প্রতীকী চিত্র
বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর প্রধান কারণগুলির মধ্যে একটি হল হৃদ্রোগ। ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়। হৃদ্রোগের সমস্যা বৃদ্ধি পেলে সময়মতো চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়। এই বিষয়েই সম্প্রতি এক নতুন আশার আলো দেখিয়েছে ‘কার্ডিয়াক সার্জারি’। অস্ত্রোপচারের কৌশল আগের থেকে অনেক উন্নত হয়েছে, পাশাপাশি রোগীরাও এখন অনেক বেশি সচেতন। যার ফলে ‘কার্ডিয়াক সার্জারি’ ক্রমেই নিরাপদ হয়ে উঠছে।
কিন্তু কখন যাওয়া উচিত হৃদ্রোগের বিশেষজ্ঞের কাছে?
অবিরাম বুকে ব্যথা, তীব্র শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি বা পায়ে ফোলাভাব থাকলে তৎক্ষণাৎ সাবধান হোন। এগুলি হৃদ্রোগের লক্ষণ হতে পারে। এই উপসর্গগুলি উপেক্ষা করলে রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে পারে, যা প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসার প্রয়োজনকে অপরিহার্য করে তোলে। ‘করোনারি অ্যাঞ্জিওগ্রাম’ এবং ‘ইকোকার্ডিয়োগ্রাম’-এর মতো পরীক্ষাগুলি হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর ব্লকেজ বা ভাল্ভের কার্যকারিতা শনাক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই পরীক্ষাগুলি হৃদ্রোগের উপসর্গের কারণকে নিশ্চিত করে এবং হার্ট থেকে অনেক বড় ক্ষতি প্রতিরোধ করার জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনীয়তাকেও নির্দেশ দেয়।
অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের কার্ডিয়োথোরাসিক অ্যান্ড ভাস্কুলার সার্জারির সিনিয়র কনস্যালটেন্ট এবং ডিরেক্টর, চিকিৎসক সুশান মুখোপাধ্যায় বলেন, “আধুনিক কার্ডিয়াক সার্জারির মাধ্যমে নূন্যতম কাটাছেঁড়ার প্রয়োজন হয়। প্রাথমিক পর্যায়ের চিকিৎসা রোগীদের জীবন বাঁচাতে এবং সুস্থ জীবন কাটাতেও নিশ্চিত করে।”
আধুনিক ‘হার্ট সার্জারি’ অনেক বেশি নিরাপদ এবং সুস্থ হতেও কম সময় লাগে। নূন্যতম কাটাছেঁড়ার মাধ্যমে এই অস্ত্রোপচার করা হয়, যার ফলে ব্যথা কম হয়, অস্ত্রোপচারের জায়গায় দাগও কম পরে এবং রোগীদেরও দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে থাকতেও হয় না। ‘মিনিমালি ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি’ (এমআইসিএস), অস্ত্রোপচার পরবর্তী ট্রমা কমাতেও সাহায্য করে।
এই পদ্ধতিতে ‘এমআইসিএস’ নামক বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করে করা হয়। যেখানে চিকিৎসকরা ‘ওপেন-হার্ট’ পদ্ধতির পরিবর্তে ছোট ছেদনের মাধ্যমে হার্ট-এর চিকিৎসা করেন। এই পদ্ধতির মাধ্যমে রক্তক্ষরণ কম হয়, সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায় এবং রোগী খুব দ্রুত দৈনন্দিন জীবনে ফিরে আসতে পারে।
‘ভালভুলার হৃদ্রোগ’ ভারতে বিশেষভাবে পরিচিত এবং স্বাস্থ্যের উপরও এটি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ‘অ্যায়োর্টিক স্টেনোসিস’ এবং ‘মাইট্রাল রেগারজ়িটেশন’-এর মতো অবস্থাগুলি প্রায়শই বাতজনিত হৃদ্রোগের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব থেকে উদ্ভূত হয়।
‘অ্যায়োর্টিক স্টেনোসিস’-এ ‘অ্যায়োর্টিক ভাল্ভ’ সংকীর্ণ হয়ে যায়, যা হার্ট থেকে শরীরের বাকি অংশে রক্ত প্রবাহকে সীমাবদ্ধ করে। ‘মাইট্রাল রেগারজ়িটেশন’ বাম অলিন্দের পিছন দিকে রক্তপাত ঘটায়, যা হৃদ্যন্ত্রের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যদি সময়মতো চিকিৎসা না করা হয় তা হলে এই অবস্থার কারণে, হৃদ্যন্ত্রের ব্যর্থতা এবং মৃত্যুর মতো গুরুতর পরিণতি পর্যন্ত হতে পারে।
যদিও উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা হৃদ্রোগের চিকিৎসায় অগ্রগতি ঘটিয়েছে। কিন্তু সকলের উচিত জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে হৃদ্রোগ প্রতিরোধ করা। সুষম খাদ্য বজায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার এড়ানো হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তথ্যসূত্র: অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের কার্ডিয়োথোরাসিক অ্যান্ড ভাস্কুলার সার্জারির সিনিয়র কনস্যালটেন্ট এবং ডিরেক্টর, চিকিৎসক সুশান মুখোপাধ্যায়
যে কোনও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রশ্নের জন্য, অ্যাপোলোতে যোগাযোগ করুন:
জরুরি নং: ১০৬৬
হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩৪৪২০২১২২
ই-মেইল আইডি: infokolkata@apollohospitals.com
এই প্রতিবেদনটি ‘অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।