COVID-19

ভারতীয় স্ট্রেন! আতঙ্ক ব্রিটেনে, হতে পারে আঞ্চলিক লকডাউন

সম্প্রতি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে জানিয়ে লকডাউন তুলে দিয়েছে বরিস জনসনের সরকার।ভারতীয় স্ট্রেন! আতঙ্ক ব্রিটেনে, হতে পারে আঞ্চলিক লকডাউন

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ০৬:৫৬
Share:

ফাইল চিত্র।

ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্টের ভয়ে কাঁপছে ব্রিটেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে সে দেশের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, ব্রিটেন বা কেন্ট ভ্যারিয়্যান্টের থেকেও বেশি বিপজ্জনক এটি। সম্প্রতি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে জানিয়ে লকডাউন তুলে দিয়েছে বরিস জনসনের সরকার। কিন্তু এতে পরিণতি ভয়ানক হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। জনসন আজ অবশ্য একটি অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, স্থানীয় ভাবে কিছু কিছু অঞ্চলে ফের লকডাউন করা হতে পারে।

Advertisement

লন্ডন এবং ইংল্যান্ডের উত্তরে বেশ কিছু শহরে ছড়িয়ে পড়েছে ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট। এ নিয়ে আজ জরুরি বৈঠকে বসে ‘সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজ়রি গ্রুপ ফর ইমার্জেন্সিস’ (বা সেজ)। এই বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য অধ্যাপক অ্যাডাম ফিন জানান, সত্যিই চিন্তা বাড়িয়েছে ভারতীয় স্ট্রেন। এটির সংক্রমণ ক্ষমতা সম্পর্কে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ‘পাবলিক হেল্থ ইংল্যান্ড’-এর একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করার কথা শীঘ্রই। তাতে দেখানো হয়েছে, ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্টে আক্রান্তের সংখ্যা এক সপ্তাহে তিন গুণ হয়ে গিয়েছে ব্রিটেনে।

এই স্ট্রেনটি রুখতে ভ্যাকসিন আদৌ কতটা কাজ দিচ্ছে, তা নিয়েও সন্দিহান বিশেষজ্ঞেরা। কারণ ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ় নিয়েও মৃত্যুর খবর মিলছে ভারতে। এ খবরও প্রকাশ্যে এসেছে: সম্প্রতি আমেরিকা থেকে ভারতে গিয়েছিলেন দুই ব্যক্তি। তাঁদের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। ফাইজ়ারের টিকা নিয়েছিলেন তাঁরা। তার পরেও এই দু’জন ভারতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হন এবং মারা যান।

Advertisement

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই অবস্থায় শুধুমাত্র জোরদার টিকাকরণের ভরসায় লকডাউন তুলে দেওয়া বিপদে ফেলতে পারে ব্রিটেনকে। পুরনো স্বাধীন জীবনে ফেরার যে ‘রোডম্যাপ’ তৈরি করেছেন বরিস জনসন, সেই পরিকল্পনাও ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। এপ্রিল মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত কোভিড আক্রান্ত বিদেশ ফেরত পর্যটকদের জিনোমিক তথ্য সিকোয়েন্স করে ওয়েলকাম’স সেঙ্গার ইন্সস্টিটিউট জানিয়েছে, ৬ শতাংশ বি.১.৬১৭.২-এ সংক্রমিত। ১৫ এপ্রিল থেকে ৩ মে পর্যন্ত ১ লক্ষ ২৭ হাজার নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন ইম্পিরিয়াল কলেজ লন্ডনের বিজ্ঞানীরা। দেখা গিয়েছে, ব্রিটেনে করোনা সংক্রমণ মার্চের তুলনায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বি.১.৬১৭.২ সংক্রমণ সংখ্যায় দ্রুত বাড়ছে। অন্য একটি গবেষণায় ইম্পিরিয়ালের গবেষক দল ১১৫টি পজ়িটিভ রিপোর্ট পান। তার মধ্যে ২৬টি নমুনার ভ্যারিয়্যান্ট চিহ্নিত করা যায়। এর মধ্যে ২৪টি কেন্ট ভ্যারিয়্যান্ট। বাকি দু’টি ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট। কিন্তু আক্রান্ত দু’জনের কেউই লন্ডন ছেড়ে অন্য কোথাও যাননি। অর্থাৎ, তাঁরা লন্ডনেই সংক্রমিত হয়েছেন। ভ্যারিয়্যান্টটি ব্রিটেনের রাজধানীতে ছড়াতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এখনও এই স্ট্রেনে সংক্রমিতের সংখ্যা খুবই কম। কিন্তু অবশ্যই চিন্তার।

ইম্পিরিয়াল কলেজের অধ্যাপক পল এলিয়ট বলেন, ‘‘এটা অন্তত পরিষ্কার, লন্ডনে ভ্যারিয়্যান্টটি ছড়িয়েছে। আরও ভাল করে এর গতিপ্রকৃতি জানা দরকার।’’

ইউনিভার্সিটি অব লুভেন-এর অধ্যাপক টম ওয়েনসেলেয়ার্স দাবি করেছেন, ব্রিটেন স্ট্রেনের তুলনায় ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট অন্তত ৬০ শতাংশ বেশি সংক্রামক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কেন্ট স্ট্রেন নিয়ে কাজ করছেন ব্রিটেনের সতীর্থদের সঙ্গে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এই দাবি তাঁর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement