ব্যক্তিগত তথ্যে ভুল থাকলে এখন থেকে অনলাইনে তিনি নিজেই তা সংশোধন করতে পারবেন। —প্রতীকী চিত্র।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) নথিতে সদস্যের ব্যক্তিগত তথ্যে ভুল থাকলে এখন থেকে অনলাইনে তিনি নিজেই তা সংশোধন করতে পারবেন। যার মধ্যে থাকতে পারে নিজের, বাবা-মা বা স্বামী-স্ত্রীর নাম, বয়স, চাকরিতে ঢোকা ও ছাড়ার দিন ইত্যাদি। শনিবার এ জন্য শর্তসাপেক্ষে বিশেষ ব্যবস্থা চালু করেছেন শ্রমমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। তিনি বলেন, পিএফ পরিষেবাকে ব্যাঙ্কের পর্যায়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী কেন্দ্র। তাই এই বদল আনা হয়েছে।
নতুন নিয়মে ২০১৭ সালের ১ অক্টোবরের পরে ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নম্বর (ইউএএন) পেলে, এই ভুল শোধরাতে নিয়োগকারী সংস্থা বা পিএফ কর্তৃপক্ষের (ইপিএফও) অনুমোদন লাগবে না। জমা দিতে হবে না নথিও। তবে তার আগে ইউএএন পেলে কিছু নিয়ম মানতে হবে। এর ফলে প্রায় ৭.৬ কোটি পিএফ সদস্যদের দীর্ঘ দিনের সমস্যার সমাধান হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের।
এ দিনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে কর্মী ইউনিয়নগুলি। তাদের মতে, কর্মী চাকরিতে যোগদানের পরে সংস্থা কর্মীর ইউএএন নথিভুক্ত করে। দেখা গিয়েছে, সেই সময়েই অনেক ক্ষেত্রে নাম ইত্যাদি তথ্যে ভুল হয়। পরে সেগুলি সংশোধনের জন্য সদস্য এবং নিয়োগকারীকে যুগ্ম ভাবে পিএফের কাছে আবেদন করতে হয়। জমা দিতে হয় নথিও। পিএফ কর্তৃপক্ষ তাতে সায় দিলে তবেই সংশোধন কার্যকর হয়। ইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক এবং পিএফের আঞ্চলিক কমিটির সদস্য অশোক ঘোষের অভিযোগ, এই পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে বহু ক্ষেত্রে বছর ঘুরে যায়। নতুন ব্যবস্থায় দ্রুত কাজ হলে পিএফ দফতরে টাকা পেতে জমে থাকা বহু আবেদনের ফয়সলা হবে।
অশোক আরও বলেন, “নাম, ঠিকানা, বাবা/মার নাম ইত্যাদি তথ্য পিএফ এবং নিয়োগকারীর নথিতে আলাদা থাকায় কয়েক লক্ষ সদস্য অবসর বা চাকরি ছাড়ার পর পিএফের টাকা পাচ্ছেন না। আবার সংশোধন করে টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হওয়ার নজিরও রয়েছে। নতুন ব্যবস্থা ওই সমস্যা কাটাতে সাহায্য করবে। তবে সদস্য যে সংশোধন করবেন, তা নিয়োগকারীর রেকর্ডেও তোলা জরুরি। কারণ, শুধু পিএফ নয়। কর্মী রাজ্য বিমা বা ইএসআই-এর ক্ষেত্রেও ওই সব ভুলের জন্য হয়রান হতে হয় কর্মীদের।’’
শনিবার শ্রম মন্ত্রকই জানিয়েছে যে, তথ্য সংশোধনের জন্য প্রায় ৪ লক্ষ আবেদন জমা পড়ে রয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় সেগুলির দ্রুত সমাধান তো হবেই, উপরন্তু যাঁরা আগে সংশোধনের আবেদন করেছেন, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন। তা ছাড়া, এখন পিএফ অ্যাকাউন্ট স্থানান্তরিত করতে প্রথমে সংস্থার কাছে আর্জি জানাতে হয়। তারা আবেদন খতিয়ে দেখে অনুমোদন দিয়ে পিএফ দফতরে পাঠানোর পরই অ্যাকাউন্ট অন্য সংস্থায় যায়। সেই ব্যবস্থাটিও সরল করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী।