Share Market

বাজার উঠলেও সঙ্কট কেটেছে বলা যাবে না

সর্বোচ্চ জায়গা ৮৫,৮৩৬ (২৬ সেপ্টেম্বর) থেকে সেনসেক্স নেমেছিল ৭৩,৮২৯-এ। খুইয়েছিল ১২,০০৭ পয়েন্ট। সেখান থেকে এক সপ্তাহে ৩১২২ উদ্ধারে বাজারে খুশির হাওয়া।

Advertisement
অমিতাভ গুহ সরকার
শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫ ০৭:৩৫
আশার পারদ উঠছে।

আশার পারদ উঠছে। —প্রতীকী চিত্র।

প্রায় ছ’মাস ধরে পতনের পরে গত সপ্তাহে টানা উত্থান দেখল শেয়ার বাজার। সেনসেক্স লাফিয়েছে ৩১২২ পয়েন্ট, নিফ্‌টি ৮৮০। চার বছরের মধ্যে এক সপ্তাহে এটাই সেরা উত্থান। ফলে লগ্নিকারীদের খাতায় লোকসানের যে বিরাট পাহাড় গড়ে উঠেছিল, তা কিছুটা হলেও মাথা নামিয়েছে। ফের আশায় বুক বাঁধছেন তাঁরা। সর্বোচ্চ জায়গা ৮৫,৮৩৬ (২৬ সেপ্টেম্বর) থেকে সেনসেক্স নেমেছিল ৭৩,৮২৯-এ। খুইয়েছিল ১২,০০৭ পয়েন্ট। সেখান থেকে এক সপ্তাহে ৩১২২ উদ্ধারে বাজারে খুশির হাওয়া।

Advertisement

উত্থানের কারণ একাধিক। ফেব্রুয়ারিতে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের লক্ষ্যের (৪%) নীচে নামায় স্বস্তি মিলেছিল। তাতে ভর করেই গত সোমবার শুরু হয় সূচকের উত্তরমুখী যাত্রা। কম দামে বহু ভাল শেয়ার কেনার সুযোগ নিতে বাজারে ফিরতে থাকেন লগ্নিকারী। আমেরিকায় এই দফায় সুদ না কমলেও, চলতি বছরে দু’বার কমানোর বার্তাও এগিয়ে যাওয়ার দরজা খোলে। সপ্তাহের শেষ দু’দিনে শেয়ার কিনতে নেমে বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলি ঢালে ১০,৭০৯ কোটি টাকা। ফলে মাথা তোলে টাকাও। গত শুক্রবার ডলারের দাম ৩৯ পয়সা পড়ে হয়েছে ৮৫.৯৩ টাকা। বাড়ছে দেশের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারও।

আশার পারদ উঠছে। প্রশ্ন, তা হলে কি বাজার ফের ‘বুল’ বলয়ে পা রাখল?

এখনই তা হলফ করে বলা যাচ্ছে না। সব উৎকণ্ঠা কাটেনি। বড় পতনের তেমন আশঙ্কা নেই হয়তো। তবে নজর ২ এপ্রিলে। ভারতীয় পণ্যে আমেরিকা কী হারে শুল্ক চাপায় তা জানতে মুখিয়ে বাজার। শুল্ক আশঙ্কার থেকে কম হলে সূচক ফের লাফাবে। বেশি হলে পতনের আশঙ্কা। আশা, ৯ এপ্রিল আরবিআই ফের ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমাবে। সেটা হলেও বহাল থাকবে উত্থান। না হলে গোত্তা খেতে পারে। এর পর চোখ থাকবে জানুয়ারি-মার্চে সংস্থার আর্থিক ফলে। অপেক্ষা চলবে বর্ষা-সহ আগামী দিনে আবহাওয়ার পূর্বাভাসেরও। সব ক্ষেত্রেই আশা পূরণ না হলে ধাক্কা আসতে পারে।

গত কয়েক মাসের পতনে যাঁরা ভাল শেয়ার কিনেছেন বা ফান্ডে এসআইপি চালিয়ে গিয়েছেন, তাঁরা সুফল পেতে শুরু করেছেন। শেয়ারে লোকসানের প্রায় ২৫% উদ্ধার হয়েছে পাঁচ দিনে। পুরোটা ফিরতে কত সময় লাগবে বলা যাচ্ছে না। কারণ এ জন্য দেশে বৃদ্ধির হার ৭% হতে হবে। অনুকূলে থাকতে হবে বিশ্ব বাজার। তখন দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলির লগ্নি তাজা রাখবে সূচককে।

২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ শেষ হতে আর সাত দিন। এখন শেয়ার বাজার চাঙ্গা থাকলে বছর শেষে বহু সংস্থার হিসাবের খাতা ভাল দেখাবে। বন্ড ইল্ডও ৬.৮৪% থেকে কমে হয়েছে ৬.৭৩%। বাজারে বন্ডের দাম বাড়লে ইল্ড কমে। যা বন্ডে লগ্নিকারীদের জন্যে সদর্থক। আর বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি বন্ডের বড় লগ্নিকারী। এ সপ্তাহের শেষে ঘোষণা হবে এপ্রিল-জুনে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির সুদ। এখন তাতে কোনও হেরফের হবে বলে মনে হয় না। তবে সুদ কমার আশঙ্কা থাকায় নতুন বছরের গোড়াতেই লগ্নি করে ফেলা ভাল। আগামী অর্থবর্ষে নতুন কর কাঠামোয় করের দায় কমবে একাংশের। বাড়তি ওই টাকায় এক বা একাধিক এসআইপি খোলা যায়।

(মতামত ব্যক্তিগত)

Advertisement
আরও পড়ুন