—প্রতীকী ছবি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতেই বিশ্ববাজারে বাড়ল অপরিশোধিত তেলের দাম। বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ব্রেন্ট ক্রুডের দর ব্যারেল প্রতি ০.৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ দিন যা বিক্রি হচ্ছে ৭৫.১৮ ডলারে। অন্য দিকে আমেরিকার ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট বা ডব্লুটিআই দাম ০.২২ শতাংশ ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এই ক্যাটেগরির অশোধিত তেলের দর ব্যারেল প্রতি ৭১.৮৫ ডলারে ঘোরাফেরা করছে।
আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, ট্রাম্প জমানায় ফের ডলারের শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা ক্রুড অয়েলকে আরও দামি করতে পারে। তা ছাড়া ইরান ও ভেনেজুয়েলার খনিজ তেল বিক্রির উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারেন তিনি। সে ক্ষেত্রে চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে গিয়ে ‘তরল সোনা’-র দর আকাশছোঁয়া হবে বলেই মনে করছেন তাঁরা।
ব্রেন্ট ও ডব্লুটিআইয়ের পাশাপাশি এ দিন ওপেক বাক্সেটেও খনিজ তেলের দাম ০.৫২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সৌদি আরব-সহ পশ্চিম এশিয়ার তেল উৎপাদনকারী দেশগুলি কাঁচা তেল বিক্রি করছে ব্যারেল প্রতি ৭৪.০২ ডলারে। তবে ট্রাম্পের নির্বাচনী জয়ের পর বিশ্ববাজারে তরল সোনা সামান্য সস্তা হয়েছিল। বুধবার, ৬ নভেম্বর ব্যারেল প্রতি খনিজ তেলের দাম গড়ে দু’ডলার করে কমে যায়।
অন্য দিকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ সীমায় উঠেছে ডলার। পাশাপাশি, ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর ব্রেন্ট ও ডব্লুটিআইয়ের লোকসানের পরিমাণ ব্যারেল প্রতি যথাক্রমে ৬১ ও ৩০ সেন্ট করে কমেছে বলে জানা গিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের দাবি, কুর্সিতে বসেই ইরানি তেলের উপর নিষেধাজ্ঞার ‘সর্বোচ্চ চাপের নীতি’ পুনর্বহাল করবেন তিনি। যা দিনে ১০ লক্ষ ব্যারেল খনিজ তেলের ঘাটতি তৈরি করবে। তবে এই নীতি চিনের উপর ওয়াশিংটন কতটা কার্যকর করতে পারবে তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞ মহল। তেহরানের তরল সোনা সবচেয়ে বেশি আমদানি করে বেজিং।
বিশ্ববাজারে তেলের দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় কারণ হল, মেক্সিকো উপসাগর থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় (হ্যারিকেন) ‘রাফায়েল’-এর উত্তর আমেরিকার উপকূলে আছড়ে পড়া। এই উপসাগরীয় এলাকা থেকে ১৭ শতাংশ অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করে ওয়াশিংটন। যা আপাতত বন্ধ রয়েছে। ফলে এ বছরের ১ নভেম্বর থেকে দিনে ৩ লক্ষ ৪ হাজার ৪১৮ ব্যারেল তেল উত্তোলনে ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
বিশ্ব বাজারে তেল দামি হলেও ভারতের ঘরোয়া বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে পেট্রল ও ডিজেলের দর। কারণ, রাশিয়ার থেকে কম দামে তরল সোনা আমদানি করছে নয়াদিল্লি। যার জেরে আপাতত পেট্রোপণ্যের দর বদলের সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।