Exhibition

লন্ডন ডায়েরি: যুদ্ধের প্রহরে বন্ধুত্বের স্মৃতি ফেরাল প্রদর্শনী

সৈন্যদের অবদান নিয়ে নিউ ফরেস্ট হেরিটেজ সেন্টারে আয়োজিত হয়েছে প্রদর্শনী। ছবি, স্মারক, চিঠিতে ধরা হয়েছে যুদ্ধের প্রহরে বন্ধুত্বের কাহিনি।

Advertisement
শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৮
নিউ ফরেস্টের বাসিন্দাদের সঙ্গে ভারতীয় সৈন্যরা, প্রদর্শনীর ছবিতে।

নিউ ফরেস্টের বাসিন্দাদের সঙ্গে ভারতীয় সৈন্যরা, প্রদর্শনীর ছবিতে।

১১০ বছর আগে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ইংল্যান্ডের দক্ষিণে নিউ ফরেস্টের গ্রামে এসেছিলেন ভারতীয় সৈন্যরা। বাসিন্দারা আজও মনে রেখেছেন তাঁদের। বুনো টাট্টুঘোড়া, পুকুরে ভরা বনাংশে সৈন্যরা মেঠো কামান চালানো শিখতেন। পরে যুদ্ধে আহতদেরও গ্রামে এনে চিকিৎসা চলেছিল। হোটেলগুলিকে হাসপাতাল, আরোগ্য নিকেতনে পরিণত করা হয়েছিল। ব্রোকেনহার্স্টে গড়ে উঠেছিল লেডি হার্ডিঞ্জ হসপিটাল। গ্রামবাসীরা ভারতীয় সৈন্যদের আপন করেছিলেন। তাঁরা চলে যাওয়ার সময় যা দিয়েছিলেন, আজও যত্নে রেখেছে পরিবারগুলি। সৈন্যদের অবদান নিয়ে নিউ ফরেস্ট হেরিটেজ সেন্টারে আয়োজিত হয়েছে প্রদর্শনী। ছবি, স্মারক, চিঠিতে ধরা হয়েছে যুদ্ধের প্রহরে বন্ধুত্বের কাহিনি। এক ইংরেজ বালক সৈন্যদের ভালবেসে তাঁদের মতো পাগড়ি পরতে, ব্যান্ডেজ বাঁধতে চাইত। দোকানে, শিবিরে, জঙ্গলের রাস্তায় ঘোড়ার পিঠে রয়েছে সৈন্যদের ছবি। তাঁদের স্মৃতিতে আজও হোটেলের ছাদে ওড়ে ভারতের পতাকা, রাস্তার নাম মিরাট রোড। প্রদর্শনীতে রয়েছে হাসপাতালের ঝাড়ুদার সুখার কথা। নিম্নবর্গের বলে তাঁর মৃত্যুর পর সৎকারে রাজি হয়নি হিন্দুরা। মুসলিম নয়, তাই কবরে রাজি হয়নি মুসলিমরাও। সমাধির ব্যবস্থা করেন স্থানীয় যাজক। বলেন, নিজের দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে সুখা। যাজকপল্লির অন্যান্যরা সমাধিপ্রস্তরের বন্দোবস্ত করেন। নিউ ফরেস্টে সুদৃশ্য গির্জার কবরখানায় শান্তিতে ঘুমোচ্ছেন সুখা। লোকে দেখতে আসেন তাঁকে।

Advertisement

শ্রেয়সের রেকর্ড

হাল-এর ব্রিটিশ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বকনিষ্ঠ ব্রিটিশ গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত শ্রেয়স রয়্যাল। ১৬ বছরে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে ব্রিটিশ রেকর্ড গড়েছিলেন ডেভিড হাওয়েল। সেটি ভাঙলেন ১৫ বছরের শ্রেয়স। শ্রেয়সের এই কৃতিত্ব সত্যিই বিশাল। কারণ, ২০১৮ সালে তাঁর বাবা জিতেন্দ্রের ‘ওয়ার্ক ভিসা’র মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে পরিবারটিকে ভারতে পাঠানোর চেষ্টা হয়। ইংলিশ দাবা ফাউন্ডেশন তৎকালীন অভিবাসন মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করায় পরিবারটিকে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। জিতেন্দ্রের আশা, এক দিন অলিম্পিক্সেও দাবা থাকবে। একুশের মধ্যেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হবে তাঁর ছেলে।

