Hooghly Heritage temple

ছ’তলা মন্দির, শিবের নাভি থেকে উত্থিত রক্তপদ্মে অধিষ্ঠান, দেবী হংসেশ্বরীকে দেখতে আসতেন স্বয়ং রামকৃষ্ণদেব

হুগলি জেলার হংসেশ্বরী মন্দিরে চতুর্ভুজা দেবী পদ্মাসনে অধিষ্ঠান করছেন। দেবীর এক পা ভাঁজ করে রাখা এবং আর এক পা রয়েছে মহাদেবের বুকের উপর।

Advertisement
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৫৩
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মা কালীর যে কত রূপ তা হয় তো গুণে শেষ করা যায় না। এমনিই এক রূপের দেখা মেলে হুগলি জেলার হংসেশ্বরী মন্দিরে। চতুর্ভুজা দেবী এখানে পদ্মাসনে অধিষ্ঠান করছেন। দেবীর এক পা ভাঁজ করে রাখা এবং আর এক পা রয়েছে মহাদেবের বুকের উপর। কথিত, রামকৃষ্ণদেব প্রায়ই এই মন্দিরে আসতেন।

Advertisement

মন্দিরের কারুকাজেও রয়েছে বিশেষত্ব। ৭০ ফুট উচ্চতার ৬ তলা মন্দির এবং এই মন্দিরে চূড়া রয়েছে ১৩টি। জনশ্রুতি রয়েছে, উত্তরপ্রদেশের চুনার থেকে এই মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য পাথর এসেছিল এবং রাজস্থানের জয়পুর থেকে কারিগরদের আনা হয়েছিল। প্রতিটি চূড়া পদ্মফুলের আকৃতির। তান্ত্রিক নীতি অনুসারে নির্মিত এই মন্দির মানবদেহের গঠন অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে - ইরা, পিঙ্গলা, বজরাক্ষ, সুষুম্না এবং চিত্রিণী।

হংসেশ্বরী মন্দির

হংসেশ্বরী মন্দির

আনুমানিক ২০৯ বছর আগে রাজা নৃসিংহদেব রায় হুগলির বাঁশবেড়িয়ায় এই মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেন। কিন্তু ১৮০২ সালে তাঁর মৃত্যু হলে, তাঁর স্ত্রী রানি শঙ্করী এই মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করেন।

প্রচলিত গল্প অনুসারে, রাজা নৃসিংহদেব, ১৭৯২ থেকে ১৭৯৪ সাল পর্যন্ত বারাণসীতে থাকার সময় তিনি মানবতন্ত্রের ‘কুন্ডলিনী’ এবং ‘ছয় চক্রীয় কেন্দ্র (ছয় চক্র)’ সম্পর্কে শিখেছিলেন। ব্রিটেনে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে তিনি এই ‘কুন্ডলিনী এবং যোগিক ধারণার’ উপর ভিত্তি করে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেন।

মন্দিরের গর্ভগৃহকে মনে করা হয় মূলাধার। এখানে পাথরের বেদীর উপর খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে অষ্টদল পদ্ম, যার উপর শায়িত আছেন মহাদেব। তাঁর নাভি থেকে উত্থিত ১২টি পাপড়ি বিশিষ্ট রক্ত লাল পদ্মে মা অধিষ্ঠান করছেন।

দ্বীপান্বিতা অমাবস্যায় দেবীকে কিছু ঘন্টার জন্য সাজানো হয় রাজবেশে। দেবী ছাড়াও মন্দিরের তিন তলায় রয়েছে কষ্টিপাথরের ১২টি শিবলিঙ্গ।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আরও পড়ুন
Advertisement