S&P Global

চলতি অর্থবর্ষ এবং পরবর্তী দু’বছর আর্থিক বৃদ্ধির হার কমাল এসঅ্যান্ডপি, সতর্ক কেন্দ্রও

অর্থ মন্ত্রক এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক চলতি অর্থবর্ষে ৭.২% জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিলেও গত এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে তা ৬.৭ শতাংশে আটকে গিয়েছে।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:২১
এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল।

এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল। —ফাইল চিত্র।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা এসঅ্যান্ডপি বলেছিল, চলতি অর্থবর্ষ (২০২৪-২৫) থেকে পরবর্তী দু’বছর ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের মধ্যে আটকে থাকবে। আজ এক রিপোর্ট প্রকাশ করে স্পষ্ট ভাবে চলতি বছরের পূর্বাভাস ৬.৮ শতাংশেই সীমিত রাখল তারা। যা কেন্দ্র এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ৭.২ শতাংশের তুলনায় বেশ কম। আর পরের দু’টি অর্থবর্ষের পূর্বাভাসও কমিয়ে করল যথাক্রমে ৬.৭% এবং ৬.৮%। আগের রিপোর্টে যা ৬.৯% এবং ৭% ছিল। মূলত চড়া সুদের হার এবং শহরাঞ্চলে চাহিদার ঝিমুনির জন্যই বৃদ্ধি কিছুটা ধাক্কা খাবে বলে মনে করছে তারা। এমনকি এসঅ্যান্ডপি পরিষ্কার ভাবেই বলেছে, ৭% বৃদ্ধি ছুঁতে ভারতের ২০২৭-২৮ অর্থবর্ষ গড়িয়ে যাবে। অর্থ মন্ত্রক অবশ্য এখনও এ বছর সেই হার ৭.২% স্পর্শ করার ব্যাপারে আশাবাদী। তবে আজ মাসিক রিপোর্টে বিশ্ব বাজারের প্রতিকূল পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে তারা।

Advertisement

অর্থ মন্ত্রক এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক চলতি অর্থবর্ষে ৭.২% জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিলেও গত এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে তা ৬.৭ শতাংশে আটকে গিয়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বরেও তা ৬.৫ শতাংশের উপরে ওঠার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদদের বড় অংশ। অত্যাবশ্যক পণ্যের চড়া দামের জেরে শখের কেনাকাটায় ভাটার টানই যার মুখ্য কারণ। তার উপর সুদ এখনও চড়া। মোদী সরকারও আর্থিক বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করার যুক্তি তুলে ধরে বারবার সুদের হার কমিয়ে শিল্প সংস্থাগুলির পুঁজি সংগ্রহ এবং ক্রেতাদের ঋণের খরচ কমানোর সওয়াল করছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং সুদ না কমলে যে ঝিমিয়ে পড়া চাহিদা বৃদ্ধির হারকে টেনে নামাবে, বিলক্ষণ বুঝতে পারছে সরকার। কিন্তু প্রশ্ন হল, মূল্যবৃদ্ধির হার ফের ৪ শতাংশের কাছাকাছি নামার আগে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমাবে কি?

বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, এই আশঙ্কা থেকেই শীর্ষ ব্যাঙ্কের উপরে চাপ তৈরির কৌশল নিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছেন, হাতে গোনা কয়েকটি পচনশীল খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি সামগ্রিক মূল্যবৃদ্ধিকে চড়া করে রেখেছে। সে দিকে না তাকিয়ে অর্থনীতির স্বার্থে সুদ কমানো উচিত রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের। এই পরিস্থিতিতে এসঅ্যান্ডপি-র পূর্বাভাস ছাঁটাই সরকারের পক্ষে অস্বস্তির বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।

আজ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনীতি সংক্রান্ত রিপোর্টে ভারত সম্পর্কে এসঅ্যান্ডপি জানিয়েছে, সম্প্রতি নির্মাণ ধাক্কা খাওয়ায় অন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সূচকের গতি কমেছে। আমেরিকার প্রশাসনিক পরিবর্তনে বাণিজ্য ক্ষেত্রে ঝুঁকি বাড়তে পারে। অর্থ মন্ত্রকের অবশ্য আশা, ভাল বর্ষা, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি এবং কাঁচামালের জোগান মসৃণ হওয়ায় কৃষি উপকৃত হবে। কমবে মূল্যবৃদ্ধি। তবে আশঙ্কা রয়েছে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে। উন্নত বিশ্বে চাহিদায় ভাটা এবং আমেরিকার সিদ্ধান্ত রফতানিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।

আরও পড়ুন
Advertisement