নির্দেশিকা বলছে, মূলত ১৫-৪০ কেজির পণ্য বাইকে বইতে হবে। —প্রতীকী চিত্র।
বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে পাল্লা দিতে পণ্য পৌঁছনোয় জোর দিয়েছে ডাক বিভাগ। এ বার প্রতিযোগিতায় এগোতে পোস্টম্যান বা ডেলিভারি কর্মীদের তারা নিজেদের বাইক ব্যবহার করতে বলেছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জ্বালানির খরচ দেবে ডাক বিভাগ। ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এই নিয়ম চালুর কথা থাকলেও, সর্বত্র হয়নি। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের প্রতি ডেলিভারি বিটে (প্রতি পিনকোড যে’কটি ভাগে বিভক্ত, তাদের প্রতিটিকে একটি বিট বলে) তা চালুর কড়া নির্দেশিকা দিয়েছে কেন্দ্র। এখানেই বেঁধেছে গোল। যা খবর, তাতে ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কলে একেবারেই সাড়া মেলেনি। ক’জনের বাইক কেনার ক্ষমতা রয়েছে, সেই প্রশ্নও উঠছে।
নির্দেশিকা অনুসারে, ১ লিটার তেলে ৪০ কিলোমিটার ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ কিলোমিটারে ৯৮ পয়সা হিসেবে বাইকের খরচ দেওয়া হবে। সপ্তাহে ছ’দিন হিসাবে মাসে যত কিমি বাইক চলবে, সেই অনুসারে টাকা মিলবে। বাইক কেনার সরকারি প্রকল্প থাকলে, কর্মীকে তার সুবিধা নিতে সহায়তাও করা হবে। উত্তরবঙ্গের এক ডাককর্মী জানান, ‘‘বাইক না থাকলেও জোর করে নাম পাঠানো হচ্ছে। এই অবস্থায় নতুন বাইক কেনা ছাড়া পথ নেই। কিন্তু সেই টাকা কে দেবে?’’ বালির এক কর্মী বলছেন, ‘‘বিভাগের কাজের জন্য এই নির্দেশিকা, তা হলে বিভাগেরই উচিত তা কেনা। কোনও ভাবেই কিনব না।’’ এ নিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কলের চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল নীরজ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তা সফল হয়নি।
বেশিরভাগ ডাক কর্মী হেঁটে বা সাইকেলে পণ্য পৌঁছোন। সাইকেলের জন্য বিভাগ মাসে ১৮০ টাকা দেয়। নির্দেশিকা বলছে, মূলত ১৫-৪০ কেজির পণ্য বাইকে বইতে হবে। এতে সময় কম লাগবে। কর্মীদের পরিশ্রম কমবে। এর বেশি ওজনের পণ্য এখনই ছোট গাড়িতে পৌঁছনো হয়। আবার পোস্টম্যান পদে আবেদনকারীর দু’চাকার ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক হয়েছে বলে খবর। বারুইপুরের এক কর্মী জানান, ‘‘জেলার ডাকঘরগুলিতে কয়েক জন নানা কারণে বাইক ব্যবহার করেন। বাকিদের নেই। নতুনদের ক্ষেত্রে বাইক বাধ্যতামূলক হচ্ছে বলে শুনছি। বিভাগ নিজে বাইক দিলে ব্যবহার করব।’’
উল্লেখ্য, পোস্টম্যানদের বাইক দেওয়ার প্রকল্প আগেই হাতে নিয়েছিল ডাক বিভাগ। সূত্রের খবর, কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রায় ৫৫টি ই-বাইক আছে। পার্সেল দেওয়ার কাজেই তা মূলত ব্যবহার হয়। কিন্তু এগুলি ব্যক্তিগত নয়, বিভাগের বাইক।