Places to visit in Oslo

গ্রিলড স্যামন, হোয়াইট ওয়াইন আর অসলো, দু’চার দিন হাতে থাকলে ঘুরে আসুন ভাইকিংদের দেশ

অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই নর্ডিক দেশগুলোতে যেন পাতায় পাতায় আগুন লেগে যায়! লাল-হলুদ জংলা ছাপ বৃদ্ধ পাতারা গাছের ডাল থেকে খসে পড়ে পথে লুটিয়ে রয়েছে এদিক ওদিক।

Advertisement
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:৩৮
০১ ১৬
হেমন্ত এলেই কেমন একটা বিষণ্ণ ভাব চার দিকে। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই নর্ডিক দেশগুলোতে যেন পাতায় পাতায় আগুন লেগে যায়! লাল-হলুদ জংলা ছাপ বৃদ্ধ পাতারা গাছের ডাল থেকে খসে পড়ে পথে লুটিয়ে রয়েছে এদিক ওদিক। ঠিক এই সময়ে দু’চার দিন যদি হাতে থাকে, তবে চট করে ঘুরে আসা যায় অসলো।

হেমন্ত এলেই কেমন একটা বিষণ্ণ ভাব চার দিকে। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই নর্ডিক দেশগুলোতে যেন পাতায় পাতায় আগুন লেগে যায়! লাল-হলুদ জংলা ছাপ বৃদ্ধ পাতারা গাছের ডাল থেকে খসে পড়ে পথে লুটিয়ে রয়েছে এদিক ওদিক। ঠিক এই সময়ে দু’চার দিন যদি হাতে থাকে, তবে চট করে ঘুরে আসা যায় অসলো।

০২ ১৬
নরওয়ের রাজধানী এই শহরটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু ইতিহাস। সুইডেনের গোথেনবার্গের সঙ্গে অসলোর রেলপথে যোগাযোগ রয়েছে। তবে অসলো যাওয়ার আসল মজাটা কিন্তু কোপেনহেগেন থেকে জাহাজে। বাল্টিক সাগরের চার দিকেই রয়েছে উত্তর ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলি।

নরওয়ের রাজধানী এই শহরটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু ইতিহাস। সুইডেনের গোথেনবার্গের সঙ্গে অসলোর রেলপথে যোগাযোগ রয়েছে। তবে অসলো যাওয়ার আসল মজাটা কিন্তু কোপেনহেগেন থেকে জাহাজে। বাল্টিক সাগরের চার দিকেই রয়েছে উত্তর ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলি।

০৩ ১৬
এই সমস্ত শহর যেমন মূলত বন্দরকেন্দ্রিক, তেমনই এখানকার মানুষের জীবনযাত্রায় রয়েছে ঋতুর প্রত্যক্ষ প্রভাব। গ্রীষ্মে ছুটির আমেজ থাকে পুরো ইউরোপ জুড়ে। কিন্তু হেমন্ত রুক্ষ, নিষ্ঠুর। তার প্রভাবে এখানকার মানুষ অসুস্থ হন। তার মধ্যেও ছোট ছোট টুকটাক ঘুরে বেড়ানো চলে। অনেকে আবার বেরিয়ে পড়েন একাই।

এই সমস্ত শহর যেমন মূলত বন্দরকেন্দ্রিক, তেমনই এখানকার মানুষের জীবনযাত্রায় রয়েছে ঋতুর প্রত্যক্ষ প্রভাব। গ্রীষ্মে ছুটির আমেজ থাকে পুরো ইউরোপ জুড়ে। কিন্তু হেমন্ত রুক্ষ, নিষ্ঠুর। তার প্রভাবে এখানকার মানুষ অসুস্থ হন। তার মধ্যেও ছোট ছোট টুকটাক ঘুরে বেড়ানো চলে। অনেকে আবার বেরিয়ে পড়েন একাই।

Advertisement
০৪ ১৬
বাল্টিক সাগরের জলপথে বহু সংস্থা আছে, যারা এই ধরনের ট্যুরগুলোর আয়োজন করে। এদের মধ্যে ‘সিয়েনা লাইন’, ‘ডিএফডিএস’ এই দু’টি উল্লেখযোগ্য। অসলো যেতে কোপেনহেগেন থেকে ডিএফডিএসের জাহাজে উঠতে হবে। এটা ওই সংস্থার জাহাজের একটি নিয়মিত রুট।

