—প্রতীকী ছবি।
দু’মাসের মধ্যে ফের সুদের হার হ্রাস করল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। ফলে ৬.২৫ শতাংশ থেকে ছ’শতাংশে নেমে এসেছে রেপো রেট। আর্থিক বিশ্লেষকদের দাবি, আরবিআইয়ের এই সিদ্ধান্তে বাড়ি এবং গাড়ির ঋণে সুদের হার কমার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে মাসিক কিস্তিতে কত টাকা বাঁচাতে পারবেন গ্রাহক? আনন্দবাজার ডট কমের এই প্রতিবেদনে রইল তার হদিস।
রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কের বাড়ি এবং গাড়ির ঋণে সুদের ক্ষেত্রে দু’টি নিয়ম রয়েছে। একটি হল, স্থায়ী সুদ বা ফিক্সড ইন্টারেস্ট। দ্বিতীয়টির নাম, ভাসমান সুদ বা ফ্লোটিং ইন্টারেস্ট। শেষেরটি আরবিআইয়ের রেপো রেটের সঙ্গে সম্পর্কিত। এক্সটার্নাল বেঞ্চমার্ক লিঙ্কড রেটের (ইবিএলআর) উপর এই ঋণগুলির সুদের হার নির্ভর করে। আর তাই রেপো রেট কমলে স্বাভাবিক ভাবেই হ্রাস পায় ইবিএলআরের হার।
একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি বোঝা যেতে পারে। ধরা যাক, কোনও ব্যক্তি ৩০ বছরের মেয়াদে রাষ্ট্রায়ত্ত বা বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছেন। বর্তমানে ৮.৭০ শতাংশ সুদের হারে মাসিক কিস্তিতে সেই ঋণ শোধ করছেন তিনি। অর্থাৎ, প্রতি মাসে ৩৯ হাজার ১৫৭ টাকা করে দিতে হচ্ছে তাঁকে।
এখন আরবিআই রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে দেওয়ায় গৃহঋণে সুদের হার কমে ৮.৪৫ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রতি মাসে ৩৮ হাজার ২৬৯ টাকা করে দেবেন সংশ্লিষ্ট গ্রাহক। অর্থাৎ, ঋণের মাসিক কিস্তিতে ৮৮৮ টাকা করে বাঁচাতে পারবেন তিনি। আবার রেপো রেট হ্রাস পাওয়ায় ব্যাঙ্ক সুদের হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে দিলে ঋণগ্রহণকারীর প্রতি মাসে বাঁচবে ১,৭৬৯ টাকা। তখন গৃহঋণে সুদের হার দাঁড়াবে ৮.২০ শতাংশ এবং মাসিক কিস্তি হবে ৩৭ হাজার ৩৮৮ টাকা।
বুধবার, ৯ এপ্রিল মুদ্রা নীতি কমিটির বৈঠক শেষে রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানোর কথা ঘোষণা করেন আরবিআই গভর্নর সঞ্জয় মলহোত্র। সর্বসম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে স্পষ্ট করেছেন তিনি। এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি রেপো রেট কমিয়েছিল দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। উল্লেখ্য, আরবিআইয়ের রেপো রেট হ্রাস স্থায়ী সুদের হারে ঋণের কিস্তিতে পরিবর্তন হওয়ার নেই বলে জানিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে অনুমানের ভিত্তিতে বাড়ি বা গাড়ির ঋণ সুদের হার কতটা কমবে, তা তুলে ধরা হয়েছে। কারণ ব্যাঙ্কভেদে ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হারে তারতম্য রয়েছে। ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার দু’টি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। সেগুলি হল, তহবিলের প্রান্তিক ব্যয়ভিত্তিক ঋণের হার (মার্জিনাল কস্ট অফ ফান্ডস বেসড লেন্ডিং রেট বা এমসিএলআর) এবং স্প্রেড। আরবিআই রেপো রেট কমানোর পরে এমসিএলআর কমার সম্ভাবনা থাকলেও, স্প্রেড বিভিন্ন ব্যাঙ্কের মধ্যে সব সময় পরিবর্তিত হয়।)