সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই রোজভ্যালি নিয়ে তদন্ত আরও জোরদার করল ইডি। শুক্রবার ওই সংস্থার দুই কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি-র অফিসারেরা। রোজভ্যালি যে-ভাবে বাজার থেকে টাকা তুলেছে, সেই ব্যাপারেই ওই কর্মীদের প্রশ্ন করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর।
ইডি-র তদন্তের সঙ্গে সঙ্গে সিবিআই-ও সারদার মালিকানাধীনে থাকা তারা চ্যানেল কেনা নিয়ে তদন্ত চালিয়ে গিয়েছে। এ দিনই তারা চ্যানেলের সংবাদ বিভাগের প্রধানকে ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন যখন রতিকান্ত বসু এবং অন্যদের কাছ থেকে তারা চ্যানেল কিনেছিলেন, সেই চুক্তির দিনে হাজির ছিলেন তিনি। সিবিআই সূত্রের খবর, কত টাকার চুক্তি, কী প্রক্রিয়ায় চ্যানেল হস্তান্তর হয়, এই সব বিষয়েই সিবিআই অফিসারেরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ওই চ্যানেলের সংবাদ বিভাগের কর্তা দফতর থেকে বেরিয়ে বলেন, “আমি ওই চ্যানেলের সাধারণ কর্মী ছিলাম। যতটুকু জানি, তা সিবিআই-কে বলেছি।”
সারদা কাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন পুলিশকর্তা রজত মজুমদারকে এ দিন জেল-হাজত থেকে আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারক হারাধন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে তোলে সিবিআই। ধৃতের আইনজীবী তীর্থঙ্কর রায় জানান, রজতবাবুর হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা রয়েছে। গ্রেফতারের পরে নীলরতন সরকার হাসপাতালের চিকিৎসকেরা কয়েকটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে তাঁকে পরীক্ষা করানোর সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু সিবিআই এখনও সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দেয়নি। তাঁর মক্কেলের চিকিৎসায় অসুবিধা হচ্ছে। রজতবাবু তখন সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেন, “আমার এমআরআই হয়েছিল। একটা বড় প্লাস্টিকের প্যাকেটে সেই ছবি রয়েছে। যদি একটু দিয়ে দেন, চিকিৎসার সুবিধা হবে।”
এ দিন সারদা কাণ্ডে ধৃত ইস্টবেঙ্গল-কর্তা দেবব্রত সরকার ওরফে নিতু এবং সন্ধির অগ্রবালকেও আদালতে তোলা হয়েছিল। সন্ধির বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছিলেন। তা নাকচ হয়ে গিয়েছে। দেবব্রতবাবুও হাইকোর্টে জামিনের আর্জি করেছিলেন। শুক্রবার সেই আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বলে জানান দেবব্রতবাবুর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা। রজতবাবু, দেবব্রতবাবু ও সন্ধির, তিন জনকেই ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।