বাল্টিক সাগরের জলপথে বহু সংস্থা আছে, যারা এই ধরনের ট্যুরগুলোর আয়োজন করে। এদের মধ্যে ‘সিয়েনা লাইন’, ‘ডিএফডিএস’ এই দু’টি উল্লেখযোগ্য। অসলো যেতে কোপেনহেগেন থেকে ডিএফডিএসের জাহাজে উঠতে হবে। এটা ওই সংস্থার জাহাজের একটি নিয়মিত রুট।

০৫ ১৬
সারা বছর এই পথে বহু মানুষ অসলো আর কোপেনহেগেন ঘুরতে যান। ভাড়ার তারতম্য নির্ভর করে চাহিদার উপরে। মাঝে মধ্যে বেশ কমেও পাওয়া যায়। এই জাহাজগুলি আসলে আমোদতরী। খানাপিনা, গান-বাজনা, নাচ, ক্যাসিনো আর ডিউটি-ফ্রি কেনাকাটা। একসঙ্গে দুর্দান্ত একটা প্যাকেজ।

সারা বছর এই পথে বহু মানুষ অসলো আর কোপেনহেগেন ঘুরতে যান। ভাড়ার তারতম্য নির্ভর করে চাহিদার উপরে। মাঝে মধ্যে বেশ কমেও পাওয়া যায়। এই জাহাজগুলি আসলে আমোদতরী। খানাপিনা, গান-বাজনা, নাচ, ক্যাসিনো আর ডিউটি-ফ্রি কেনাকাটা। একসঙ্গে দুর্দান্ত একটা প্যাকেজ।

Advertisement
০৬ ১৬
অসলো যাওয়ার জন্য জাহাজ ছাড়ে ডেনমার্কের ওস্তাপোর্ট থেকে। যাঁরা সুইডেন থেকে যাবেন, তাঁদের প্রথমে আসতে হবে ওস্তাপোর্ট স্টেশনে। সেখান থেকে দেড় কিলোমিটার হেঁটে ডিএফডিএস টার্মিনাল। দেখা যাবে নীল জলরাশির বুকে প্রকাণ্ড একটি জাহাজ। বিকেল চারটে নাগাদ এই জাহাজ ছাড়ে। যদি ফেরার টিকিট পরদিনই থাকে, তা হলে অসলো পৌঁছে জাহাজের কেবিনেই ব্যাগপত্তর রেখে শহরটা ঘুরে নেওয়া যেতে পারে।

অসলো যাওয়ার জন্য জাহাজ ছাড়ে ডেনমার্কের ওস্তাপোর্ট থেকে। যাঁরা সুইডেন থেকে যাবেন, তাঁদের প্রথমে আসতে হবে ওস্তাপোর্ট স্টেশনে। সেখান থেকে দেড় কিলোমিটার হেঁটে ডিএফডিএস টার্মিনাল। দেখা যাবে নীল জলরাশির বুকে প্রকাণ্ড একটি জাহাজ। বিকেল চারটে নাগাদ এই জাহাজ ছাড়ে। যদি ফেরার টিকিট পরদিনই থাকে, তা হলে অসলো পৌঁছে জাহাজের কেবিনেই ব্যাগপত্তর রেখে শহরটা ঘুরে নেওয়া যেতে পারে।

০৭ ১৬
আনুমানিক ১০৪০ খ্রীষ্টাব্দে অসলো শহরের পত্তন ঘটে। তখন ভাইকিং যুগের শেষ প্রায়। আন্দাজ করা যায়, বন্দর শহরের গুরুত্ব ভাইকিংদের কাছে ছিল অপরিসীম। এই অঞ্চল ছিল মূলত ভিকেনের অধীনে। ধীরে ধীরে নরওয়ের প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে এই বন্দর নগরী। প্রথমে অসলো ছিল ডেনমার্কের অধীনে। তার পরে সুইডিশরা তাদের অধিকার জমায়। অবশেষে বিংশ শতাব্দীর প্রাক্কালে নরওয়ে স্বাধীন হওয়ার পরে অসলোর অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হতে থাকে রকেট গতিতে।

