সরকারি হোক বা বেসরকারি। মাইনে নিয়ে কর্মচারীদের অভিযোগের যেন কোনও শেষ নেই। কিন্তু এমন একটি সংস্থা রয়েছে যেখানে না চাইতেই কর্মীদের বিপুল মাইনে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাও আবার এই কোভিড আবহেই।
যা করতে গিয়ে সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা তথা সিইও নিজের মাইনে কমিয়ে দিয়েছেন অনেকটাই! সংস্থা থেকে প্রতি বছরে কর্মচারীদের সমান মাইনে নিচ্ছেন তিনিও!
সংস্থাটির নাম গ্রাভিটি পেমেন্টস। আর কর্মীবান্ধব এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সরা বিশ্বের নজরে এসেছেন সংস্থার সিইও ড্যান প্রাইস।
মাত্র ১৯ বছর বয়সে গ্রাভিটি পেমেন্টস সংস্থা চালু করেন তিনি। তখন তিনি কলেজে পড়েন। কলেজের একটি ঘর থেকেই শুরু হয়েছিল গ্রাভিটি পেমেন্টস-এর যাত্রা।
গ্রাভিটি পেমেন্টস একটি ক্রেডিট কার্ড প্রসেসিং সংস্থা। ২০০৪ সালে ড্যান প্রাইস এবং তাঁর ভাই লুকাস সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন।
মাত্র ৪ বছরের মধ্যেই ওয়াশিংটনের সবচেয়ে বড় ক্রেডিট কার্ড সংস্থায় পরিণত হয় এটি। সংস্থাটির গ্রাহকের সংখ্যা এখন ১৫ হাজারেরও বেশি।
ওয়াশিংটনের বালার্ডে রয়েছে এর সদর দফতর। শ’দুয়েক কর্মী কাজ করেন এই সংস্থায়।
২০১৫ সালে ছোট্ট এই সংস্থাটি সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যখন এর সিইও ড্যান তাঁর সংস্থার প্রত্যেক কর্মীর বেতন অন্তত ৭০ হাজার ডলার করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
২০১৯ সালে প্রত্যেক কর্মীর বেতন ১০ হাজার ডলার বাড়িয়ে দেন তিনি। প্রতি বছরই এ ভাবে মাইনে বৃদ্ধি পাচ্ছে কর্মীদের।
২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতিটি কর্মীর মাইনে বছরে অন্তত ৭০ হাজার ডলার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ড্যান।
কঠিন সময়ে এবং মূল্যবৃদ্ধির আবহে যাতে কোনও কর্মচারীকেই সমস্যায় না পড়তে হয় তার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিইও ড্যান। এর জন্য ড্যান নিজের বার্ষিক মাইনেও কমিয়ে এনেছেন অনেকটাই।
ড্যান আগে বছরে সংস্থা থেকে ১০ লক্ষ ডলার মাইনে নিতেন। এখন তিনি বছরে মাত্র ৭০ হাজার ডলার বেতন নেন। অর্থাৎ ৯ লক্ষ ৩০ হাজার ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা।
ড্যানের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হতে পারেননি সংস্থার সহ প্রতিষ্ঠাতা এবং তাঁর ভাই লুকাস। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে আইনি লড়াইও চলেছে।
তবে দু’ভাইয়ের মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও এই সিদ্ধান্তে আখেরে সংস্থার লাভ হয়েছে অনেকটাই। ২০১৪ সালে যা লাভ করছিল সংস্থাটি ওই ঘোষণার পর তা দ্বিগুণ হয়ে যায়।
২০২০ সালে অতিমারির প্রভাব পড়ার আগে পর্যন্ত প্রতি মাসে ৪০ লাখ ডলার আয় করেছিল সংস্থাটি।
ড্যানের এখন বয়স ৩৬ বছর। ৩১ বছরেই ড্যান কোটিপতি হয়ে গিয়েছিলেন।
তাঁর মতে, যে সমস্ত ধনকুবের নিজেদের আয়ের সামান্য অংশ দান করেন বা হয়তো নিজের নামে কোনও হাসপাতাল বানান, বেশির ভাগই কর ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে এমন করে থাকেন। তিনি যে সে পথে হাঁটেত নারাজ তা-ও জানান তিনি।