ডাকঘরে দু’বছরের মেয়াদি আমানতে সুদ এখন ৬.৯%। প্রতীকী ছবি।
গত ২০২০-২১ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর থেকে টানা ন’টি ত্রৈমাসিকে অপরিবর্তিত রাখার পরে গত অক্টোবর-ডিসেম্বর থেকে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির একাংশের ক্ষেত্রে সুদের হার বাড়াচ্ছে কেন্দ্র। চলতি এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিক পর্যন্ত টানা তিন বার তা বেড়েছে। আর এই তিন দফাতেই ডাকঘরের মেয়াদি জমায় সুদের হার বৃদ্ধির ফলে অবশেষে তা ব্যাঙ্কের স্থায়ী মেয়াদি আমানতের সঙ্গে পাল্লা দিতে নেমেছে, প্রায় তিন বছর পরে।
কম সুদের জমানায় এক সময় ব্যাঙ্কেও সুদের হার নেমেছিল তলানিতে। কিন্তু মাত্রাছাড়া মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিতে গত মে মাস থেকে সুদের হার বাড়াতে শুরু করে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। মোটামুটি অক্টোবর থেকে বাড়তে শুরু করে ব্যাঙ্কে স্থায়ী আমানতের সুদ। তার পর থেকেই ফের হারিয়ে যাওয়া জনপ্রিয়তা ফিরছিল সঞ্চয়ের এই মাধ্যমটির। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এ বার স্বল্প সঞ্চয়গুলির কিছু কিছু ক্ষেত্রেও সরকার সুদ বাড়ানোর পথ ধরায় দু’টি ক্ষেত্রের মধ্যে ভারসাম্য এসেছে। যে কারণে ডাকঘরের জমা নিয়েও নতুন করে সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ বাড়বে বলে আশা।
বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, ডাকঘরে দু’বছরের মেয়াদি আমানতে সুদ এখন ৬.৯%। যা বিভিন্ন ব্যাঙ্কে স্থায়ী মেয়াদের আমানতের কাছাকাছি। যেমন, স্টেট ব্যাঙ্কে এক থেকে দু’বছরের কম মেয়াদে মিলছে ৬.৮০%। প্রবীণদের ৫০ বেসিস পয়েন্ট বেশি। আবার ডাকঘরে তিন বছরের মেয়াদি জমায় সুদ ৫.৫% থেকে বেড়ে হয়েছে ৭%। স্টেট ব্যাঙ্কেও দু’বছর থেকে তিন বছরের কমে সুদ এখন ৭%। অনেক দিন বাদে জমা টাকায় পাওয়া এই সব সুদ খুচরো মূল্যবৃদ্ধির (৬.৪৪%) হারকেও ছাপিয়ে গিয়েছে।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের হিসাব, গত বছরের মে থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যাঙ্কে সব ধরনের নতুন মেয়াদি আমানত মিলিয়ে গড়ে সুদ বেড়েছে ২২২ বেসিস পয়েন্ট। কারণ, কোভিড কাটিয়ে পুরোদমে আর্থিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ায় বেড়ে যাওয়া ঋণের চাহিদা আর তা মেটাতে তহবিল সংগ্রহের বাধ্যবাধকতা। প্রথমে বড় অঙ্কের আমানতে বাড়ালেও, পরে ছোট খুচরো মেয়াদি আমানতেও সুদের হার বাড়াতে হয় ব্যাঙ্কগুলিকে। অন্য দিকে, স্বল্প সঞ্চয়ের সুদ সরকারি ঋণপত্রের ইল্ডের সঙ্গে যুক্ত। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ব্যাঙ্ক জমার থেকে পিছিয়ে শুরু করেও এখানে সুদ বৃদ্ধির গতি ছিল বেশি। গ্রাহক টানার দৌড়ে তাই ডাকঘর ও ব্যাঙ্ক জমায় লড়াই হাড্ডাহাড্ডি।