আনুমানিক ১০৪০ খ্রীষ্টাব্দে অসলো শহরের পত্তন ঘটে। তখন ভাইকিং যুগের শেষ প্রায়। আন্দাজ করা যায়, বন্দর শহরের গুরুত্ব ভাইকিংদের কাছে ছিল অপরিসীম। এই অঞ্চল ছিল মূলত ভিকেনের অধীনে। ধীরে ধীরে নরওয়ের প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে এই বন্দর নগরী। প্রথমে অসলো ছিল ডেনমার্কের অধীনে। তার পরে সুইডিশরা তাদের অধিকার জমায়। অবশেষে বিংশ শতাব্দীর প্রাক্কালে নরওয়ে স্বাধীন হওয়ার পরে অসলোর অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হতে থাকে রকেট গতিতে।

Advertisement
০৮ ১৬
যদিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এই বৃদ্ধিতে ভাটা পরে সাময়িক ভাবে। আবার ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত এই বৃদ্ধি পৌঁছয় চরমে। পৃথিবীর মানচিত্রের একটি প্রথম শ্রেণির শহর অসলোর চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ভাইকিং যুগের নানা ইতিহাস। যত্ন করে সাজানো এই শহরের মানুষরা কিন্তু খুব সাহসী। হতেই হবে। ভাইকিংদের রক্ত বইছে যে এদের ধমনীতে!

যদিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এই বৃদ্ধিতে ভাটা পরে সাময়িক ভাবে। আবার ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত এই বৃদ্ধি পৌঁছয় চরমে। পৃথিবীর মানচিত্রের একটি প্রথম শ্রেণির শহর অসলোর চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ভাইকিং যুগের নানা ইতিহাস। যত্ন করে সাজানো এই শহরের মানুষরা কিন্তু খুব সাহসী। হতেই হবে। ভাইকিংদের রক্ত বইছে যে এদের ধমনীতে!

০৯ ১৬
জাহাজ অসলোতে ঢোকার সময়ে প্রথমেই চোখে পড়বে অসলো ফিয়র্ড। ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জের বেষ্টনীতে আবদ্ধ রয়েছে দুরন্ত সফেন সমুদ্র। মাঝে মধ্যে দুয়েকটা বাড়িও চোখে পড়ে। যাঁরা থাকেন সেই সব বাড়িতে, তাঁদের রয়েছে নিজস্ব জলবাহন।

জাহাজ অসলোতে ঢোকার সময়ে প্রথমেই চোখে পড়বে অসলো ফিয়র্ড। ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জের বেষ্টনীতে আবদ্ধ রয়েছে দুরন্ত সফেন সমুদ্র। মাঝে মধ্যে দুয়েকটা বাড়িও চোখে পড়ে। যাঁরা থাকেন সেই সব বাড়িতে, তাঁদের রয়েছে নিজস্ব জলবাহন।

১০ ১৬
অসলোতে দিন শুরু করা যেতে পারে অকেসুস দুর্গ দেখে। নরওয়ের বহু ইতিহাস বহু ঘটনার সাক্ষী এই দুর্গ। তার পরে শুরু করা যায় পায়ে পায়ে সবুজ অভিযান। অসলো শহরের ফুসফুস হল বহু সংখ্যায় ছড়িয়ে থাকা পার্কগুলি। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফ্রগনে পার্ক, তয়েন পার্ক, ভিগল্যান্ড পার্ক ইত্যাদি। বিশেষ করে ফ্রগনে পার্কের সৌন্দর্য বর্ণনাতীত। সারা বছর ধরেই মানুষের ঢল নামে এই পার্কে।

অসলোতে দিন শুরু করা যেতে পারে অকেসুস দুর্গ দেখে। নরওয়ের বহু ইতিহাস বহু ঘটনার সাক্ষী এই দুর্গ। তার পরে শুরু করা যায় পায়ে পায়ে সবুজ অভিযান। অসলো শহরের ফুসফুস হল বহু সংখ্যায় ছড়িয়ে থাকা পার্কগুলি। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফ্রগনে পার্ক, তয়েন পার্ক, ভিগল্যান্ড পার্ক ইত্যাদি। বিশেষ করে ফ্রগনে পার্কের সৌন্দর্য বর্ণনাতীত। সারা বছর ধরেই মানুষের ঢল নামে এই পার্কে।

