Ananda Utsav 2024

ফ্যান কেনার টাকাও নেই লোকটির, বিয়ের পর প্রথম পুজোতেও মন খারাপ, লিখলেন সন্দীপ্তা

আমি আর সৌম্য পুজোর শেষের দিকে বেড়াতে যাচ্ছি। তবে অষ্টমীর অঞ্জলি কোনও ভাবেই বাদ দেওয়া যায় না। তাই ওই দিন পর্যন্ত কলকাতা শহরেই কাটাব দু’জনে।

Advertisement
সন্দীপ্তা সেন
সন্দীপ্তা সেন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৩৮
স্বামী সৌম্য মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনেত্রী সন্দীপ্তা সেন

স্বামী সৌম্য মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনেত্রী সন্দীপ্তা সেন

পুজো মানেই আমার কাছে রাইড চড়া। আমার বাড়ি ভবানীপুরে। পুজোর কয়েকটা দিন কারও বারণ শুনতাম না। শেষের দিকে দশমীর পরে আমার থেকে আর টাকা নিতেন না কেউ। এত রাইড চড়তাম বলেই এই সুবিধাটা পেতাম আমি। ব্যস, সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে ছাড়িনি কখনও! একটু বড় হওয়ার পরে আর পাঁচটা বাঙালির মতোই পুজো এলে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ঘোরাফেরা, খাওয়া দাওয়া, আর প্যান্ডেলে দেদার আড্ডা। এখন একটু পরিচিত হওয়ার পরে প্যান্ডেল হপিং করা যায় না। বদলে বাড়িতেই বন্ধুদের ডেকে আড্ডা আর পেটপুজো। যদিও পুজো পরিক্রমার দৌলতে অনেক ঠাকুর দেখা হয়ে যায়।

Advertisement

এ বছর আন্দোলনের আবহে পুজোর আমেজ অনেকটাই ফিকে হয়ে গিয়েছে। বিচারের দাবিতে সকলেই সোচ্চার। আমাদের প্রত্যেকের মনেই বড় দাগ কেটে গিয়েছে। যত ক্ষণ না বিচার পাচ্ছি, তত ক্ষণ সেই ক্ষত সারবে না। তিলোত্তমার ঘটনার পরে নারীসুরক্ষা নিয়ে সবার মনেই বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়ে গিয়েছে। কমবেশি ছিলই। কিন্তু এখন সেই চিহ্নটা যেন আরও প্রকট।

তবে এটাও ঠিক, লক্ষ লক্ষ মানুষ সারা বছর এই সময়টার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করলে বহু মানুষের রুজিরুটি জড়িয়ে পুজোকে ঘিরে। তাই পুজো হওয়াটা জরুরি। আমার পরিচিত এক টেকনিশিয়ান বলছিলেন, এ বার পুজোয় কাজ এত কম এসেছে যে ঘরে ফ্যানটা পর্যন্ত কিনতে পারেননি। শুনে কান্নায় গলা ভারী হয়ে এসেছিল আমার। কতশত মানুষ এমনই দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন হয়তো। কী-ই বা করতে পারছি। তাই পুজো দরকার। আর মা দুর্গার তো এটা বাপের বাড়ি। তাই ঘরে এলে আপ্যায়ন তো করতেই হবে। পুজোয় তাই খামতি থাকবে না। কিন্তু মায়েরও মন খারাপ তিলোত্তমার জন্য। তিনি নিশ্চয়ই আমাদের মনের মধ্যে সেই শক্তি জোগাবেন, যাতে আমরা আরও তীব্র প্রতিবাদ করতে পারি।

এ বারের পুজো আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ের পরের প্রথম পুজো তো পরে আর কখনও আসবে না। আমি আর সৌম্য (মুখোপাধ্যায়) পুজোর শেষের দিকে বেড়াতে যাচ্ছি। তবে অষ্টমীর অঞ্জলি কোনও ভাবেই বাদ দেওয়া যায় না। তাই ওই দিন পর্যন্ত কলকাতা শহরেই কাটাব দু’জনে। আমাদের ছোটবেলা কেটেছে ৯০ দশকের সময়। তাই পুরনো দিনের মতো প্রেম করতে ভালবাসি আমরা। শাড়ি আর পাঞ্জাবী পরে ঠাকুর দেখা, অঞ্জলি দেওয়া— এ ভাবেই কাটবে পুজোর শুরুর কয়েকটা দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement