বিকাশ ভবন। ছবি: সংগৃহীত।
‘আর্ট অ্যান্ড ওয়ার্ক এডুকেশন’-কে এবার পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করতে চলেছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরে বিষয়টি পড়ানো হলেও নিদিষ্ট কোন বই বা পাঠ্যক্রম না থাকায় স্কুল গুলির সঙ্গে শিক্ষা দফতরের সামঞ্জস্যের অভাব হচ্ছিল তার ফলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দফতরের তরফ থেকে।
৯০-এর দশক পর্যন্ত মাধ্যমিকে কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষা বিষয়টি বাধ্যতামূলক ছিল। ৯০ দশকের শেষ লগ্নে মাধ্যমিক স্তরে এই দু’টি বিষয়কে ঐচ্ছিক বিষয় হিসাবে পড়ানো শুরু হয় এবং কোনও পরীক্ষার্থী এই বিষয় নিয়ে পরীক্ষা দিলে মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৩৪ নম্বর বাদ দিয়ে বাকি নম্বর যুক্ত করা হত।
২০১১ সালের পর পাঠ্যক্রমের আধুনিকরণ করা হয় এবং তার পরেই কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষা এই দু’টি বিষয় মাধ্যমিক স্তরে পড়ানো বন্ধ করে দেয় স্কুল শিক্ষা দফতর। তবে প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরে এটি বাধ্যতামূলক বিষয় হিসেবে এখনও পর্যন্ত পড়ানো হয়ে থাকে। পাঠ্যক্রমের আধুনিকরণের সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক নামকরণের পরিবর্তন আনা হয়, শারীরশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করা হয় ‘স্বাস্থ্য’। এবং নামকরণ করা হয় স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষা। একই ভাবে ‘আর্ট এডুকেশন’ এর উপর জোর দেওয়া হয়। যার নামকরণ করা হয় ‘আর্ট এবং ওয়ার্ক এডুকেশন’।
স্কুলশিক্ষা দফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কমিশনারের তরফ থেকে আমাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এই বিষয়ের উপর পাঠ্যক্রম এবং বই কী ভাবে তৈরি করা যায় তার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। কমিটি দ্রুত এই বিষয়ের রূপরেখা তৈরি করে প্রাইমারি বোর্ড এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে জমা দেবে।”
‘আর্ট এবং ওয়ার্ক এডুকেশন’ নামকরণ করা হলেও এই সংক্রান্ত কোনও বই বা পাঠ্যক্রম তৈরি করা হয়নি স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে। বাজার চলতি বিভিন্ন বই থেকে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের ক্লাস করানো হত স্কুলগুলির তরফ থেকে।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থ প্রতিম বৈদ্য বলেন, “পড়ুয়াদের মধ্যে সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য রাজ্য জুড়ে সুসংবদ্ধ পাঠ্যক্রমের প্রয়োজন শিক্ষাক্ষেত্রে। আমরা স্বাগত জানাচ্ছি সরকারের এই পদক্ষেপকে।”
স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, একাধিক স্কুল ও বিভিন্ন সংগঠনের তরফ থেকে অভিযোগ এসেছিল বই বা সুনির্দিষ্ট কোন পাঠ্যক্রম না থাকায় রাজ্যের সমস্ত স্কুলে এই বিষয়ের উপর সমান ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সুনির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম না থাকায় পড়ুয়া ও অভিভাবকদের মধ্যে এই বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। স্কুলশিক্ষা দফতর স্কুলগুলির মধ্যে সামঞ্জস্য রাখার জন্যই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।