১১ ১৬
কিন্তু হেমন্ত যেন বিয়ের বাসর সাজায় নিজের হাতে। সুদৃশ্য ঐতিহাসিক একটি মোনোলিথ রয়েছে এই পার্কে। এ ছাড়া ‘দি অ্যাংরি বয়’, ‘লিঙ্কয়েন’-এর মূর্তি– এগুলিও চোখে পড়বে হাঁটতে হাঁটতে। অসলো গেলে এই পার্কে অবশ্যই এক বার যাওয়া উচিত।

কিন্তু হেমন্ত যেন বিয়ের বাসর সাজায় নিজের হাতে। সুদৃশ্য ঐতিহাসিক একটি মোনোলিথ রয়েছে এই পার্কে। এ ছাড়া ‘দি অ্যাংরি বয়’, ‘লিঙ্কয়েন’-এর মূর্তি– এগুলিও চোখে পড়বে হাঁটতে হাঁটতে। অসলো গেলে এই পার্কে অবশ্যই এক বার যাওয়া উচিত।

১২ ১৬
এ ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন মিউজিয়াম ও একটি ঐতিহাসিক অপেরা হাউস। মাঞ্চ মিউজিয়াম এ রকমই একটি দ্রষ্টব্য। ঊনিশ শতকের শেষে জন্মানো বিখ্যাত নরওয়েজিয়ান চিত্রশিল্পী ছিলেন ‘এডওয়ার্ড মাঞ্চ’। তাঁর আঁকা বহু চর্চিত ছবি দেখতে পাওয়া যাবে এখানে।

এ ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন মিউজিয়াম ও একটি ঐতিহাসিক অপেরা হাউস। মাঞ্চ মিউজিয়াম এ রকমই একটি দ্রষ্টব্য। ঊনিশ শতকের শেষে জন্মানো বিখ্যাত নরওয়েজিয়ান চিত্রশিল্পী ছিলেন ‘এডওয়ার্ড মাঞ্চ’। তাঁর আঁকা বহু চর্চিত ছবি দেখতে পাওয়া যাবে এখানে।

১৩ ১৬
ফার্ম মিউজিয়ামও বেশ ভাল। বিখ্যাত ভূপর্যটক আমুন্ড সেনের ব্যবহৃত বহু জিনিস রয়েছে সেখানে।

ফার্ম মিউজিয়ামও বেশ ভাল। বিখ্যাত ভূপর্যটক আমুন্ড সেনের ব্যবহৃত বহু জিনিস রয়েছে সেখানে।

১৪ ১৬
ভাইকিং মিউজিয়াম বলবে ভাইকিংদের ইতিহাস। সেখানে রয়েছে ভাইকিংদের তৈরি বিরাট একটি জাহাজ। আসলে জাহাজ, নৌবহর, বন্দর, অভিযান এই নিয়েই তো অসলো। তাই বারবার মনে হবে এই শহরের পরতে পরতে রয়েছে সাহসিকতার পদধ্বনি। কান পাতলেই শোনা যাবে দুর্ধর্ষ সব গল্প।

ভাইকিং মিউজিয়াম বলবে ভাইকিংদের ইতিহাস। সেখানে রয়েছে ভাইকিংদের তৈরি বিরাট একটি জাহাজ। আসলে জাহাজ, নৌবহর, বন্দর, অভিযান এই নিয়েই তো অসলো। তাই বারবার মনে হবে এই শহরের পরতে পরতে রয়েছে সাহসিকতার পদধ্বনি। কান পাতলেই শোনা যাবে দুর্ধর্ষ সব গল্প।

১৫ ১৬
আবহাওয়া ভাল থাকলে অসলো ফিয়র্ডের পিছনে সূর্যাস্ত দেখাটা তালিকায় রাখা যেতে পারে।

আবহাওয়া ভাল থাকলে অসলো ফিয়র্ডের পিছনে সূর্যাস্ত দেখাটা তালিকায় রাখা যেতে পারে।

১৬ ১৬
এই সময়ে সমুদ্রের তীরে বসে গ্রিলড ওয়াইল্ড ক্যাচ স্যামনের সঙ্গে হোয়াইট ওয়াইনের চুমুক আপনাকে উপহার দিতে পারে এক মোহময়ী না-ভোলা মুহূর্ত! এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

এই সময়ে সমুদ্রের তীরে বসে গ্রিলড ওয়াইল্ড ক্যাচ স্যামনের সঙ্গে হোয়াইট ওয়াইনের চুমুক আপনাকে উপহার দিতে পারে এক মোহময়ী না-ভোলা মুহূর্ত! এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি