খাবার খেয়ে নদীর জলে বাসন ধুতে গিয়েছিলেন এক সেনা। তখনই চোখ আটকে যায় জলে পড়ে থাকা সোনালী রঙের চকচকে ধাতুর দিকে।
মুহূর্তে খবর ছড়িয়ে পড়ে নদীর জলে সোনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞ দল এসে হাজির হন সেই এলাকায়। শুরু হয় পরীক্ষা।
খবরটা একেবারেই ভুল ছিল না। সত্যিই সোনার সন্ধান মেলে ওই জলে। পর দিন থেকেই সোনার খনি হিসাবে চিহ্নিত হয়ে যায় ওই অঞ্চল।
রমরমিয়ে সোনা উত্তোলন শুরু হয় সেখানে। কিন্তু আজ সেই খনি পুরোপুরি পরিত্যক্ত। কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে আজও ভাঙাচোরা কিছু যন্ত্রপাতি এবং ইতিউতি পড়ে থাকা ধ্বংসাবশেষ ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়বে না।
খনিকে কেন্দ্র করে একসময়ে সোনার মতোই চকমকিয়ে উঠেছিল এই এলাকা। সোনার খনি পরিত্যক্ত হওয়ায় ক্রমশ এই এলাকাও তার জৌলুস হারিয়েছে। আজ শুধুই সোনার ইতিহাস বুকে নিয়ে রয়ে গিয়েছে এলাকাটি।
১৮৬১ সাল থেকে আমেরিকায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই সময় ওয়াশিংটনের কাছে মেরিল্যান্ড নামে একটি অঞ্চলে ঘাঁটি গেড়েছিল আমেরিকার সেনা।
পাশেই ছিল ক্যালিফোর্নিয়ার গ্রেট ফলস। ওই ঘাঁটিরই এক সেনা সেখানে বাসন ধুতে গিয়ে প্রথম সোনার মতো চকচকে বস্তুটি দেখতে পান।
তারপরই সেখানে মেরিল্যান্ড মাইন কোম্পানি গঠন হয়। বিস্তর পরীক্ষা নিরীনার পর প্রথম সোনা উত্তোলন শুরু হয় ১৮৬৭ সালে।
১৯৩৯ সাল পর্যন্ত টানা সোনা উত্তোলন করে ওই সংস্থা। কিন্তু তার পরই ওই সংস্থা বন্ধ হয়ে যায়। সংস্থার মূল্যবান সরঞ্জামও ক্রমশ হয় ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গিয়েছে কিংবা চুরি হয়ে গিয়েছে।
তবে এই এলাকায় এখনও সোনার সন্ধান পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন অনেকেই। কিন্তু কেন আচমকা বন্ধ হয়ে যায় খনিটি?
জানা যায়, এই অঞ্চলে খুব বেশি সোনা উত্তোলন হত না। ১৮৬৭ সাল থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত মাত্র ১৯০ কেজি সোনা উত্তোলন করতে পেরেছিল সংস্থা।
ফলে সোনার চাহিদা পূরণ হচ্ছিল না। বাজারে ওই সোনা বিক্রি করে উত্তোলনের খরচের জোগানও কমে আসছিল। ক্রমশ ক্ষতি হচ্ছিল কোম্পানির। তাই ঝাঁপ বন্ধ করে দেওয়া হয় সংস্থার।
আমেরিকায় এ রকম একাধিক সোনার খনি রয়েছে। কলোরাডো, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, ইদাহো, মিশিগান, মন্টানা, নিউ মেক্সিকো, নর্থ ক্যারোলিনাও সোনার খনি রয়েছে।
প্রথম ভার্জিনিয়ায় সোনার সন্ধান পাওয়া যায়। সেটি ছিল ১৭৮২ সাল। তবে আমেরিকার প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে সোনা উত্তোলন শুরু হয় নর্থ ক্যারোলিনার মিডল্যান্ডের রিড ফার্ম স্বর্ণখনিতে।