গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
চিনা পণ্য বয়কটের মতো বিরাট পদক্ষেপের দিকে না এগোলেও ৫৯টি অ্যাপ নিষিদ্ধ হয়েছে দেশে। বিএসএনএল-এর ৪জি পরিষেবায় চিনা পণ্য ব্যবহার না করা, ভারতীয় রেলে চিনা সংস্থার বরাত বাতিল থেকে শুরু করে চিন-বিরোধী একাধিক পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। নয়াদিল্লির সেই সব সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানাল বেজিং। চিনা বিদেশমন্ত্রকের এক মুখপাত্রের হুঁশিয়ারি, এই ভাবে ‘কৃত্রিম ব্লক’ তৈরি করলে আখেরে ভারতেরই ক্ষতি হবে। সীমান্তে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে দু’দেশের একযোগে কাজ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন ওই মুখপাত্র।
গালওয়ানে সংঘর্ষের জেরে দু’দেশের সম্পর্কের পারদ চড়েছে অনেকটাই। উত্তেজনা বেড়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাতেও। দু’পক্ষের মধ্যে কোর কমান্ডার পর্যায়ের সামরিক বৈঠক চলছে। কূটনৈতিক স্তরেও আলোচনার বার্তা দিয়েছে দুই দেশ। তার মধ্যে শুক্রবারই আবার প্রধানমন্ত্রী লাদাখের লেহ সেনা ঘাঁটি পরিদর্শন করে নাম না করেও চিনকে বার্তা দিয়েছেন। আর সেই দিনই বেজিং থেকে এল প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি।
চিনের বিদেশ মন্ত্রকের ওই মুখপাত্র এ দিন বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এ ভাবে ‘কৃত্রিম বাধা’ তৈরি করা হলে ভারতের স্বার্থই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে দু’দেশেরই উচিত একজোট হয়ে কাজ করা। ভারতে চিনের ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষা করতে বেজিং সব সময়ই সচেষ্ট থাকবে।
আরও পড়ুন: ইতিহাস সাক্ষী, মুছে যায় বিস্তারবাদীরা: লাদাখে দাঁড়িয়ে চিনকে বার্তা মোদীর
গত ১৫ জুন রাতে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন রক্তক্ষয়ী সেনা সংঘর্ষে ভারতীয় সেনার এক কর্নেল-সহ ২০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু বেজিংয়ের তরফে কমান্ডার পদমর্যাদার এক অফিসারের মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হলেও মোট কত জন মারা গিয়েছেন বা আহত হয়েছেন, তা এখনও জানানো হয়নি। ওই ঘটনার পর থেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে চিনা পণ্য বয়কটের দাবি উঠেছে। কিন্তু সেই বিরাট পদক্ষেপ না করলেও ৫৯টি চিনা অ্যাপ বয়কট করা, বিএসএনএল-এর ফোর জি প্রযুক্তিতে উত্তরণের প্রকল্পে চিনা পণ্য ব্যবহার বন্ধ করা, রেলের ইস্টার্ন ফ্রেট করিডোরে চিনা সংস্থার বরাত বাতিল, হাইওয়ে ও রাস্তা তৈরিতে চিনা সংস্থাকে বরাতে অংশ নিতে না দেওয়ার মতো একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। তার জেরেই চিনের এই পাল্টা হুঁশিয়ারি বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: ‘এমন কিছু করবেন না...’, মোদীর লাদাখ সফরের মাঝেই বলল চিন
যদিও চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র সাংবাদিক বৈঠকে এ দিন বলেছেন, ‘‘ভারত ও চিনের মধ্যে কথা চলছে। উত্তেজনা কমাতে সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চলছে। ফের উত্তেজনা তৈরি হোক, এমন কোনও কাজ থেকে দু’পক্ষেরই বিরত থাকা উচিত।