Actor Durga puja Memory

ছোটবেলায় পুজোয় বন্ধুরা দু’দলে ভাগ হয়ে কেউ চোর হতাম, কেউ বা পুলিশ, লিখলেন সোহম

মা দুর্গার কাছে আমি প্রার্থনা করব, ঘটনাটিতে রাজনীতির রং না লাগিয়ে সঠিক পথে বিচার চাওয়া উচিত। যে বা যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের কঠিনতম শাস্তি দিতে হবে।

Advertisement
সোহম চক্রবর্তী
সোহম চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:২০
সোহম চক্রবর্তী

সোহম চক্রবর্তী

নতুন জুতো আর ক্যাপ বন্দুক। পুজো যদি হয় খুড়োর কল, আমার কাছে এই দুই ছিল ‘মন্ডা, মিঠাই, চপ্-কাটলেট্, খাজা কিংবা লুচি’। সারা বছর তাকিয়ে থাকতাম এই দু’য়ের দিকে। জামাকাপড় নিয়ে বেশি ভাবনা ছিল না। জুতো যেন নতুন হয়, সে-ই নিয়েই যত চিন্তা। আর কোন মার্কা ক্যাপ আসবে, সাপ মার্কা, সিংহ মার্কা নাকি কোকিল মার্কা, না কি অন্য কিছু, এই নিয়েই কাটত আমার পুজো।

Advertisement

আমাদের বাড়ির সামনেই বড় মাঠ। সেখানেই দুর্গাপুজো হতো। পাড়ার প্যান্ডেলে যখন থেকে বাঁশ বাঁধা শুরু হলেই, পড়াশোনায় আর মন বসত না। ধীরে ধীরে আলো এসে পড়ত বাড়ির দেওয়ালে। তার পর কোলাহল। একদম শূন্য থেকে শুরু। দশমীর পর আবার শূন্যে ফিরে যাওয়া। সবটা ভীষণ কাছেই ঘটত আমার। পুজো এসে গেলে বন্ধুরা মিলে দু’টি দলে ভাগ হয়ে যেতাম। কেউ চোরের দল হত। কেউ বা পুলিশের দল। তার পরে ক্যাপ বন্দুক নিয়ে মেতে থাকতাম সারা দিন। ভলান্টিয়ার হয়ে পুজোর দায়িত্ব নেওয়ায় যে কী উৎসাহ ছিল আমাদের, ভাবা যায় না! ওই মাঠটা খুবই প্রিয় ছিল। কত যে স্মৃতি! আমার নতুন ছবি ‘শাস্ত্রী’তে একটি পুজোর গান আছে। সেটাও আমার পুরনো বাড়ির ওই মাঠে শ্যুট করা।

ধীরে ধীরে পরিচিতি বাড়ার পর থেকে পুজো অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। খুব অল্প কয়েকটা পুজো দেখে উঠতে পারি। আমি চাই না, আমি ঠাকুর দেখতে গেলে আমার জন্য ১০টা মানুষ দাঁড়িয়ে থাকুক। কিন্তু আমিও সাধারণ মানুষ। আমারও পরিবার আছে। সন্তানরা আছে। তাঁর আবদারও মেটাতে হয়। তাই নতুন বাড়ির কমপ্লেক্স পুজোতেই নিজেদের মতো সময় কাটাই আমরা। পুরনো বাড়ির মতো সেই মাঠ আর নেই বটে, কিন্তু কমপ্লেক্সের পুজোটাই এখন বাড়ির পুজোর মতো হয়ে গিয়েছে।

এখন ক্যাপ বন্দুক আর জুতোর বদলে আমার অপেক্ষা থাকে অষ্টমীর অঞ্জলি আর ঢাক বাজানো। এখন নিজের পুজোর থেকে সন্তানদের পুজোর আনন্দ উদযাপন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গিয়েছে আমার কাছে।

এই বছরের পুজো কিঞ্চিত আলাদা। আর জি করের ধর্ষণের ঘটনার মতো অনভিপ্রেত ঘটনার কারণে সকলের মন খারাপ। অন্য বারের মতো আনন্দ, উন্মাদনার পরিমাণ বেশ অনেকটা কম এ বার। আমাদেরই ঘরের মেয়ের সঙ্গে, বোনের সঙ্গে এটি ঘটেছে। মা দুর্গার কাছে আমি প্রার্থনা করব, ঘটনাটিতে রাজনীতির রং না লাগিয়ে সঠিক পথে বিচার চাওয়া উচিত। যে বা যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের কঠিনতম শাস্তি দিতে হবে। সেটা যেন ফাঁসি হয়। আগামী দিনে যেন এমন ঘৃণ্য অপরাধ করার সাহস না পায় কেউ। মানুষের মন যেন শুদ্ধ হয়। মায়ের পুজোর মাধ্যমেই যেন বিচার আসে।

এই প্রতিবেদনটি আনন্দ উৎসব ফিচারের একটি অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement