করোনার কারণে রেল চলাচলের স্বাভাবিক ছন্দ দীর্ঘ দিন ব্যাহত হয়েছে। নানা দিক বিচার-বিবেচনা করে অনেক দিন ধরে স্পেশাল, স্টাফ স্পেশাল— এই ভাবে বিভিন্ন ট্রেন চালানো হয়। তাতে সাধারণ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। যাত্রীদের দাবি ও করোনা-পরিস্থিতি পর্যালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আস্তে আস্তে ট্রেন চলাচলের স্বাভাবিকতা ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বিভিন্ন ট্রেন বিষয়ে এবং গন্তব্যে পৌঁছনোর সময় জানার জন্য অনেক দিন ধরে রেলের টাইম টেবিল ছাপার ব্যবস্থা আছে। শহরতলি ও শহরতলির বাইরে বিভিন্ন ট্রেনের জন্য আলাদা আলাদা টাইম টেবিল বই পাওয়া যেত। ২০১৯-এর জুলাই মাসে সর্বশেষ টাইম টেবিল ছাপা হয়। এর পর করোনায় সব কিছু ওলটপালট হয়ে যায়।
কিন্তু ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টাইম টেবিলেরও প্রয়োজনীয়তা বাড়বে। শোনা যাচ্ছে, ট্রেন পরিষেবার বিষয়ে জানার ক্ষেত্রে অনলাইনের গুরুত্ব বাড়ায় টাইম টেবিল আর ছাপা হবে না। তাতে অনেককেই অসুবিধায় পড়তে হবে। এখনও বিপুল সংখ্যক মানুষ অনলাইনে তেমন পোক্ত নন। তা ছাড়া, অনেক সময় নেট সমস্যার কারণেও ট্রেন পরিষেবা সম্পর্কে জানতে অসুবিধে হয়। কিন্তু বাড়িতে একটা ছাপা বই থাকলে এই ধরনের মুশকিলে পড়তে হয় না। তাই আবার টাইম টেবিল ছাপার ব্যবস্থা করা হলে রেলযাত্রীদের উপকারই হবে।
অমল চন্দ্র চৌধুরী
ক্ষীরগ্রাম, পূর্ব বর্ধমান
বইমেলা
প্রকাশক এবং বইপ্রেমীদের উচ্ছ্বাস স্বাভাবিক। কারণ, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ৩১ জানুয়ারি থেকে বইমেলা শুরু হওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন (‘বইমেলা ঘিরে নানা প্রশ্নের জট...’, ১২-১১)। করোনা বাঙালির উৎসব-হুজুগে অন্য অনেক অনুষঙ্গের মতো বইমেলাতেও থাবা বসিয়েছিল। এখন সরকারি ঘোষণায় স্বস্তিতে প্রকাশক মহল। কারণ, অতিমারিতে অফলাইন বই বিকিকিনি তলানিতে এসে ঠেকেছিল। এখন বইমেলা-আয়োজকদের ভাবাচ্ছে, যাবতীয়-ব্যবস্থাবিধিকে মান্যতা দিয়ে, বিধিনিষেধের বেড়াজালে বইমেলা সম্পন্ন হবে, না কি আগের মতো জৌলুসে, বৈভবে বইমেলা স্বমহিমায় ফিরবে?
সেই চিরচেনা বইমেলা-কেন্দ্রিক ছবিটা আমাদের মানসপটে স্থায়ী আসন করে নিয়েছে। কী রকম? বইমেলার ফটক উন্মুক্ত হওয়া ইস্তক ঝাঁকে-ঝাঁকে দর্শকের প্রবেশ। হ্যাঁ, দর্শকই বটে! ক্রেতা কম, অথচ জমজমাট ভিড়। দলে দলে ‘নেই-কাজি’দের আনাগোনা বাড়তে থাকে বেলা গড়িয়ে সন্ধে নামার মুখে। বইমেলা একটা মিলনমেলাই বটে! ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া। সারি সারি খাবারের দোকান। জুতসই বসার জায়গা। মাইকে রবি ঠাকুর বা নজরুল। মাঝে মাঝেই ঘোষণা। একটা মনের মতো জায়গা পছন্দ করতে পারলেই কেল্লা ফতে। হিসাব কষিয়েরাই ভাল বলতে পারবেন, আগত মানুষের মধ্যে বইপ্রেমী ক’জন? যথার্থ ক্রেতার সংখ্যা কত? কত বই প্রকাশিত হল? দূর-দূরান্ত থেকে বয়ে আনা লিটল ম্যাগাজ়িনের সম্পাদকদের বইমেলা-সংখ্যা কী রকম বিক্রি হল ইত্যাদি।
প্রতি বারের মতো এ বারের বইমেলার চরিত্র এক হবে না, জানা কথা। কয়েকটি আবেদন রইল কর্তৃপক্ষের কাছে। ১)গণ-প্রবেশাধিকার আটকাতে কমপক্ষে ১০ টাকা ধার্য হোক প্রবেশমূল্য। এতে অকারণ-ভিড় কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হবে ২) গণহারে জলের পাউচ বিলি বন্ধ হোক। কারণ, করোনাকালে মানুষের মধ্যে স্যানিটাইজ়ার, মাস্কের মতো জলের বোতল ব্যাগে বহন করবার প্রবণতা চালু হয়েছে। আগে এমনও দৃশ্য দেখা গিয়েছে, বিনা পয়সার লভ্য একাধিক পাউচ ব্যাগে সুরক্ষিত হচ্ছে অথবা ছুড়ে ফেলে নষ্ট করা হচ্ছে। তাই পাউচ বিলি না করলে খরচও খানিক কমবে বলেই ধারণা; ৩) খাবারের স্টলের সংখ্যা কমানো হোক। বইমেলায় কেনাকাটার কারণে বা বন্ধুবাজি করার জন্য চা-ই যথেষ্ট। খিদে পেলে কী করবেন দীর্ঘক্ষণ-অধিষ্ঠানকারীরা? না, এর কোনও সদুত্তর জানা নেই। এ নিয়ে আরও ভাবুন মেলা-আয়োজকরা। ৪) শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা অবশ্যই করতে হবে। প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নেওয়ার প্রমাণপত্র বহন করার আদেশনামাও জারি হোক।
