ক্লিষ্ট, অনাহারপীড়িত এবং মৃতপ্রায় একটি আফ্রিকান শিশু মাঠে পড়ে রয়েছে আর তার ঠিক কয়েক হাত দূরেই একটি শকুন লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। যেন অপেক্ষা করছে শিশুটি মারা গেলেই ছিঁড়ে খাবে মহাআনন্দে। এই ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর সারা বিশ্বে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। আপনি, আমিও এই ছবি ফেসবুকে দেখেছি। কেউ কমেন্ট করেছি, কেউ বা করিনি। ছবির ভয়াবহতা দেখে আহা! উহু! করেছি। কিন্তু এই ছবির পিছনের কাহিনি আমরা অনেকেই জানি না। এই ছবির মতোই সেই কাহিনি আরও বেদনাদায়ক এবং হৃদয়বিদারক।
কী সেই কাহিনি?
ছবিটি তুলেছিলেন বিখ্যাত ফোটো জার্নালিস্ট কেভিন কার্টার। ১৯৯৩-এর মার্চে তিনি দুর্ভিক্ষপীড়িত দক্ষিণ সুদানে গিয়েছিলেন। সেখানেই একটি মাঠে এ রকম একটা ভয়ানক ছবি দেখে আঁতকে উঠেছিলেন। সেখান থেকে ফিরে এসে কেবিন লিখেছিলেন, “প্রায় ২০ মিনিট ধরে সেখানে ঠায় দাঁড়িয়েছিলাম শকুনটা ওড়ার অপেক্ষায়। শকুনটা কিছুতেই নিজের জায়গা থেকে নড়ল না। লোলুপ দৃষ্টিতে শিশুটির দিকে তাকিয়ে ছিল।” তিনি আরও লেখেন, গায়ে কাঁটা দেওয়া সেই ছবি মুহূর্তে ক্যামেরাবন্দি করেন। সারা বিশ্বে তাঁর ছবি নিয়ে কম চর্চা হয়নি! ছবিটির জন্য তিনি পুলিত্জার পুরস্কারও পেয়েছিলেন। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, পুরস্কার পাওয়ার মাত্র তিন মাসের মধ্যেই আত্মহত্যা করেন কেভিন। তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, ছবির ভয়বহতায় কেভিন মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। আলিঙ্গন করেছিলেন মৃত্যুকে।