মা কালীর আরাধনায় খানিক বিরতি। নিজের লাল গাড়ির উপর চড়ে বসলেন রামকৃষ্ণ। জানবাজারের কূটকচালি ছেড়ে রিল ভিডিয়োয় ব্যস্ত পদ্মমণি। বন্দুক নামিয়ে বিলাসবহুল হোটেলের বাথটবে শুয়েই পড়লেন ভোপাল। আনন্দবাজার অনলাইনের শ্যুটে স্বাগত পাঠক।
চশমা পরা পড়ুয়া শ্রীতমা ভোল বদলে বিলিতি মডেল। দাদার সঙ্গে খুনসুটি ছেড়ে সুপারমডেল শ্রীনিপা। জমিদার বাড়ির জামাই রাঘব সেধেই নিলেন রামকৃষ্ণের কেশসজ্জার দায়িত্ব।
শাড়ি, গয়না, শাঁখা, সিঁদুর। অথবা পাজামা পাঞ্জাবি, কুর্তা, প্যান্ট— ধারাবাহিকের চরিত্রদের গতানুগতিক সাজেই অভ্যস্ত দর্শক। আনন্দবাজার অনলাইনের সুবাদে তারই এ বার উলটপুরাণ।
সকাল সকাল চিনার পার্কের হোটেলে পৌঁছে গিয়েছিলেন ছোটপর্দার ছয় শিল্পী— সৌরভ সাহা, দিয়া চক্রবর্তী, দিয়া মুখোপাধ্যায়, ঐন্দ্রিলা সাহা, বিশ্বাবসু বিশ্বাস এবং অমিতাভ দাস।
খুদেতম সদস্য ঐন্দ্রিলা (‘মিঠাই’-এর শ্রীনিপা) শ্যুটে এসেই ঘুমের দেশে। ছ’জনের সাজগোজ শেষ হতে ঐন্দ্রিলার ‘দিদি’ দিয়া (‘মিঠাই’-এর শ্রীতমা) আদর করে ঐন্দ্রিলাকে ঘুম থেকে তুলে সাজতে বসালেন।
দিয়া (‘রাসমণি’-র পদ্মমণী) আর বিশ্বাবসু (‘রাসমণি’-র ভোপাল, ‘মিঠাই’-এর প্রাক্তন সন্দীপ) তত ক্ষণে রিল ভিডিয়োয় মজে। সৌরভের (‘রাসমণি’-র গদাধর) কেশ-ভার নিয়ে ফেলেছেন অমিতাভ (‘রাসমণি’-র রাঘব)।
চাউমিন, স্যান্ডউইচ, মোমোয় জমজমাট পেটপুজো। দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে সোজা মাঠে নেমে পড়লেন সবাই। হাসাহাসি, আড্ডায় জমজমাট ফোটোশ্যুট তার পরেই।
মডেলদের সাজগোজের দায়িত্বে ছিলেন বুকুন (দেবত্রী)। ধারাবাহিকে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের চিরাচরিত সাজে দেখতে চাননি। তাই দেবাশিসের (দেবু’জ) পোশাক পরিয়েছেন মডেলদের। তাঁরই গয়না সাজ-সঙ্গী।
ছ’জন ঘনিষ্ঠ হয়ে ছবি তোলার পালা। দিয়া (চক্রবর্তী) সৌরভকে বলে উঠলেন, ‘‘দেখো, তোমার বৌ আমায় মারবে না তো?’’ নিমেষে হাসির রোল। দিয়া (মুখোপাধ্যায়) এবং বিশ্বাবসু কাছাকাছি আসতেই দেবাশিস বলে উঠলেন, ‘‘ধারাবাহিকের দাদা-বোন এখানে প্রেমিক-প্রেমিকা!’’
কাজের ফাঁকে হঠাৎই লাল গাড়ির বনেটে চড়ে বসেছেন ‘রামকৃষ্ণ’। চিত্রগ্রাহক অরিন্দম মণ্ডলকে ডেকে ক্যামেরাবন্দিও হল সে মুহূর্ত। আর দূর থেকে তাঁর কাণ্ডকারখানা দেখে হাসি চেপে রাখতে পারলেন না বাকিরা।
সময় নষ্ট ‘মহাপাপ’! দিয়া (চক্রবর্তী) আর অমিতাভ তাই ইনস্টাগ্রামের ঝুলি ভরায় মন দিলেন। তৈরি হতে থাকল রিলের পর রিল।
ঘুম থেকে উঠে ঐন্দ্রিলা সকলের চেয়ে বেশি চঞ্চল। ক্যামেরার সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে অভিব্যক্তি পাল্টাচ্ছিলেন ১৯ বছরের অভিনেত্রী।
বিশ্বাবসুকে বাথটাবে শুইয়ে দিতেই খুনসুটি শুরু দুই দিয়া-র। ‘‘কী রে তোর স্নান শেষ হল? এ বার ওঠ।’’ হাসিতে গড়িয়ে পড়লেন দুই কন্যে।
শিল্পী নবীন দাসের রূপটানে, দেবাশিসের পোশাক ও গয়নায় সেজে উঠে, অরিন্দমের ক্যামেরাবন্দি হয়ে বেজায় খুশি ছয় শিল্পীই। সাতসকাল থেকে বিকেল, লাগাতার কাজ করেও ক্লান্তির ছাপটুকুও দেখা গেল না কারও মধ্যেই।
ছবি: অরিন্দম মণ্ডল। রূপটান: নবীন দাস। সাজ: বুকুন। পোশাক ও গয়না: দেবাশিস। স্থান: হাওয়ার্ড জনসন হোটেল, চিনারপার্ক। সহযোগিতা: তন্ময় বসাক। পরিকল্পনা: তিস্তা রায় বর্মণ।