দূরত্ববিধি বইমেলায় মানা অসম্ভব। দূর থেকে প্রতিমা দর্শন আর স্টলের বাইরে থেকে বই পছন্দ করা এক বিষয় নয়। তা হলে ২০-২৫ জনকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্টলের ভিতরে প্রবেশ করতে দিতে হবে। এতে সময় নষ্ট কম হবে। এই ব্যবস্থায় পড়ুয়া ক্রেতাদের অসুবিধা হবে না। কারণ, তাঁরা নির্দিষ্ট প্রকাশকের স্টলে গিয়ে চাহিদামতো বই বা বইগুলো দিতে বলতে পারবেন। কিন্তু, যাঁরা বইও কিনবেন না, অযথা ভিড় করবেন নামী প্রকাশকদের স্টলে, তাঁদের নিয়ে মুশকিল হবেই। লিটল ম্যাগাজ়িনের স্টলগুলোকে আরও বেশি জায়গা দিতেই হবে, যাতে তাদের অবস্থান ‘গা ঘেঁষাঘেঁষি’ করে না হয়।
আগামী বইমেলার থিম-কান্ট্রি বাংলাদেশ। স্বভাবতই, আলোচনা কক্ষে প্রতিবেশী দেশের প্রথিতযশা সাহিত্যিকদের কথা শুনতে জনসমাগম বেশি হবেই। এই সভাগৃহেও যথার্থ শ্রোতার থেকে উটকো হাজিরা দেওয়া লোকজন শ্রবণেন্দ্রিয়ের ব্যাঘাত ঘটান। তাঁদের স্রেফ সময় কাটাতেই বইমেলায় আসা। যতই বইমেলা হোক, এ কথা সত্যি যে যথার্থ বইপ্রেমীরা বইমেলার জন্য অপেক্ষা করেন না। প্রয়োজনীয় বইটি তাঁরা কলেজ স্ট্রিটে গিয়ে কেনেন বা অর্ডার দিয়ে আনিয়ে নেন।
ধ্রুবজ্যোতি বাগচি
কলকাতা-১২৫
খুচরো সমস্যা
অনেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে টিকিটের মূল্য ২ টাকা, ৫ টাকা। ফলে খুচরো সমস্যায় পড়তে হয় কাউন্টারে বসা কর্মীকে। এ নিয়ে নিত্য বচসা। বর্তমান বাজারে সিকি, আধুলি কবেই উধাও হয়েছে। এক কাপ চায়ের দাম ন্যূনতম ৫ টাকা। দুর্মূল্যের বাজারে ২ টাকার ব্যবহার সীমিত হয়ে আসছে। নদী পারাপারের জন্যও কমপক্ষে ৫ টাকা দিতে হয়। শুধুমাত্র হাসপাতালের আউটডোর ২ টাকার টিকিট। জঙ্গিপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল-সহ অনেক হাসপাতালের আউটডোরে টিকিটের মূল্য এটাই। দরকারে বিনা পয়সায় বর্হিবিভাগ চালু হোক। নয়তো খুচরো পয়সার সমস্যা সমাধানের জন্য ন্যূনতম টিকিট ১০ টাকা করা হোক।
শান্তনু সিংহ রায়
জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ
নামহীন
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া আমতা শাখার প্রান্তিক স্টেশন আমতা। স্টেশনের প্রবেশ পথে লোহার বড় ফটকে বাংলা, ইংরেজি আর হিন্দি— তিন ভাষায় লেখা ছিল ‘আমতা’ স্টেশনের নাম। একে একে সব ভাষার নাম উধাও। আজ কেবল দাঁড়িয়ে আছে লোহার কঙ্কাল। এ ভাবেই পড়ে আছে গত ৮-১০ বছর ধরে। আমতার প্রধান রাস্তা থেকে স্টেশনের দূরত্ব প্রায় ১ কিলোমিটার। স্টেশনের নাম না থাকায় অপরিচিত ব্যক্তিদের ‘আমতা’ স্টেশন খুঁজতে বেশ বেগ পেতে হয়। শোনা যায়, আমতা নাকি ‘মডেল’ স্টেশন। মডেল স্টেশনের এই হাল?
দীপংকর মান্না
চাকপোতা, হাওড়া
ভিড় কমুক
লোকাল ও অন্যান্য ট্রেন চালু হতেই হাওড়া স্টেশনের অপরিচ্ছন্ন ভাবটা ফিরে এসেছে। প্ল্যাটফর্মের মুখ থেকে গোটা স্টেশন চত্বরের সর্বত্র চাদর, প্লাস্টিক বিছিয়ে এক শ্রেণির অপেক্ষমাণ যাত্রীর ভিড়। কারও মুখে মাস্ক নেই। একই সঙ্গে বেড়েছে ভবঘুরেদের আনাগোনা। কোভিড বিধির ঘোষণাই সার। নিত্যযাত্রী ও অন্য যাত্রীদের অসুবিধা হচ্ছে। অবিলম্বে রেল পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা করুক। অকারণ ভিড় কমুক।
অরিত্র মুখোপাধ্যায়
চাতরা, শ্রীরামপুর