Congress

দিল্লি ডায়েরি: রাজ্যসভায় জেবি মাথার, তুষ্ট সকলেই

জেবি মহিলা, তার উপর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। তবে তাঁকে বেছে নেওয়ার আসল কারণ, কংগ্রেসের নেতাদের মধ্যে রাজ্যসভার আসন নিয়ে চুলোচুলি আটকানো।

Advertisement
প্রেমাংশু চৌধুরী, অগ্নি রায় এবং অনমিত্র সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২২ ০৭:৩৩
নবীন: রাজ্যসভায় নির্বাচিত জেবি মাথার

নবীন: রাজ্যসভায় নির্বাচিত জেবি মাথার

তাঁর পিতামহ ছিলেন কেরলের প্রদেশ কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ। আর মাতামহ ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি। বাবা প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। ভাই ছিলেন কেরলে কংগ্রেস সরকার থাকার সময় মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা। এ-হেন পরিবারের মেয়ে জেবি মাথার যে কংগ্রেসের রাজনীতিতেই আসবেন, তাতে আর আশ্চর্যের কী! রাহুল গান্ধী যখন যুব কংগ্রেসে নতুন মুখ তুলে আনার চেষ্টা করছেন, তখনই উঠে এসেছিলেন জেবি। তার পরে কেরলে নিজের শহর আলুভায় পুরভোটে লড়ে প্রথমে কাউন্সিলর হলেন। পরে পুরসভার ভাইস-চেয়ারপার্সনের পদে বসলেন। তার সঙ্গে কেরলের মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রীও তিনি। সেই জেবিই এ বার কেরল থেকে রাজ্যসভায় এলেন। তা-ও একেবারে মনমোহন সিংহ সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, প্রবীণ নেতা এ কে অ্যান্টনির ছেড়ে যাওয়া আসনে। জেবি মহিলা, তার উপর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। তবে তাঁকে বেছে নেওয়ার আসল কারণ, কংগ্রেসের নেতাদের মধ্যে রাজ্যসভার আসন নিয়ে চুলোচুলি আটকানো। কেউই কাউকে সূচ্যগ্র মেদিনী ছাড়তে রাজি নন। তবে জেবি-কে কিন্তু সকলেই হাসিমুখে মেনে নিয়েছেন। ফলে, হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে কংগ্রেস হাই কমান্ড।

শ্রীলঙ্কার পাশে

Advertisement

কলম্বোর সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের যেন আত্মিক যোগ! নিজের কূটনৈতিক জীবনের একেবারে গোড়ার দিকে, অর্থাৎ ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় হাই কমিশনের জুনিয়র অফিসার। ভারতীয় শান্তিবাহিনীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসাবেও কাজ করেছেন এক সময়। এ বারে বিমস্টেক বৈঠকে যোগ দিতে কলম্বো গিয়ে জয়শঙ্কর খবরে পড়েন, স্থানীয় একটি হাসপাতালে সাধারণ অস্ত্রোপচার করা যাচ্ছে না, ওষুধের অভাবে। সেখানে শুধুমাত্র জরুরি অস্ত্রোপচারগুলিই করা হচ্ছে। খবরটি পড়ে বিচলিত হন বিদেশমন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে তিনি হাই কমিশনার গোপাল ওয়াগলে-কে নির্দেশ দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে, ভারত এ ক্ষেত্রে কী ভাবে সহায়তা করতে পারে। অবিলম্বে মন্ত্রীর নির্দেশ পালন করেছেন ওয়াগলে।

যোগাযোগ বিভ্রাট

ঠিক হয়েছিল, পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়কের কুকথার নালিশ জানাতে ২৯ মার্চ দল বেঁধে নির্বাচন কমিশনের কাছে যাবেন বিজেপি সাংসদেরা। কার্যক্ষেত্রে উপস্থিত রইলেন মাত্র ন’জন সাংসদ। দিল্লিতে থেকেও অনুপস্থিত ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। আসলে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দিল্লিতে উপস্থিত সমস্ত দলীয় সাংসদকে ফোন করে কমিশনের সামনে আসার বিষয়টি জানানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন আর এক সাংসদ খগেন মুর্মুকে। তিনি আর লকেটকে ফোন করে উঠতে পারেননি। পরে খোঁজ নিয়ে লকেট জানতে পারেন, খগেনের কাছে তাঁর মোবাইল নম্বর নেই, তাই কোনও ফোন আসেনি তাঁর কাছে। সব দেখে বিজেপির আর এক সাংসদের কথায়, “এই তো অবস্থা। এক সাংসদের কাছে অন্য সাংসদদের নম্বর নেই। তালমিল হবে কী করে?”

অন্য রূপে

নৃত্যশিল্পী হিসাবেই সোনাল মানসিংহকে চেনে গোটা দেশ। কিন্তু উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুর প্রশস্ত লনে বৃহস্পতিবার উপস্থিত শ্রোতারা সম্মোহিত হয়ে তাঁর কণ্ঠে মীরার ভজন শুনলেন। পাখোয়াজের সঙ্গে তিনি গাইলেন, ‘ম্যাঁয়নে চাকর রাখো জি।’ গাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতের কিছু মুদ্রাও তিনি উপহার দিলেন দর্শকদের। সোনাল মানসিংহ রাষ্ট্রপতি মনোনীত রাজ্যসভার সাংসদও বটে। বিদায়ী সাংসদদের ওই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে আসর মাত করেছেন এ রাজ্যের রূপা গঙ্গোপাধ্যায় (‘কার মিলন চাও বিরহী’) এবং দোলা সেন (‘বিধির বাঁধন কাটবে তুমি’)। গোটা অনুষ্ঠানটি সফল ভাবে পরিচালনা করার জন্য পরের দিনই বেঙ্কাইয়ার ধন্যবাদজ্ঞাপক ফোন পেয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়। মধুরেণ সমাপয়েৎ হয়েছে রাতের ভোজসভায় ক্ষীরের মিষ্টিতে। অন্ধ্রপ্রদেশের ঝাল রান্নায় অনভ্যস্ত সাংসদরা চোখ দিয়ে জল ঝরাতে ঝরাতে মিষ্টি দিয়ে পরিস্থিতি সামলেছেন বলে খবর মিলেছে।

আট কোটির ধাক্কা

কংগ্রেসের সদস্যপদ, সঙ্গে ২ লক্ষ টাকার দুর্ঘটনা বিমা। তেলঙ্গানায় কংগ্রেসের সদস্যপদ অভিযানে প্রায় ৪০ লক্ষ সদস্য হয়েছেন। তাঁদের দুর্ঘটনা বিমা দিতে বছরে ৮ কোটি টাকা খরচ হবে। এআইসিসি-তে তেলঙ্গানার ভারপ্রাপ্ত মাণিকম টেগোর বাহবা পাচ্ছেন। সবাই বলছেন, এই জন্যই তিনি রাহুল গান্ধীর চোখের মণি। মাণিকম করুণ মুখে বলছেন, তেলুগু দেশম, টিআরএস সদস্যপদের সঙ্গে দুর্ঘটনা বিমা চালু করেছে, তাই কংগ্রেসও সে পথ ধরতে বাধ্য। এখন বছরে ৮ কোটি টাকা জোগাড় করাটাই চিন্তা।

আরও পড়ুন
Advertisement