দাম্পত্য প্রায় ভাঙনের মুখে। স্বামীকে একেবারেই সহ্য করতে পারছেন না। রাজপরিবারের প্রত্যেকে কিন্তু দুষছেন তাঁকেই।
এ হেন চাপের মধ্যে যুবরানি ডায়ানা চেয়েছিলেন, চার্লসকে সঙ্কটে ফেলতে। আর তাই রুপার্ট মার্ডকের ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ‘নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’-এর সাংবাদিককে রাজপরিবারের সব সদস্যের টেলিফোন নম্বর তুলে দিয়েছিলেন ডায়ানা। ওই ট্যাবলয়েডের প্রাক্তন সাংবাদিক ক্লাইভ গুডম্যান তেমনটাই দাবি করেছেন।
যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে ডায়ানার সম্পর্ক তখন প্রবল ঝড়ঝাপটার মুখে। বিবাহবিচ্ছেদের মামলা নিয়ে একটা তিক্ত অধ্যায় পেরোচ্ছিলেন যুবরানি। সবাই তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলছে। সংবাদমাধ্যমকেই ডায়ানা বন্ধু বলে মনে করছিলেন তখন। ১৯৯২-এ তাই রাজপরিবারের টেলিফোন ডিরেক্টরি সংবাদমাধ্যমকে দিয়েছিলেন যুবরানি। চেয়েছিলেন, এই ভাবে অন্তত চার্লসকে যদি চাপে ফেলা যায়।
ওই সব নম্বর দিয়ে ডায়ানা প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, চার্লসের কত জন পারিষদ স্থানীয় লোকজন রয়েছে। এবং তার পাশাপাশি ডায়ানা বোঝাতে চেয়েছিলেন, ওই পারিষদ দলের প্রত্যেকে তাঁকে ওই সঙ্কটজনক সময়ে ধারাবাহিক ভাবে বিরক্ত করে যেতেন। সাংবাদিক গুডম্যানকে ২০০৬ সালে রাজপরিবারের সদস্যদের ফোনে আড়ি পাতার জন্য গ্রেফতার করা হয়। পরের বছর তাঁর কারাদণ্ড হয়। আদালতে যখন গুডম্যানকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ওই নম্বরগুলি তিনি পেলেন কোথা থেকে? তখন গুডম্যান জানান, ডায়ানাই তাঁকে নিজে ওই নম্বরগুলি দিয়েছিলেন। দু’বার ফোন করে জানতেও চেয়েছিলেন, সেগুলি তাঁর কাছে পৌঁছেছে কিনা। ক্লাইভের কথায়, “তখন উনি খুব খারাপ সময়ের মধ্যে যাচ্ছিলেন। উনি নিজেই আমায় বললেন ওই নম্বর আমায় দিতে চান। তাঁর নিজের পারিষদের তুলনায় চার্লসের কত বেশি পারিষদ রয়েছে, সেটাও জানাতে চেয়েছিলেন তিনি। চার্লসের লোকজন তাঁকে খুব চাপে ফেলে দিয়েছিল।” সাংবাদিকের দাবি, ডায়ানা তখন কোনও বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু খুঁজছিলেন। আমাদের মতো প্রতিষ্ঠানের উপরে তাঁর ভরসা হয়েছিল। তবে গুডম্যান এটাও জানিয়েছেন, শুধ তিনি নন। ডায়ানা ভরসা করতেন এমন বেশ কয়েক জন সাংবাদিকের উপরেই। ১১ বছরের দাম্পত্যে ইতি টেনে চার্লসকে ছেড়ে ১৯৯২ সালে চলে আসেন ডায়ানা। আনুষ্ঠানিক ভাবে ডিভোর্স হয় আরও চার বছর পরে।