চলছে উদ্ধারকাজ। সোমবার সিন্ধু প্রদেশের ঘোটকিতে। ছবি: পিটিআই
পাকিস্তানের দক্ষিণ সিন্ধু প্রদেশে একই লাইনের উপরে দু’টি যাত্রিবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৫০ জনের। আহত শতাধিক। সোমবার ভোরবেলা সিন্ধু প্রদেশের ঘোটকি জেলার রেতি ও ধারকি স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে ঘটেছে এই দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হতেই উদ্ধারকার্য শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে উদ্ধারকাজ পুরো শেষ হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে প্রশাসনের আশঙ্কা।
রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, সোমবার ভোর সাড়ে ৩টের সময় করাচি থেকে সরগোদাগামী মিল্লত এক্সপ্রেসের বেশ কয়েকটি কামরা নিজের নির্দিষ্ট গতিপথ থেকে লাইনচ্যুত হয়ে পাশের লাইনে নেমে যায়। সে সময় বিপরীত দিক থেকে আসছিল রাওয়ালপিন্ডি থেকে করাচিগামী স্যর সৈয়দ এক্সপ্রেস। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মিল্লত এক্সপ্রেসের কামরাগুলির সঙ্গে সৈয়দ এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়। তার ফলেই এই দুর্ঘটনা।
সংঘর্ষের তীব্রতায় অন্তত ছ’টি কামরা দুমড়েমুচড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় কৃষক ও গ্রামবাসীরা প্রথম দুর্ঘটনার কথা জানতে পারেন।
ঘটনার সময় দুই ট্রেনের মোট ১২০০ জন যাত্রীর বেশির ভাগ ঘুমোচ্ছিলেন। ‘‘ট্রেনটা যখন অন্য লাইনে নেমে গেল, তখন আমরা মুখ থুবড়ে পড়লেও বিশেষ কিছু হয়নি। কিন্তু তার পরেই অন্য ট্রেনটা এসে ধাক্কা মারায় মরতে বসেছিলাম। আমার জ্ঞান যখন হল, তখন চারপাশে শুধু লাশ দেখতে পেয়েছি’’, সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন মিল্লত এক্সপ্রেসের যাত্রী আখতার রাজপুত। ধারকির পুলিশ আধিকারিক উমর তুফাইল জানিয়েছেন, মৃতদের মধ্যে বেশ কয়েক জন মহিলা ও রেলের কর্মচারীও রয়েছে।
মিল্লত এক্সপ্রেসের একটি বগি এখনও সৈয়দ এক্সপ্রেসের মূল ইঞ্জিনের তলায়, ফলে সেখান থেকে এখনও কাউকেই উদ্ধার করা যায়নি।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত একটি ভিডিয়ো ক্লিপে দেখা গিয়েছে ভাঙাচোরা একটি কামরায় আটকে থাকা একজন ব্যক্তিকে আই ভি ড্রিপ দিয়ে শুশ্রূষা করছেন উদ্ধারকারীরা।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই দুর্ঘটনায় মর্মাহত বলে জানিয়ে পূর্ণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রাক্তন রেল মন্ত্রী শেখ রশিদ জানিয়েছেন, যে লাইনে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তা ১৮৮০ সালে তৈরি। ফলে সেটির অবিলম্বে রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।