বিদেশে যক্ষের বিরহ

ইংরেজ সুরকার গুস্তাভ হোস্টকে বিখ্যাত করেছে অর্কেস্ট্রাল স্যুট দ্য প্ল্যানেটস। তবে জ্যোতিষ ও হিন্দুধর্মে তাঁর আগ্রহ অনেকটাই অজানা। তাঁর জন্ম ১৮৭৪-এ, ইংল্যান্ডের চেল্টেনামে। কুড়ির কোঠাতেই ঋগ্বেদ, রামায়ণ প্রভৃতি সংস্কৃত গ্রন্থে ঝোঁক। সংস্কৃত সাহিত্যের অনুবাদ পড়তেন, মেবেল বোডের কাছে ভাষাটি শিখতেন। ফলস্বরূপ, সীতা ও সাবিত্রী অপেরা দু’টি ছাড়াও ঋগ্বেদ-এর স্তোত্র ও কালিদাসের মেঘদূতম্ নিয়ে গীতিআলেখ্য রচনা করেন। তাঁর জন্মের সার্ধশতবর্ষে মেঘদূতম্ অনুপ্রাণিত দ্য ক্লাউড মেসেঞ্জার প্রথম বার মঞ্চস্থ হল রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে, দর্শকে পরিপূর্ণ বিবিসির কনসার্টে। এটি হোস্ট রচনা করেন ১৯১০-এ, প্রথম বার ভারতীয় সাঙ্গীতিক শৈলী ব্যবহারের সঙ্গে রেখেছিলেন পাশ্চাত্য ধ্রুপদী রীতিও। তাঁর রচনায়, গায়কদল ইংরেজিতে শোনাচ্ছেন কালিদাস বর্ণিত হিমালয়ের যক্ষের কাহিনি। কুবের যক্ষকে মধ্যভারতে নির্বাসন দিয়েছেন, বিরহী যক্ষ একটি মেঘকে দিয়ে স্ত্রীকে বার্তা পাঠাচ্ছেন। শেষভাগে কাব্যখচিত ভাষায় যক্ষের মেঘকে মিনতি, যদি স্ত্রী যক্ষকে স্বপ্ন দেখেন, তবে যেন সে তাঁকে না জাগায়। বরং প্রতীক্ষা করুক তাঁর আধা-জাগরণের, যখন মেঘের শীতল হাওয়া তাঁর গালে এসে লাগবে। নির্বাসিত যক্ষ ও তাঁর স্ত্রী দু’জনেই তখন গভীর প্রশান্তিতে মগ্ন। কারণ, কোনও বিরহই চিরন্তন নয়, সেই বার্তাই এনেছে মেঘ।

ছয় মহারথী

২ নভেম্বর নতুন টোরি দলনেতার নির্বাচন পর্যন্ত ঋষি সুনকই বিরোধী দলনেতা থাকছেন। নতুন দলনেতা হওয়ার দৌড়ে শামিল ছয় এমপি। প্রীতি পটেল জানিয়েছেন, তিনি লড়বেন। তাঁকে টক্কর দেবেন প্রাক্তন মন্ত্রী কেমি বাডনখ, জেমস ক্লেভারলি, টম টুগেনধাত, রবার্ট জেনরিক ও মেল স্ট্রাইড। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রাভারম্যান দক্ষিণপন্থী ও সুনকের কড়া সমালোচক। কিন্তু দশ জনের মনোনয়ন সংগ্রহে ব্যর্থ হওয়ায় দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছেন। তবে, পিছনের সারি থেকেই লড়াই চালিয়ে যাবেন নিশ্চয়ই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement