করতে হবে ১১ জানুয়ারি বিকেলের মধ্যে।