—প্রতীকী চিত্র।
সাবধান করছেন ‘ব্যাটওম্যান’। ফের ছড়াতে পরে করোনাভাইরাস। নতুন রূপে।
ক্রমে ফিঁকে হচ্ছে করোনা-আতঙ্ক। বছর দুয়েক আগের ভয়াবহ স্মৃতির ভার ক্রমে লাঘব হচ্ছে। লোকমুখে প্রাক্-অতিমারি যুগ শুরু হয়ে গিয়েছে বহু দিন। যদিও চিনা ভাইরোলজিস্ট শি ঝেংলি, যিনি ‘ব্যাটওম্যান’ নামেই বেশি পরিচিত, দাবি করলেন আরও একটি করোনা আতিমারির সম্মুখীন হবে বিশ্ব। নভেল করোনভাইরাস বা সার্স-কোভ-২ নিয়ে এখনও বহু গবেষণা চলছে। সেই সব রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে, করোনাভাইরাসের ৪০টি প্রজাতি পরীক্ষা করে নিজেদের গবেষণাপত্রে এই দাবি জানিয়েছে ঝেংলি ও তাঁর দল।
চিনের উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি-র প্রধান ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ঝেংলি। বাদুড় থেকে উদ্ভূত ভাইরাস নিয়ে কাজ করেন তিনি। সেই কারণেই তাঁকে ‘ব্যাটওম্যান’ বলা হয়। নিজের সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ঝেংলি দাবি করেছেন, ভবিষ্যতে আরও একটি করোনাভাইরাস-ঘটিত অতিমারির আবির্ভাব হওয়াপ্রায় সুনিশ্চিত।
একটি চিনা দৈনিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উহান ইনস্টিটিউটে শিও তাঁর দল ৪০টি ভিন্ন ভিন্নপ্রজাতির করোনাভাইরাসের মূল্যায়নকরেছেন। মানুষের মধ্যে ওই সব ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কতটা, তা বিচার করেছেন। জনসংখ্যা, জিনগত বৈচিত্র, বাহক কারা হতে পারে এবং জিনগত সংক্রমণের ইতিহাস বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকেরা। তাঁদের দাবি, গবেষণার ফলাফলখুবই ‘উদ্বেগজনক’।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, তাঁরা যে ৪০টি প্রজাতির করোনাভাইরাস নিয়েছিলেন, তার অর্ধেকই ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’। মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার ‘অত্যন্ত বেশি ঝুঁকি’ রয়েছে। এর মধ্যে ছ’টি প্রজাতি ইতিমধ্যেই মানুষের দেহে বিভিন্ন রোগ ছড়িয়েছে। তিনটি প্রজাতি প্রাণীদের দেহেও সংক্রমণ ঘটিয়েছে। ফলে আবারও যে করোনা-সংক্রমণ অতিমারির আকার নেবে না, এমন নিশ্চয়তা নেই। বরং উল্টো আশঙ্কাই প্রবল।
গত জুন মাসে ঝেংলিদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয় ‘ইমার্জিং মইক্রোবস অ্যান্ড ইনফেকশনস’ জার্নালে। ক্রমে গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছে তাঁদের রিপোর্ট। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের কাছে চিনা বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, বিশ্বের সব দেশেরই উচিত এখন থেকে আসন্ন অতিমারির জন্য প্রস্তুত হওয়া। দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো আরও উন্নত করা।
নিজের গবেষণায় ঝেংলি অতিবিপজ্জনক করোনাভাইরাস প্রজাতিগুলোকে চিহ্নিত করেছেন। সেই সব ভাইরাসের কার্যকলাপ ও গতিবিধি নজরে রাখার জন্য বিশেষ পদ্ধতি (মনিটরিং টুল) তৈরি করেছেন। এতে আসন্ন অতিমারিকে গোড়াতেই বধ করা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে ভ্যাকসিন তৈরিতেও সুবিধা হবে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।