করাচি বিমানবন্দরে জঙ্গি হামলার ঘটনার আজ তীব্র ভাষায় নিন্দা করল নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের থমকে যাওয়া শান্তি প্রক্রিয়া ফের শুরু করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তখনই নওয়াজ শরিফের সরকারকে অস্থির করার এই চেষ্টা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
কূটনীতিকদের মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পাক নেতৃত্বের বৈঠকের প্রেক্ষিতেই এই হামলা হয়েছে এমনটা নাও হতে পারে। এর পিছনে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা ও তালিবানি সন্ত্রাস দায়ী বলে অনুমান ভারতীয় গোয়েন্দাদের।
আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরুদ্দিন হামলার নিন্দা করে জানান, “দশ জঙ্গির এই হামলার কঠোর নিন্দা করা উচিত।” কূটনৈতিক শিবিরের মতে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে ইসলামাবাদকে একটি বার্তাও দিতে চেয়েছেন ভারতীয় নেতৃত্ব। দেশ বা প্রেক্ষিত নির্বিশেষে সন্ত্রাসবাদ যে সমূলে বর্জনীয় এ কথা ইসলামাবাদকে জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
আজ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় তাঁর বক্তৃতায় সরব হয়েছেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানের নাম না করলেও গোটা অঞ্চলের সুস্থিতি বজায় রাখতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে সন্ত্রাস পাচার করা বন্ধ করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি। ভারতে সন্ত্রাসে পাক মদত বন্ধ করার বিষয়টি নয়াদিল্লি এ ভাবে কৌশলে তুলে ধরেছে বলে মত কূটনীতিকদের।
এই বছরের শেষে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে চলেছে আমেরিকা। এই ঘটনাটি পাকিস্তান তো বটেই গোটা অঞ্চল তথা ভারতের কাছেও বড় চ্যালেঞ্জ। গোটা অঞ্চলের ভূকৌশলগত নিরাপত্তা এর পর কী ভাবে সামালানো যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে।
সম্প্রতি আফগানিস্তানের হেরাটে ভারতীয় দূতাবাসে হামলা হয়েছে। সে দেশের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এসে মোদীকে জানিয়েছেন এর পিছনে লস্কর-ই-তইবা জঙ্গিরা রয়েছে। গত রাতের ঘটনার বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, জঙ্গিরা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে পাক সেনার সঙ্গে যুদ্ধের মহড়া নিয়েছে। ভবিষ্যতে এই অশান্তির জের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের দিকেও আসতে পারে বলে আশঙ্কা নয়াদিল্লির। করাচি বিমানবন্দরে হামলার জেরে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে কাল উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
দু’দিন আগে ওয়াজিরিস্তানে তালিবানদের উপর অভিযান করা হবে বলে ঘোষণা করেছিল পাক সেনা। সেনা মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, স্থানীয় উপজাতিদের সাহায্য নিয়ে এই অভিযান শুরু করা হবে। পাক সেনার দাবি, উত্তর ওয়াজিরিস্তানে তালিবান জঙ্গিদের একটি বড় দল ঘাঁটি গেড়েছে। তেহরিক-ই-তালিবান গোষ্ঠীর সঙ্গে নওয়াজ শরিফ সরকার আলোচনা শুরু করলেও কোনও কাজের কাজ হয়নি। ফলে, জঙ্গিরা শরিফ সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করে যাবে বলেই ধারণা নয়াদিল্লির।