২০১৩ থেকে এত বছর ধরে ‘এসএসপিসি’ প্রতি বছর দুর্গা-কালী-সরস্বতী পুজো করে।
২০১৩ সালে কয়েক জন স্টকহলম-উপসালাবাসীর উদ্যোগে যথার্থ অর্থে সর্বজনীন দুর্গাপুজোর ভাবনা বাস্তবায়িত হয়। সর্বজনীন শব্দটির অর্থ অনুধাবনে ‘স্টকহলম সর্বজনীন পূজা কমিটি’ (এসএসপিসি) ধর্ম-বর্ণ-অর্থ বৈষম্যকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। এত বছর ধরে ‘এসএসপিসি’ প্রতি বছর দুর্গা-কালী-সরস্বতী পুজো করে। সপ্তাহান্তের দিনগুলিতে অর্থাৎ শুক্র থেকে রবিবার পুজো হয়। কয়েক বার সপ্তাহান্তে সপ্তমী থেকে দশমী পড়ায় ভাল ভাবে পুজো উদ্যাপন করা হয়। তবে এ বার এক দিনেই পুজো সারা হবে।
প্রথম দু’বছর সুইডেনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের পরামর্শে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে পুজোর দিনগুলি পালিত হয়েছিল। একাধিক বার ভারতীয় ও বাংলাদেশের দূতাবাসের প্রধান দূত ও আধিকারিকরা যোগদান করে আমাদের উৎসাহ দিয়েছেন। গত ৮ বছরে আমরা যেমন অনেক লোককে সংগঠনের সঙ্গে পেয়েছি, অনেককে আবার হারিয়েওছি। ২০২০ সালে পুজো হয়নি। প্রধান পুরোহিত বিষ্ণুপদ চক্রবর্তীর বাড়িতে সংগঠনের ২/৩ জন কর্মীর সাহায্যে পূজারীতি অনুসরণ ও পালন করা হয়। তবে পুরো পুজোটি অনলাইনে দেখার সুযোগ ছিল। গত ২৯ সেপ্টেম্বর এ দেশে কোভিড-বিধিনিষেধ সম্পূর্ণ ভাবে উঠে গিয়েছে। বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার কারণে ‘এসএসপিসি’ সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে দুর্গাপুজো। পুজো যেখানে হবে, সেই সীমিত আয়তনে নির্দিষ্ট সংখ্যক দর্শককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে যাঁদের সব ক’টি টিকা হয়ে গিয়েছে এবং যাঁরা অসুস্থ নন, তাঁদেরকেই করোনা-বিধি মেনে যোগদানের অনুরোধ করা হয়েছে।
পুজোর প্রসাদ ও দ্বিপ্রাহরিক আহারের পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ‘এসএসপিসি’। মিলনমেলায় যোগদানকারীরা তাঁদের প্রতিভাকে সকলের সামনে তুলে ধরার সুযোগ পাবেন। বাচ্চাদের জন্য একটি সাধারণ জ্ঞানের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রকাশিত হবে একটি স্মারক পত্রিকা। অনুষ্ঠানের শেষে থাকবে নৈশাহার। অন্যান্য বারের মতো একাধিক দিন পুজো পালনের ইচ্ছা থাকলেও সরকারি নির্দেশ একেবারে শেষ মুহূর্তে এসেছে। তাই আমরা একটি দিনেই আনন্দের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে সাফল্যমণ্ডিত করে তুলব। ভারত-বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অনেকে আমাদের পুজোয় আসেন, যাঁরা বাঙালি সংস্কৃতি ভালবাসেন। অনেক পড়ুয়া আছেন যাঁরা আর্থিক ভাবে তেমন সচ্ছল নন। তাঁদের কাছে এই পুজো বাড়ির পুজোর মতো।